নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করতে নানা চক্রান্ত হচ্ছে: মেয়র লিটন
স্টাফ রিপোর্টার: আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেছেন, ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করতে নানা চক্রান্ত হচ্ছে। প্রতিদিন প্রতি মুহূর্তে নানা রকম গুজব ছাড়ানো হচ্ছে। এর মধ্যে নির্বাচনের ট্রেন ছেড়ে দিয়েছে, ট্রেন চলছে।
শনিবার দুপুরে নগরীর সিটি বাইপাস রোড সংলগ্ন জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন। সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র লিটন বলেন, আমরা শারীরিক, মানসিক, আর্থিক, অবকাঠামোগত, বুদ্ধি বিচারে এখন সব দিক দিয়ে শক্তিশালী। তার মেধা ও যোগ্যতা আমরা প্রমাণ করেছি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চাচ্ছে বলেই ৭ জানুয়ারি নির্বাচনে দলে দলে ভোটারকে আনতে হবে, নো, এই দায় আমাদের পড়েনি। আমরা নির্বাচনকে বাংলাদেশের প্রচলিত ধারায় মানুষ যেটা মনে করেন, ভোট মানে আনন্দ, ভোট মানে উৎসব, ভোট মানে শীতের দিনে গরম চা কে ঘিরে আড্ডা ইত্যাদি, সেই কারণে নির্বাচনে ভোট দিতে মানুষ আনন্দ-উল্লাস করতে করতে যাবে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে খুশি করার জন্য নয়, ইউরোপীয় ইউনিয়নকে খুঁশি করার জন্য নয়। নির্বাচনে আমাদের প্রমাণ করতে হবে বিশ্ববাসী দেখুক বাংলাদেশের মানুষ নির্বাচনকে কতটা আনন্দের সঙ্গে নেয়।
লিটন বলেন, অতীতে বিএনপি আমলে সারা বাংলাদেশে মা-বোনেরাসহ তরুণ প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানতে দেওয়া হয়নি। তবে ২০০৮ সালে যারা শিশু ছিল, যাদের বয়স ৩ থেকে ৫ বছর ছিল, তারা আজকে ভোটার। তারা দেশের উন্নয়নের কাজ দেখতে দেখতে মুগ্ধ হয়ে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় চার নেতার অবদান, মহান মুক্তি সংগ্রামের কথা জানতে পেরেছে, আজ তারা আর অতীতে ফিরে যেতে চায় না। তরুণ প্রজন্ম আওয়ামী লীগের পক্ষেই রায় দেবে। তিনি আরো বলেন, অন্যান্য বারের মতো, ১৯৫৪, ২০১৪, ২০১৮ সালে যে চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র হয়েছিল, এবারো সেই রকম চক্রান্ত হচ্ছে নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করতে। শুধু কুশীলবগুলো পরিবর্তন হয়েছে, একি নাটক, একি ষড়যন্ত্র মঞ্চস্থ হচ্ছে। ১৯৭১ সালে যুক্তরাষ্ট্র আমাদের স্বাধীনতা চায়নি, সপ্তম নৌবহর পাঠিয়েছিল। ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশ দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি করা হয়েছিল, গম ভর্তি দুই জাহাজ চট্রগ্রাম বন্দরের কাছে এসে ফেরত গিয়েছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নির্দেশে। ১৯৭৫ সালে কৌশলে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার ক্ষেত্র তৈরি করা হয়েছিল। বারে বারে আর ৭৫ হবে না। উপমহাদেশের অন্যতম প্রাচীনতম দল আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগ দেশের স্বাধীনতা এনেছে, উন্নয়ন দিয়েছে, দেশের মানুষের কল্যান করছে, জনগণ আমাদের সঙ্গে আছে, আমাদের আবার কীসের ভয়।
মতবিনিময় সভায় প্রধান বক্তা ছিলেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, আমিসহ অনেকেই দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিলাম। মনোনয়ন পাওয়া নিয়ে আমাদের মধ্যে অনেক প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছিল। নেত্রী আমাকে মনোনয়ন দিয়েছেন। নেত্রী যাকে মনোনয়ন দিয়েছেন, আমরা তার পক্ষেই ঐক্যবদ্ধ থাকবো-এটিই নিয়ম, সেই নিয়ম মেনেই আমি চলতে চাই। কে কার সাথে ছিল, সেটি বড় কথা নয়। আমার কাছে সবচেয়ে বেশি প্রিয় হচ্ছে আওয়ামী লীগ। আমরা সেই আস্থা ও বিশ্বাসের জায়গা রেখে ভোট করবো। এখানে বিভাজনের কোন সুযোগ নেই।
তিনি আরো বলেন, নির্বাচনে ভোটারের উপস্থিতি বাড়াতে হবে। ভোটাররা যাতে নির্ভয়ে ভোট দিতে আসতে পারেন, সেই পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। ভোটারদের উপরে যাতে বোমাবাজি, আগুন সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদীদের যে আচরণ সেটি থেকে তাদের রক্ষার জন্য আমাদের আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দকে ভুমিকা রাখতে হবে। দেশে যে উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। সংগত কারণেই মানুষ নৌকায় ভোট দিবে।
সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান বেগম আখতার জাহান। সভাপতিত্ব করেন পবা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ইয়াসিন আলী। সঞ্চালনা করেন পবা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন। বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান মানজাল, সদস্য ফারুক হোসেন ডাবলু, যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক মোস্তাক আহমেদ, নওহাটা পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজিজুল হক , কাটাখালী পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু সামাসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। সভায় পবা উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
সোনালী/জেআর