শিব নদীতে চাবি জালে বোয়াল শিকারের উৎসব
আনছার তালুকদার স্বাধীন: রাজশাহীর মোহনপুর এবং তানোর উপজেলার কোল ঘেঁষে বয়ে চলা শিব নদীতে চলছে চাবি জালে বোয়াল শিকারের উৎসব। ফালগুনের শুরুতে নদীর পানি কমে যাওয়ায় প্রতি বছরের মত এবারো চাবি জাল দিয়ে মাছ ধরার এই উৎসবে শামিল হয়েছে নানা বয়সী মানুষ।
প্রতি বছর শীতের শেষে বসন্তের শুরুতে নদীর উজানে পানি কমে আসলে মোহনপুর, তানোর, গোদাগাড়ী ও আশপাশের এলাকার সৌখিন মাছ শিকারিরা দূর দূরান্ত থেকে এসে এই ঐতিহ্যের মাছ ধরা উৎসবে শামিল হন।
গতকাল সোমবার দুপুরে সরেজমিনে মোহনপুর-তানোরের বুরুজঘাট এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, নানা শ্রেণি-পেশার ও বয়সের অনেক মানুষ এক সাথে নদীর দুই’ধার বরাবর এক লাইনে থেকে চাবি জাল দিয়ে নদীতে নেমে মাছ ধরছেন।
সম্মিলিত এই মাছ ধরার উৎসব দেখতে সেখানে ভিড় জমিয়েছেন উৎসুক মানুষজন। এসময় কারো চাবি জালে বড় মাছ ধরা পড়লেই হই-হই রবে মুখরিত হয়ে উঠছে পুরো নদীর ধার এলাকা। সৌখিন এই মৎস্য শিকারিরা জানান, মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করেই প্রতিবছর এই সময় প্রায় দিন এই জমায়েত হয়।
যে মাছ ধরা হয় তা- বিক্রির জন্য নয়। তবে অনেক বেশি মাছ পাইলে কেউ কেউ কিছু মাছ বিক্রি করে। যারা মাছ ধরতে আসেন তারা পেশাদার জেলেও নন। শুধুমাত্র শখের বশে নানা শ্রেণি-পেশা ও বয়সের মানুষ এক সাথে নামেন নদীতে। শখের মাছ যায় ঘরে।
তানোর উপজেলার চান্দুরিয়া ইউনিয়নের আজিপুর গ্রামের ফজর আলীর ছেলের রফিকুল ইসলাম (৪৫), আবুল কালাম এর ছেলে মুক্তার হোসেন (৪০) এবং আবেদ প্রামানিকের ছেলে মিরাজ প্রামানিক জানান, শিব নদীতে পানি কমে আসলেই আমরা মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে একটি দিন তারিখ ঠিক করি।
পরে এক সাথে নেমে পড়ি নদীতে। বেশির ভাগই চাবি জাল নিয়ে আসেন মাছ ধরতে। কেউ কেউ অন্য জালও আনেন। আমরা আজ শিব নদীতে দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে নানা বয়সের প্রায় ৩৫ জন মানুষ এক সাথে মাছ ধরতে এসেছি এবং প্রত্যেকেই যথেষ্ট মাছ পেয়েছি, বেশি পেয়েছি বোয়াল মাছ। তবে কেউ কেউ মাছ কম পেয়েছে। প্রতি বছর নদীতে এক সাথে মাছ ধরা আমাদের প্রাণের উৎসবে পরিণত হয়েছে।
তারা আরও বলেন, আমরা এই চাবি জাল দিয়ে শিব নদীতে বড় রুই, কাতল, বোয়াল, গজার, টেংরা, বাইম, পুঁটিসহ নানা প্রজাতির ছোট মাছও শিকার করে ঘরে নিয়ে যায়। তবে গতকাল আমরা কমবেশি সকলেই বোয়াল মাছ বেশি পেয়েছি।
আর বর্তমানে বোয়াল মাছের চাহিদা অনেক। আমরা বেশি বেশি বোয়াল মাছ ধরতে পেরে খুব খুশি।











