চাঁপাইয়ে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণ কর্মশালা

চাঁপাইনবাবগঞ্জ ব্যুরো: উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়বেটিস হৃদরোগ, স্ট্রোক ও অন্ধত্বে মৃত্যুরহার কমাতে চাঁপাইনবাবগঞ্জে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের ২ দিনের প্রশিক্ষণ কর্মশালা শেষ হয়েছে।
এই কর্মশালায় প্রধান অতিথি জেলা সিভিল সার্জন ডা. এ.কে এম সাহাব উদ্দীন জানান, দেশে প্রতি চারজন প্রাপ্তবয়স্কের মধ্যে একজনের উচ্চ রক্তচাপের রোগী পাওয়া যায়, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক।
মঙ্গলবার চাঁপাইনবাবগঞ্জে সিভিল সার্জন কার্যালয়ে বিকালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ (এনসিডি) কর্মসূচির উদ্যোগে ও ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত দুইদিনব্যাপী চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণ ও কর্মশালার সমাপনী সভায় বক্তব্য রাখেন, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের বাংলাদেশ হাইপারটেনশন কন্ট্রোল ইনিশিয়েটিভ প্রোগ্রামের ডেপুটি ডিরেক্টর ডাঃ শামীম জুবায়ের, নাচোল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ কামাল উদ্দিন, শিবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ সায়রা খান, বিভাগীয় প্রোগ্রাম অফিসার এহসানুল আমিন ইমন, সার্ভিলেন্স মেডিকেল অফিসার ডাঃ প্রিতম সাহা ও সার্ভিলেন্স মেডিকেল অফিসার ডাঃ আব্বাস ইবনে করিম প্রমুখ।
সিভিল সার্জন ডাঃ এ.কে. এম সাহান উদ্দীন বলেন, এ বছরের মধ্যে দেশে হৃদরোগজনিত মৃত্যুুরহার এক চতুর্থ অংশ কমিয়ে শতকরা ২৫ ভাগে, উচ্চ রক্তচাপের ব্যাপকতা কমিয়ে ১৮ ভাগে নিয়ে আসা এবং একইসাথে লবণ ব্যবহারের হার শতকরা ২৫ ভাগ কমানোর পরিকল্পনা বাস্তবায়নে রাজশাহী বিভাগের সকল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এনসিডি কর্নারের মাধ্যমে উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়বেটিসসহ অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণে সরকার বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা, পরামর্শ ও ওষুধ প্রদান করছে। সিভিল সার্জন আরও বলেন, এই কর্নারগুলো থেকে প্রাপ্তবয়সী সকলকে আধুনিক ডিজিটাল মেশিনের মাধ্যমে রক্তচাপ পরিমাপ করা হবে এবং সকল রোগীর তথ্য সিম্পল অ্যাপস ব্যবহার করে সংরক্ষণ করা হবে এবং তাদের উচ্চরক্তচাপ ও ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণের হার মনিটরিং এর কাজ করবে।
তিনি আরও বলেন, অসংক্রামক রোগ সারা বিশ্বে মৃত্যুর প্রধান কারণ। বিশ্বে প্রতিবছর ৪ কোটির বেশি মানুষ অসংক্রামক রোগে মৃত্যুবরণ করেন, এই হার মোট মৃত্যুর শতকরা ৭৪ ভাগ। নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশগুলোর মধ্যে এই হার আরও বেশি। আমাদের দেশে অসংক্রামক রোগে মৃত্যুর শতকরা ৩৪ ভাগ সংগঠিত হয় হৃদরোগে। ধূপান ও তামাক বা তামাকজাতীয় দ্রব্য ব্যবহার, এলকোহল বা মদ্যপান, অস্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ, শারীরিক পরিশ্রম না করার বিষয়গুলো এনসিডিজনিত দুই তৃতীয়াংশ মৃত্যুর সাথে সম্পৃক্ত। বিশ্বায়ন ও নগরায়নের ফলে বায়ুদূষণ, খাদ্যাভাস ও জীবনচারনের পরিবর্তনের ফলে অধিকমাত্রায় মানুষ অসংক্রামক রোগে বিশেষতঃ উচ্চরক্তচাপ ও ডায়বেটিসের শিকার হচ্ছেন। এই কর্মসূচির মাধ্যমে মানুষের জীবনচারণ পদ্ধতি পরিবর্তনের জন্য পরামর্শ প্রদান করা হবে। প্রশিক্ষন কর্মশালায় উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, মেডিকেল অফিসার, নার্স, উপ-সহকারী কম্যুনিটি মেডিকেল অফিসার, স্টোরকিপার ও পরিসংখ্যানবিদগণ অংশগ্রহণ করে।