ঋণ পরিশোধে বাংলাদেশ কখনোই ব্যর্থ হয়নি: অর্থমন্ত্রী
অনলাইন ডেস্ক: জিডিপি অনুপাতে বাংলাদেশ বিশ্বের সবচেয়ে কম ঋণের দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম, যেখানে ঋণের পরিমাণ মাত্র ৩৪ শতাংশ। ৫১ বছরে বাংলাদেশ কখনোই দেশি-বিদেশি ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হয়নি।
মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর) ফিলিপাইনের রাজধানী ম্যানিলায় এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) সদরদপ্তরে এডিবির প্রেসিডেন্ট মাসাতসুগু আসাকাওয়ার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে এ কথা বলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
অর্থমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে এডিবির ক্রমবর্ধমান অর্থায়ন দাঁড়িয়েছে ২৭ দশমিক ৬০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। যার মধ্যে মোট বকেয়া ১১ দশমিক ৬৯ বিলিয়ন ডলার।
তিনি বলেন, এডিবি এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে অর্থনৈতিক ও স্বাস্থ্য সংকট পুনরুদ্ধারের জন্য বাংলাদেশসহ উন্নয়নশীল সদস্য দেশগুলোকে দ্রুত ভ্যাকসিন ও ব্যয় সহায়তা দিয়ে সাহায্য করেছে। এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যে, বাংলাদেশ-এডিবি কান্ট্রি পার্টনারশিপ স্ট্র্যাটেজি (২০২১-২৫), বাংলাদেশের জাতীয় উন্নয়ন ও লক্ষ্যগুলির সঙ্গে সমন্বয় করে তৈরি করা হয়েছে। যেখানে আগামী পাঁচ বছরে আমাদের জন্য ১২ থেকে ১৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ সহয়তার জোগান থাকবে বলে আশা করা যায়। আমাদের উন্নয়নের মাইলফলক অর্জনে এডিবির ক্রমাগত সমর্থন বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
বাংলাদেশর সক্ষমতা ও অগ্রগতি তুলে ধরে মুস্তফা কামাল বলেন, বাংলাদেশ গত ১৩ বছরে গড়ে ৬ দশমিক ৬০ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। কিন্তু কোভিড-১৯ মহামারি এবং বর্তমান ভূ-রাজনৈতিক সংকটের কারণে খাদ্য, জ্বালানি, সার এবং আর্থিক সংকট বিশ্বব্যাপী সরবরাহ চেইনকে ব্যাহত করেছে এবং সারা বিশ্বে মূল্যস্ফীতি বাড়িয়েছে। সামাজিক ও অর্থনৈতিক স্থিতিস্থাপকতা নিশ্চিত করতে আমাদের এডিবি থেকে বাজেট সহায়তার পাশাপাশি নীতিভিত্তিক ঋণ (পিবিএল) প্রয়োজন।
এ বিষয়ে তিনি এডিবির বিশেষ সহযোগিতা কামনা এবং বাংলাদেশও এডিবি সদরদপ্তরের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রাখবে বলে আশা প্রকাশ করেন অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামাল।
বাংলাদেশ ও এডিবির সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তিতে গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, আগামী বছর বাংলাদেশ ও এডিবির জন্য একটি ঐতিহাসিক মাইলফলক। ২০২৩ সাল আমাদের অংশীদারত্বের ৫০তম বার্ষিকী হবে।
৫০ বছর পূর্তিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ১৬৫ মিলিয়ন বাংলাদেশি নাগরিকের পক্ষ থেকে অর্থমন্ত্রী এডিবি প্রেসিডেন্টকে বাংলাদেশ সফর এবং ৫০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠান উদযাপনের আমন্ত্রণ জানান।
এদিকে এডিবি প্রেসিডেন্ট বলেন, শুরু থেকেই বাংলাদেশের প্রতি এডিবির বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। এবারের বার্ষিক সভায় বাংলাদেশ যে বিষয়গুলো তুলে ধরেছে সেগুলোও গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হবে। করোনা মহামারি কাটিয়ে উঠতে বাংলাদেশের সামাজিক এবং অর্থনৈতিক নিরাপত্তা পুনরুদ্ধারে এডিবি শুরু থেকেই বাংলাদেশের পাশে থেকে সহযোগিতা করছে এবং ভবিষ্যতেও সবসময় পাশে থাকবে।