ভারতের উন্নয়নের বড় অংশীদার বাংলাদেশ: মোদি
অনলাইন ডেস্ক: বাংলাদেশকে ভারতের সবচেয়ে বড় উন্নয়ন অংশীদার হিসেবে অভিহিত করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এসময় আগামীতে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নয়াদিল্লির ‘হায়দরাবাদ হাউস’-এ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পর যৌথ বিবৃতিতে মোদি এ কথা বলেন।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশ ভারতের সবচেয়ে বড় উন্নয়ন অংশীদারে পরিনত হয়েছে। সেই সাথে এই অঞ্চলে সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদারও হয়ে উঠেছে।
তিনি বলেন, একদিকে বাংলাদেশ ও ভারতের বাণিজ্য দিন দিন যেমন বাড়ছে তেমনি দু’দেশের মানুষের মধ্যে যোগাযোগও ক্রমেই বাড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে আমরা আইটি, মহাকাশ এবং পরমাণুখাতে সহযোগিতা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইন নিয়েও বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে আলোচনা চলছে।
ভারতকে এশিয়ায় বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রপ্তানি বাজার উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই বাণিজ্য এগিয়ে নিতে সমন্বিত অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তির (কম্প্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ অ্যাগ্রিমেন্ট-সেপা) জন্য শিগগির আলোচনা শুরু করবো আমরা।
নরেন্দ্র মোদি বলেন, বেশ কিছু বছর আমাদের পারস্পরিক সহযোগিতা বেড়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং আমি দ্বিপাক্ষিক, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক নানা বিষয়ে আলোচনা করেছি। মোদি বলেন, বন্যা নিরসনে আমরা বাংলাদেশের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছি। এরই ধারাবাহিকতায় বন্যা সতর্কতার বিষয়ে তাৎক্ষণিক তথ্য আদান-প্রদান করছি। আমরা সন্ত্রাসবাদ বিষয়েও আলোচনা করেছি।
মোদি আরও বলেন, কোভিড-১৯ মহামারি ও সাম্প্রতিক বৈশ্বিক ঘটনাপ্রবাহ থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে এবং নিজেদের অর্থনীতি শক্তিশালী করতে হবে।
এদিকে ভারতে চারদিনের সফরের ২য় দিনের কর্মসূচির শুরুতে মঙ্গলবার সকালে ভারতের রাষ্ট্রপতি ভবনে শেখ হাসিনাকে গার্ড অব অনারের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিক অভ্যর্থনা জানানো হয়। শেখ হাসিনা রাষ্ট্রপতি ভবনে গেলে তাকে স্বাগত জানান নরেন্দ্র মোদি। দুই প্রধানমন্ত্রী করমর্দন করেন। এ সময় ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে, নয়াদিল্লির রাজঘাটে মহাত্মা গান্ধীর সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন শেখ হাসিনা। এরপর নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠকে বসেন তিনি।
রাষ্ট্রপতি ভবনে শেখ হাসিনা বলেন, ভারত আমাদের বন্ধু। আমি যখনই ভারতে আসি, এটা আমার জন্য আনন্দের। বিশেষত আমরা সব সময় আমাদের মুক্তিযুদ্ধকালে ভারতের অবদানের কথা স্মরণ করি। আমাদের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। আমরা একে অপরকে সহযোগিতা করছি।
এদিকে মঙ্গলবার দুপুরে হায়দরাবাদ হাউসে এসব সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে ঢাকা ও নয়াদিল্লির মধ্যে ৭টি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে।
উল্লেখ্য, সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) চারদিনের সফরে ভারতে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওইদিন দুপুরে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ভিভিআইপি চার্টার্ড ফ্লাইটে নয়াদিল্লি পৌঁছান তিনি। সফর শেষে আগামী ৮ সেপ্টেম্বর ঢাকায় ফিরবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।