ঢাকা | মে ১, ২০২৪ - ৮:২৪ অপরাহ্ন

তাপপ্রবাহে পুড়ছে রাজশাহী, অবশেষ বৃষ্টির আভাস 

  • আপডেট: Thursday, April 18, 2024 - 10:00 pm

স্টাফ রিপোর্টার: বৈশাখের শুরুতেই তাপপ্রবাহে পুড়ছে রাজশাহী। দিনের তাপমাত্রা যেন প্রতিদিনই যেন বাড়ছে। গত বুধবার বিকেল ৩টায় রাজশাহীতে চলতি মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বৃহস্পতিবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৯ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

একদিনের ব্যবধানে তাপমাত্রা কিছুটা কমলেও গরম যেন একই অনুভূত হচ্ছে! অন্য বছর আবহাওয়ার কিছুটা তারতম্য লক্ষ্য করা গেলেও এবার এপ্রিলের শুরু থেকেই সর্বোচ্চ তাপমাত্রায় পুড়ছে রাজশাহী। গরম বাতাস যেন শরীরে বিঁধছে আগুনে হল্কার মতো। এতে হাঁপিয়ে উঠেছেন শ্রমজীবী মানুষ।

তবে এর মধ্যেই রাজশাহীতে বৃষ্টির আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অফিস। তারা বলছে, আজ শুক্রবার সকাল পর্যন্ত রাজশাহীসহ সাত বিভাগে বৃষ্টিপাত হতে পারে।

আবহাওয়া অফিসের তথ্য মতে, সাধারণত দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে হলে তাকে মৃদু তাপপ্রবাহ বলা হয়। তাপমাত্রা ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে তাকে মাঝারি তাপপ্রবাহ বলা হয়। এ ছাড়া ৪০ থেকে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপমাত্রাকে তীব্র তাপপ্রবাহ হিসেবে ধরা হয়।

আর তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপর উঠলেই তাকে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তাই চলতি মৌসুমে গত বুধবার থেকে রাজশাহীতে তীব্র তাপপ্রবাহ শুরু হয়েছে। তীব্র দাবদাহে মানুষসহ প্রাণিকূলে হাঁসফাঁস অবস্থা দেখা দিয়েছে।

রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের সিনিয়র পর্যবেক্ষক শহিদুল ইসলাম জানান, গত বুধবার বিকেল ৩টায় সর্বোচ্চ ৪০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। চলতি মৌসুমে এ পর্যন্ত এটিই সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।

এর আগে গত মঙ্গলবার ৩৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি, সোমবার ৩৯ দশমিক, রোববার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল বৃহস্পতিবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৯ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

এদিকে, অস্বস্তিকর এমন আবহাওয়ায় জ্বর, ডায়রিয়াসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন মানুষ। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ১০, ২৪ ও ২৬ নম্বর ওয়ার্ড ঘুরে দেখা যায়, গরমে অনেক শিশু ডায়রিয়া, হাঁপানি জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে প্রতিদিন। এছাড়াও হাসপাতালগুলোর আউটডোরে এসব রোগে আক্রান্তদের ভিড় বাড়ছে।

গত এক সপ্তাহের মধ্যে ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়া রোগীর সংখ্যা বেশী মাত্রায় বাড়তে শুরু করেছে রাজশাহী মেডিকেলে। কয়েক দশক ধরে অনিয়ন্ত্রিতভাবে ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলনের কারণে দেশের বরেন্দ্র অঞ্চলের ৪০ শতাংশেরও বেশি ইউনিয়নে পানি শূন্যতা তৈরি হয়েছে। ফলে এসব এলাকায় খাবার ও সেচের পানির মারাত্মক সংকটও দেখা দিয়েছে।

রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক আনোয়ারা খাতুন জানান, রাজশাহীতে গত ৬ মাসের মধ্যে সর্বশেষ গত ২১ মার্চ মাঝারি বৃষ্টিপাত হয়েছে। গত ২১ মার্চ ৯ দশমিক ৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়। এর পর আরও দুইদিন বৃষ্টিপাত হয়েছে।

তবে সেটি এক দশমিকের ঘরেও পৌঁছাতে পারেনি। সর্বশেষ গত ১৪ এপ্রিল বৃষ্টিপাত হয়েছে দশমিক ২ মিলিমিটার। এর আগে গত ৩১ মার্চ বৃষ্টিপাত হয় দশমিক ৬ মিলিমিটার।

অন্যদিকে আবহাওয়াবিদ খো. হাফিজুর রহমান জানিয়েছেন, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।

তাই আজ শুক্রবার সকাল পর্যন্ত রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, বরিশাল, চট্টগ্রাম এবং সিলেট বিভাগের দুয়েক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা/ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।

সোনালী/জগদীশ রবিদাস