ঢাকা | মে ১৮, ২০২৪ - ১:১৩ অপরাহ্ন

রাজশাহীতে উদযাপিত হলো এমএফএস-এর ১০ বছর পূর্তি

  • আপডেট: Tuesday, March 8, 2022 - 11:38 pm

স্টাফ রিপোর্টার: ‘হাতের মুঠোয় আর্থিক সেবা’ স্লোগানে রাজশাহীতে উদযাপিত হলো মোবাইল ফোনের মাধ্যমে আর্থিক সেবার (এমএফএস) ১০ বছর পূর্তি। বাংলাদেশ ব্যাংকের আয়োজনে এ উপলক্ষে মঙ্গলবার শহরের মাদ্রাসা মাঠ সংলগ্ন মুক্তমঞ্চে মেলার আয়োজন করা হয়। সকালে বেলুন উড়িয়ে বর্নাঢ্য মেলার উদ্বোধন করা হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ব্যবস্থাপনায় এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর অংশগ্রহণে এই মেলা অনুষ্ঠিত হয়।

সকালে এর উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক জীবন কৃষ্ণ রায়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের যুগ্ম পরিচালক জুলেখা নুসরাত, উপমহাব্যবস্থাপক জুলিয়া চৌধুরী ও এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট এএফএম কামাল ঊদ্দীন।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট ও রাজশাহী জোন প্রধান মিজানুর রহমান মিজি। এই আয়োজনে লিড ব্যাংকের ভূমিকা পালন করে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড। ১১ কোটির বেশি গ্রাহক নিয়ে দেশের আর্থিক অন্তর্ভুক্তির চিত্র বদলে দেওয়া মোবাইল আর্থিক সেবা খাতের ১০ বছর পূর্তি উদযাপনে রাজশাহীতে এ মেলায় এমএফএস নিয়ে সচেতনতামূলক পুতুল নাচ, গম্ভীরা, পথ নাটক প্রদর্শিত হয়।

আয়োজকরা জানান, এমএফএস-এর ১০ বছর পূর্তি আয়োজনের পৃষ্ঠপোষকতায় রয়েছে বিকাশ, রকেট, এমক্যাশ, উপায়, ট্যাপ, মাই ক্যাশ, টেলিক্যাশ, মেঘনা ব্যাংক লিমিটেড, এফএসআইবি, রূপালী ব্যাংক লিমিটেড, ওকে ওয়ালেট, ইসলামিক ওয়ালেট ও নগদ। ১০ বছর পূর্তি উদযাপন উপলক্ষ্যে বিভাগীয় শহরগুলোতে এমএফএস মেলা ও ঢাকায় কেন্দ্রীয় সেমিনারসহ নানান উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, এক দশক আগে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা ও ঐকান্তিক ইচ্ছায় প্রশস্ত হয় বাংলাদেশের মোবাইল আর্থিক সেবার পথ চলা। সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ রূপকল্পের অংশ হিসেবে ব্যাংকিং সেবার বাইরে বা সীমিত ব্যাংকিং সেবার আওতায় থাকা জনগনকে আর্থিক অন্তর্ভুক্তির আওতায় আনতে ২০১১ সালে শুরু হয় মোবাইল ভিত্তিক আর্থিক লেনদেন সেবা। বাংলাদেশ ব্যাংকের নিবিড় তত্ত্বাবধান ও পর্যবেক্ষণে এই সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর উদ্যোগে মাত্র দশ বছরে এমএফএস এখন দেশের মানুষের প্রতিদিনের আর্থিক লেনদেনের অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

শুধুমাত্র দেশে নয়, সারা বিশ্বে আর্থিক অন্তর্ভুক্তিতে দৃষ্টান্ত তৈরি করেছে বাংলাদেশের এমএফএস খাত। ব্যাংক-লেড মডেল যাত্রা শুরু করা এ খাতে বর্তমানে ১৩টি এমএফএস প্রতিষ্ঠান সেবা দিচ্ছে। সবগুলো এমএফএস মিলিয়ে গ্রাহক সংখ্যা ১১ কোটির বেশি। এজেন্ট সংখ্যা ১১ লাখের বেশি। গড়ে দৈনিক দুই কোটি বার লেনদেন হয় এমএফএসে, টাকার অংকে যার পরিমান ২ হাজার ২৯৫ কোটি টাকা।

প্রযুক্তি ব্যবহার করে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে টাকা পাঠানোর জন্য ক্যাশ ইন, ক্যাশ আউটের সুযোগ নিয়ে যাত্রা শুরু হলেও সময়ের সাথে সাথে বিভিন্ন ধরনের সৃজনশীল সেবা যুক্ত করেছে এমএফএস। মোবাইল রিচার্জ করা, বিদেশ থেকে সরাসরি রেমিটেন্স পাওয়া, মোবাইল অ্যাকাউন্টে সঞ্চিত অর্থের উপর মুনাফা, বিভিন্ন ধরনের ইউটিলিটি সেবার বিল পেমেন্ট, ব্যাংক থেকে এমএফএস অ্যাকাউন্টে টাকা আনা, এমএফএস অ্যাকাউন্ট থেকে ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানো, সরকারের বিভিন্ন ধরনের ভাতা ও উপবৃত্তি বিতরণ, তৈরি পোশাক খাতের শ্রমিক সহ বিভিন্ন শিল্পের শ্রমিকদের বেতন বিতরণ, এমএফএস অ্যাকাউন্টে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ডিজিটাল ন্যানো ঋণ এবং মাসিক সঞ্চয় সেবাসহ প্রতিনিয়তই নতুন সেবায় সমৃদ্ধ হচ্ছে এমএফএস খাত। ফলে সক্ষমতা ও স্বাধীনতা এসেছে মানুষের দৈনন্দিন আর্থিক লেনদেনে।