ঢাকা | জুন ৩০, ২০২৫ - ৩:৫৫ অপরাহ্ন

শিরোনাম

পেছাল শহিদ আবু সাঈদ হত্যা মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানি, হতাশ পরিবার

  • আপডেট: Monday, June 30, 2025 - 1:21 am

সোনালী ডেস্ক: জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় রংপুরে পুলিশের গুলিতে নিহত বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শিক্ষার্থী শহীদ আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ডের বিচারিক প্রক্রিয়া আবারও পিছিয়ে গেল। মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে দায়ের করা এই মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানি রোববার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২-এ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও তা স্থগিত করা হয়।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম রাষ্ট্রীয় কাজে ব্যস্ত থাকায় শুনানি পেছানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানি জুলাই মাসের যেকোনো দিন অনুষ্ঠিত হতে পারে। এর আগে, গত বৃহস্পতিবার এই হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পায় প্রসিকিউশন।

তদন্ত সংস্থার প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, আবু সাঈদ হত্যার পেছনে অন্তত ৩০ জনের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। তবে মামলাকে কেন্দ্র করে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে উত্তেজনা বিরাজ করছে। গত বৃহস্পতিবার প্রতিবেদন জমা দেওয়ার দিনই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একটি অংশ সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলামের মুক্তির দাবিতে আন্দোলনে নামে।

জানা গেছে, ওই আন্দোলনে আওয়ামী ঘরানার শিক্ষক ও নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের উপস্থিতি ঘিরে তীব্র সমালোচনা তৈরি হয় ক্যাম্পাসে। শহীদ আবু সাঈদের পরিবার চলমান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ ও হতাশা প্রকাশ করেছে। আবু সাঈদের বড় ভাই আবু হোসেন বলেন, “সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলামের নাম তদন্তে প্রস্তাব করা হয়েছিল।

তদন্ত সংস্থা সম্ভবত তার বিরুদ্ধে কিছু প্রাথমিক তথ্য পেয়েছে। আমাদের জানা মতে, ওই সময়ের কল রেকর্ডসহ গুরুত্বপূর্ণ কিছু নথিও তাদের কাছে রয়েছে।”তিনি আরও বলেন, “এই মামলায় আমরা কোনো রাজনৈতিক প্রতিহিংসা দেখাইনি। অন্যান্য মামলার মতো ১০০ থেকে ২০০ জনকে আসামি করিনি।

আমরা কেবল যাদের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে দায়ী মনে করেছি, শুধু তাদের নামই দিয়েছি। শুনানির সময় যদি কেউ নির্দোষ প্রমাণিত হন, আদালত স্বাভাবিকভাবেই তাকে জামিন দেবেন।”আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে প্রশ্ন রেখে আবু হোসেন বলেন, “আপনারা যা দেখেছেন, কেবল সেটুকুই জানেন। কিন্তু গোপনে যে ষড়যন্ত্র চলেছে, সেটা কি জানেন? অনেকেই আছেন, বাইরে থেকে সান্ত্বনা দেন, অথচ ভেতরে ভেতরে ভিন্ন খেলা খেলেন।”

তিনি পারিবারিক শঙ্কার কথাও জানান, “এভাবে চলতে থাকলে হয়তো একদিন আমাদের একমাত্র ভরসা হয়ে থাকবে আল্লাহর দরবারেই ন্যায়বিচার প্রার্থনা করা।”অন্যদিকে আন্দোলনকারীরা সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলামের মুক্তি দাবি করে বলেন, “যদি তিনি কোনো অপরাধ করে থাকেন, তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাকে শাস্তি দেবে।

আবু সাঈদকে হত্যা করেছে পুলিশ। অথচ পুলিশি হত্যাকাণ্ডের দায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ওপর চাপানো কোনোভাবেই কাম্য নয়।”প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালের ১৬ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত হন আবু সাঈদ। এরপর ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর, ১৮ আগস্ট তার পরিবার ১৭ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করে।

পরে অধিকতর তদন্তে আরও ৭ জনের নাম অন্তর্ভুক্ত করতে আদালতে আবেদন করা হয়। মামলা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে গড়ায়, যেখানে একাধিকবার তদন্ত করতে রংপুরে যায় ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন টিম।

Hi-performance fast WordPress hosting by FireVPS