ঢাকা | নভেম্বর ২৬, ২০২৪ - ২:৫০ অপরাহ্ন

নগরীতে ভুয়া মেজর লে: কর্নেলসহ তিন প্রতারক গ্রেপ্তার

  • আপডেট: Thursday, April 18, 2024 - 9:45 pm

স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহী মহানগরীতে সেনা সদস্য পরিচয় দিয়ে প্রতারণার অভিযোগে তিন যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত বুধবার সন্ধ্যার পর নগরীর বোয়ালিয়া থানার কাদিরগঞ্জ এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

তাদের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীতে চাকরি দেয়ার নামে টাকা আত্মসাতসহ নানা অভিযোগ রয়েছে।

এসময় ৯ টি ভুয়া নিয়োগপত্র, সেনাবাহিনীতে যোগদানের পূর্বে মেডিকেলের জন্য প্রত্যয়নপত্রের ফটোকপি, আসামির স্বাক্ষরকৃত ফাঁকা চেক, সেনাবাহিনীর নকল পরিচয়পত্র ও নগদ ২০ হাজা টাকা উদ্ধার হয়েছে।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- রবিন ইসলাম (২২), আব্দুল হাকিম (২২) ও আব্দুর রহিম (২৫)। রবিন ইসলাম চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার গোমস্তাপুর থানার পীড়াশন গ্রামের রবিউল ইসলামের ছেলে, হাকিম একই থানার নিমতলা গ্রামের হেফাজ উদ্দিনের ছেলে ও আব্দুর রহিম চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর থানার ইসলামপুর গ্রামের হারুন-অর-রশিদের ছেলে।

পুলিশ জানায়, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার নাচোল থানার চন্দনা গ্রামের আব্দুল আজিজের দুই ভাই ও তার শ্যালক বিভিন্ন সময় সেনাবাহিনীর চাকরি জন্য লাইনে দাঁড়ালেও তার চাকরি হয় না। এই সুযোগে গ্রেপ্তার প্রতারকরা তাদের বাড়িতে গিয়ে জানান যে, সেনাবাহিনীর বড় অফিসারদের সাথে তাদের পরিচয় আছে। টাকা দিলে চাকরি নিয়ে দিতে পারবে। এসময় আসামি রবিন নিজেকে সেনাবাহিনীর মেজর, আব্দুর রহিম লে: কর্নেল এবং হাকিম ক্লাক পরিচয় দেয়।

এদিকে রবিনের বাবা মাও বিভিন্ন ব্যক্তিকে সেনাবাহিনীতে চাকরির প্রলোভন দেয় এবং টাকা প্রদানের নিশ্চয়তা প্রদান করে। ২০২৩ সালে তাদের সঙ্গে আজিজের দুই ভাই ও তার শ্যালকের চাকরির জন্য ২৫ লক্ষ ৭ হাজার টাকার একটি মৌখিক চুক্তি হয়। এসময় হাকিম তার স্বাক্ষর করা একটি ফাঁকা চেক প্রদান করে। কয়েক দিন পর তারা এসে ওই তিন জনের চাকরির জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে যায়।

পরবর্তীতে গত ২৩ জুলাই নগরীর বোয়ালিয়া থানার কাদিরগঞ্জ বর্ণালী মোড়ে আসামিরা আজিজকে তিন জনের চাকরির ভুয়া নিয়োগপত্র প্রদান করে। তখন আজিজ তাদের ১২ লক্ষ প্রদান করেন এবং পরে অবশিষ্ট ১৩ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা প্রদান করেন। আজিজের এলাকার যারা চাকরি পেয়েছে তারা প্রশিক্ষণে চলে যায়।

কিন্তু তার ভাই ও শ্যালকের নাম না আসায় আসামিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে। তখন প্রতারকরা তাকে প্রশিক্ষণের তারিখ পরিবর্তন করে পুনরায় নিয়োগপত্র প্রদান করে অতিরিক্ত টাকা দাবি করে এবং গত ১৭ এপ্রিল রাজশাহীতে আসতে বলে। তাদের এধরনের কার্যক্রম সন্দেহজনক মনে হলে তারা এলাকায় খোঁজখবর নেয়।

খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারে তারা ছাড়াও গ্রামের আরও পাঁচ জনের কাছ থেকে সেনাবাহিনীতে চাকরি দেওয়ার কথা বলে প্রায় ৪০ লক্ষ প্রতারণা করে আত্মসাৎ করেছে। বিষয়টি আব্দুল আজিজ রাজশাহী মহানগর গোয়েন্দা অফিসে মৌখিকভাবে জানায়। উক্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে বুধবার রাত সাড়ে ৭ টায় রাজশাহী মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নগরীর বোয়ালিয়া থানার কাদিরগঞ্জ বর্ণালীর মোড় থেকে তাদের তিনজনকে গ্রেপ্তার করে।

এসময় আসামিদের কাছ থেকে ৯ টি ভুয়া নিয়োগপত্র, সেনাবাহিনীতে যোগদানের পূর্বে মেডিকেলের জন্য প্রত্যয়নপত্রের ফটোকপি, আসামির স্বাক্ষরকৃত ফাঁকা চেক, সেনাবাহিনীর নকল পরিচয়পত্র ও নগদ ২০ হাজা টাকা উদ্ধার হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তারা ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। এছাড়াও তাদের আরো সহযোগী আছে বলেও জানায়। গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে নগরীর বোয়ালিয়া থানায় মামলা দায়ের করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।

সোনালী/জেআর