ঢাকা | ডিসেম্বর ২০, ২০২৪ - ১২:৫৭ অপরাহ্ন

যেসব সমস্যায় কালোজিরা বিশেষভাবে কার্যকর

  • আপডেট: Saturday, July 13, 2024 - 11:11 am

অনলাইন ডেস্ক: কালোজিরা বীজের গুণাগুণ ও স্বাস্থ্য উপকারিতা অপরিসীম ও কালজয়ী। কালোজিরার আদি নিবাস দক্ষিণ ও দক্ষিণপূর্ব এশিয়া। কেউ কেউ বলেন, ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে এর উৎপত্তি স্থান। ওষুধ শিল্প, কনফেকশনারি শিল্প ও রন্ধনশালায় নিত্যদিনের খাবার তৈরিতে কালোজিরার জুড়ি নেই।

কালোজিরা আয়ুর্বেদীয়, ইউনানি, কবিরাজি ও লোকজ চিকিৎসায় বহু রকমের ব্যবহার আছে। প্রসাধনীতেও ব্যবহার হয়। কালোজিরার যে অংশটি ব্যবহার করা হয় তাহলে শুকনো বীজ ও বীজ থেকে পাওয়া তেল।

ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা কালোজিরাকে একটি অব্যর্থ রোগ নিরাময়ের উপকরণ হিসেবে বিশ্বাস করে। হাদিসে আছে— কালোজিরা মৃত্যু ব্যতীত অন্য সব রোগ নিরাময় করে। এ জন্য কালোজিরাকে সব রোগের ওষুধ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। নিয়মিত ও পরিমিত কালোজিরা সেবনে শরীরের প্রতিটি অঙ্গপ্রত্যঙ্গকে সতেজ করে ও সার্বিকভাবে স্বাস্থ্যের উন্নতি সমৃদ্ধি সাধন করে। আজকে জানাব আশ্চর্য বীজ কালোজিরার বহুমুখী উপকারিতা সম্পর্কে।

স্মরণশক্তি বৃদ্ধি 
এক চা-চামচ পুদিনাপাতার রস বা কমলার রস বা এক কাপ রঙ চায়ের সঙ্গে এক চা-চামচ কালোজিরার তেল মিশিয়ে দিনে তিনবার করে নিয়মিত সেব্য, যা দুশ্চিন্তা দূর করে। এ ছাড়া কালোজিরা মেধার বিকাশের জন্য কাজ করে দ্বিগুণ হারে। কালোজিরা নিজেই একটি অ্যান্টিবায়োটিক বা অ্যান্টিসেপটিক। মস্তিস্কের রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধির মাধ্যমে স্মরণশক্তি বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে। কালোজিরা খেলে আমাদের দেহে রক্ত সঞ্চালন ঠিকমতো হয়। এতে করে মস্তিস্কের রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধির হয়, যা আমাদের স্মৃতিশক্তি বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে।

মাথাব্যথা
মাথাব্যথায় কপালে উভয় চিবুকে ও কানের পার্শ্ববর্তী স্থানে দৈনিক ৩-৪ বার কালোজিরার তেল মালিশ করুণ। তিন দিন খালি পেটে চা চামচে এক চামচ করে তেল পান করুন উপকার পাবেন।

যৌন দুর্বলতা
কালোজিরা চুর্ণ ও অলিভ অয়েল, ৫০ গ্রাম হেলেঞ্চার রস ও ২০০ গ্রাম খাঁটি মধু একসঙ্গে মিশিয়ে সকালে খাবারের পর এক চামুচ করে খান। এতে গোপন শক্তি বৃদ্ধি পাবে।

চুলপড়া
লেবু দিয়ে সব মাথার খুলি ভালোভাবে মালিশ করুন। ১৫ মিনিট পর শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন এবং ভালোভাবে মাথা মুছে ফেলুন। তার পর মাথার চুল ভালোভাবে শুকানোর পর সম্পূর্ণ মাথার খুলিতে কালোজিরার তেল মালিশ করুন। এতে এক সপ্তাহেই চুলপড়া কমে যাবে।

কফ ও হাঁপানি
বুকে ও পিঠে কালোজিরার তেল মালিশ করুন। এ ক্ষেত্রে হাঁপানিতে উপকারী অন্যান্য মালিশের সঙ্গে এটি মিশিয়েও নেওয়া যেতে পারে।

অ্যাজমায় উন্নতি ঘটে
হালকা উষ্ণ পানিতে কালোজিরা মিলিয়ে ৪৫ দিনের মতো খেলে অ্যাজমার সমস্যার উন্নতি ঘটে।

ডায়াবেটিস
কালোজিরার চূর্ণ ও ডালিমের খোসা চূর্ণ মিশ্রণ এবং কালোজিরার তেল ডায়াবেটিসে উপকারী।

মেদ ও হৃদরোগ
চায়ের সঙ্গে নিয়মিত কালোজিরা মিশিয়ে অথবা এর তেল মিশিয়ে পান করলে হৃদরোগে যেমন উপকার হয়, তেমনি মেদ কমে যায়।

অ্যাসিডিটি ও গ্যাস্টিক
এক কাপ দুধ ও এক টেবিল চামুচ কালোজিরার তেল দৈনিক তিনবার ৫-৭ দিন সেবন করতে হবে। এতে গ্যাস্টিক কমে যাবে।

চোখে সমস্যা
রাতে ঘুমানোর আগে চোখের উভয়পাশে ও ভুরুতে কালোজিরার তেল মালিশ করুণ। এক কাপ গাজরের রসের সঙ্গে এক মাস কালোজিরা তেল সেবন করুন।

উচ্চ রক্তচাপ
যখনই গরম পানীয় বা চা পান করবেন, তখনই কালোজিরা খাবেন। গরম খাদ্য বা ভাত খাওয়ার সময় কালোজিরার ভর্তা খান রক্তচাপ স্বাভাবিক থাকবে। এ ছাড়া কালোজিরা, নিম ও রসুনের তেল একসঙ্গে মিশিয়ে মাথায় ব্যবহার করুণ। এটি ২-৩ দিন পরপর করা যায়।

জ্বর
সকাল-সন্ধ্যায় লেবুর রসের সঙ্গে এক টেবিল চামুচ কালোজিরা তেল পান করুণ। আর কালোজিরার নস্যি গ্রহণ করুন।

স্ত্রীরোগ
প্রসব ও ভ্রুণ সংরক্ষণে কালোজিরা মৌরী ও মধু দৈনিক ৪ বার খান।

সৌন্দর্য বৃদ্ধি
অলিভ অয়েল ও কালোজিরা তেল মিশিয়ে মুখে মেখে এক ঘণ্টা পর সাবান দিয়ে ধুয়ে ফেলন।

বাত

পিঠে ও অন্যান্য বাতের বেদনায় কালোজিরার তেল মালিশ করুন। এ ছাড়া মধুসহ প্রতিদিন সকালে কালোজিরা সেবনে স্বাস্থ্য ভালো থাকে।

দাঁত শক্ত করে

দই ও কালোজিরার মিশ্রণ প্রতিদিন দুবার দাঁতে ব্যবহার করুন। এতে দাঁতে শিরশিরে অনুভূতি ও রক্তপাত বন্ধ হবে।

ওজন কমায়
যারা ওজন কমাতে চান, তাদের খাদ্যতালিকায় উষ্ণ পানি, মধু ও লেবুর রসের মিশ্রণ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। এখন এই মিশ্রণে কিছু কালোজিরা পাউডার ছিটিয়ে দিন। পান করে দারুণ উপকার পাবেন।

 

সোনালী/সা