ঢাকা | ডিসেম্বর ২২, ২০২৪ - ৯:৫৪ পূর্বাহ্ন

আগামী অর্থবছর থেকেই সার্বজনীন পেনশন চালু

  • আপডেট: Thursday, June 9, 2022 - 8:20 pm

 

অনলাইন ডেস্ক: ষাটোর্ধ্ব সব নাগরিকদের পেনশন দেয়ার যে পরিকল্পনা সরকার নিয়েছে, তা আগামী অর্থবছরেই চালুর ঘোষণা দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।বৃহস্পতিবার ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট বক্তৃতায় এ কথা বলেন তিনি।

ইতিমধ্যে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা কার্যকর করতে একটি রোডম্যাপ প্রণয়ন করেছে অর্থমন্ত্রণালয়। সেই রোডম্যাপ অনুযায়ী আগামী মার্চ থেকে ব্যবস্থাটির পাইলটিং শুরু করা হবে। জুলাই থেকে তা পুরোদমে শুরু করা হবে।

তবে ওই বছরের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠেয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই বিপুল সংখ্যক নাগরিককে এই পেনশন ব্যবস্থার আওতায় আনার পরিকল্পনা করছে সরকার।

বাজেট বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী জানান, ২০০৮ সালের নির্বাচনি ইশতেহারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বয়স্ক জনগোষ্ঠীকে একটি টেকসই ও সুসংগঠিত সামাজিক নিরাপত্তা কাঠামোর আওতায় বৃদ্ধকালীন নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে জাতীয়ভাবে একটি সর্বজনীন পেনশন পদ্ধতি প্রবর্তনের অঙ্গীকার করেছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৫ সালে সরকার কর্তৃক প্রণীত জাতীয় সামাজিক নিরাপত্তা কৌশলপত্রে একটি ব্যাপকভিত্তিক সমন্বিত অংশগ্রহণমূলক পেনশন ব্যবস্থা গড়ে তোলার প্রস্তাব করা হয়েছিল।

তিনি বলেন, ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট বক্তব্যে আমি পেনশন পদ্ধতি চালুর ঘোষণা দিয়েছিলাম। আমি অতি আনন্দের সঙ্গে ঘোষণা দিচ্ছি যে, সরকার আগামী অর্থবছরে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

অর্থমন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, বর্তমানে দেশের অর্থনীতিতে নির্ভরশীল মানুষের বর্তমান হার ৭ দশমিক ৭ শতাংশ, যা ২০৫০ সালে যথাক্রমে ২৪ শতাংশ এবং ২০৭৫ সালে ৫৮ শতাংশে বৃদ্ধি পাবে।

এ ছাড়া মানুষের গড় আয়ু বাড়ছে। পর্যায়ক্রমে গড় আয়ু বেড়ে ৮৫ বছর হবে বলে মনে করা হচ্ছে। এতে ভবিষ্যতে নির্ভরশীল মানুষের সংখ্যা বহুগুণে বৃদ্ধি পাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে বাংলাদেশের সামনে। এ অবস্থায় ১৮ কোটি জনসংখ্যার দেশে সরকারি চাকরি করছেন মাত্র ১৪ লাখ মানুষ। এসব সরকারি কর্মচারী-কর্মকর্তাদের পেনশন সুবিধা রয়েছে। বাকি ১৮ থেকে ৫০ বছরের বেশিরভাগ মানুষ কৃষি, বেসরকারী খাত, ব্যবসায়ী কিংবা অন্যান্য পেশায় জড়িত রয়েছেন। মূলত এদের কোন পেনশন নেই।

ফলে অবসর জীবন কিংবা বার্ধক্যজনিত কারণে যারা অভাবগ্রস্ত হবেন, তাদের জীবিকার বিষয়টি অনিশ্চয়তার ভেতর দিয়েই অতিবাহিত হয়।

বয়স্ক নাগরিকদের জীপবনযাপনে এই অনিশ্চয়তা দূর করতেই প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় সার্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা চালু করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে সংসদে জানান অর্থমন্ত্রী।

সবশেষ তিনি গত ফেব্রুয়ারি মাসে সার্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা দ্রুত চালু করতে অর্থমন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দেন।

অর্থমন্ত্রী বলেন, ১বাংলাদেশে বর্তমান বয়স্ক জনগোষ্ঠীর তুলনায় কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর সংখ্যা অনেক বেশি, বিধায় একটি সর্বজনীন পেনশন পদ্ধতি চালু করাটা সময়ের দাবি। সরকার বয়স্ক ও দুস্থ জনগোষ্ঠী বিভিন্ন কার্যক্রমের আওতায় সামাজিক সুরক্ষাকল্পে প্রায় ১ কোটি ১৫ লাখ সুবিধাভোগীকে সহায়তা প্রদান করছে। সরকারের নির্বচানি অঙ্গীকার বিবেচনায় বয়স্ক ও দুস্থ জনগোষ্ঠীর জন্য একটি টেকসই সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনী নিশ্চিত করার জন্য সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা প্রবর্তনের লক্ষ্যে ইতিমধ্যে ‘সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইন ২০২২’ প্রণয়নের নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আইনের খসড়াও ইমিধ্যে প্রনয়ন করা হয়েছে। প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষে ২০২২ সালের মধ্যেই আইনটি জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করা সম্ভব হবে-ইনশাআল্লাহ।’

তিনি আরও জানান, সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা প্রবর্তিত হলে আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিকখাতের বিপুলসংখ্যক জনগোষ্ঠি প্রাতিষ্ঠানিক ও সামাজিক নিরাপত্তাবলয়ের অন্তর্ভূক্ত হবে। ফলে, ভবিষ্যতে বর্তমানে চলমান সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রম ধীরে ধীরে সংকুচিত করে আনার সুযোগ সৃষ্টি হবে।