নানা আয়োজনে রাজশাহীতে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস উদযাপিত
স্টাফ রিপোর্টার: নানা আয়োজনে রাজশাহীতে উদযাপিত হলো আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস।
জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহণকারী বিশ্বের সব দেশের শান্তিরক্ষীদের অসামান্য অবদানকে এই দিনে গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করা হয়।
দিবসটি উপলক্ষে বুধবার (২৯ মে) সকাল সাড়ে ৯টায় সার্কিট হাউস রোড থেকে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। এটি আরএমপি সদর দপ্তরে গিয়ে শেষ হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমির প্রিন্সিপাল (অতিরিক্ত আইজিপি) মো. মাসুদুর রহমান ভূঞা। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পুলিশের রাজশাহী রেঞ্জের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মো. আনিসুর রহমান, রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার বিপ্লব বিজয় তালুকদার, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফএম শামীম আহাম্মদ।
শোভাযাত্রায় রাজশাহী মহানগর পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট, বীর মুক্তিযোদ্ধা, সেনাবাহিনী, র্যাব, বিজিবি, রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়, রাজশাহী জেলা প্রশাসন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, রাজশাহী কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, ফায়ার সার্ভিস, কারারক্ষী, স্টুডেন্ট কমিউনিটি পুলিশিং ফোরাম, রোভার স্কাউট, বিএনসিসি, গার্ল গাইডস, রেড ক্রিসেন্ট, রোটারি ক্লাব, এশিয়া ফাউন্ডেশন, ইউএনডিপির প্রতিনিধিসহ সুশীল সমাজের নেতারা অংশ নেন।
শোভাযাত্রা শেষে সেখানে প্রধান অতিথিসহ আমন্ত্রিতরা বেলুন-ফেস্টুন উড়িয়ে এবং কবুতর অবমুক্তকরণের মাধ্যমে কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।
এরপর সদরদপ্তর প্রাঙ্গণে একটি পারিজাত গাছের চারা রোপণ করা হয়। এরপর শুরু হয় আলোচনা সভা। আলোচনা সভার শুরুতেই জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে নিহত সদস্যদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি মাসুদুর রহমান ভূঞা তার বক্তব্যের শুরুতেই জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে কর্তব্যরত অবস্থায় আত্মোৎসর্গকারী বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীদের গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন। তিনি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী মিশনে বাংলাদেশ পুলিশের মূল কার্যক্রম ও ভূমিকা তুলে ধরেন।
প্রধান অতিথি বলেন, ‘‘বাংলাদেশের সেনাদের অংশগ্রহণে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে বিশ্বের বুকে বাঙালি ও বাংলা ভাষার পরিচিতি বেড়েছে বহুগুণে। সব বৈষম্যকে পেছনে ফেলে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীরা নিজেদের উৎসর্গ করেছেন বিশ্বমানবতার মহান সেবায়। সেই সঙ্গে তিনি বাংলাদেশ নৌ, বিমান বাহিনীসহ বিভিন্ন বেসামরিক প্রতিষ্ঠানের শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় অবদানের কথা তুলে ধরেন।’’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ডিআইজি আনিসুর রহমান বলেন, ‘‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের একটি স্বাধীন দেশ উপহার দিয়েছেন। তাই আমার বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় বিশ্বে শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে অংশ গ্রহণ করতে পারছি।’’
সভাপতির বক্তব্যে আরএমপি’র কমিশনার বিপ্লব বিজয় তালুকদার বলেন, ‘‘আজকের দিনটি আমরা যেভাবে পালন করছি সেটি গৌরবের দিন। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌ বাহিনী, বিমান বাহিনী এবং বাংলাদেশ পুলিশ এই স্বাধীন দেশকে সমগ্র পৃথিবীর বুকে তুলে ধরেছে শান্তিরক্ষা মিশনের মাধ্যমে। সারা পৃথিবী আজ আমাদের চিনে, এর মূল কারিগর ছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী দিবস উপলক্ষ্যে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষায় বাংলাদেশ পুলিশ ও অন্যান্য বাহিনীর গৌরবগাথা ভুমিকা-সহ জীবন উৎসর্গকারী শান্তিরক্ষীদের পরিসংখ্যান তুলে ধরেন।’’
কমিশনার বলেন, ‘‘জাতিসংঘের শান্তিরক্ষীরা ৭৬ বছর ধরে বিশ্বের সবচেয়ে নাজুক রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা পরিস্থিতিতে জীবন বাঁচাতে এবং পরিবর্তন করতে কাজ করেছে। দুই মিলিয়নেরও বেশি ইউনিফর্ম পরা এবং বেসামরিক কর্মী এর দেশগুলিকে যুদ্ধ থেকে শান্তিতে রূপান্তর করতে সহায়তা করেছে। আজ ৭০ হাজার এরও বেশি শান্তিরক্ষী সারা বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ১১টি মিশনে কাজ করছে। এছাড়াও তিনি তার বক্তব্যে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের বিভিন্ন অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন।’’
আগে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথিসহ অংশগ্রহণকারী সকল প্রতিষ্ঠানকে আরএমপি’র পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা স্মারক প্রদান করা হয়।
সোনালী/জগদীশ রবিদাস