ঢাকা | ডিসেম্বর ২, ২০২৫ - ৫:১৭ পূর্বাহ্ন

শিরোনাম

রাজশাহীতে শেখ হাসিনা ও এনসিপি নেতার কুশপুতুল দাহ

  • আপডেট: Tuesday, December 2, 2025 - 12:13 am

স্টাফ রিপোর্টার: জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) রাজশাহী জেলা কমিটিতে আওয়ামী লীগের দোসর ও জুলাই আন্দোলনের বিরোধিতাকারীদের পুনর্বাসনের অভিযোগ উঠেছে।

রোববার (৩০ নভেম্বর) রাতে রাজশাহী নগরীর বাটার মোড়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যরা। এসময় ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এই কমিটি বাতিল না করা হলে রাজশাহীতে এনসিপিকে অবাঞ্ছিত করারও হুমকি দেওয়া হয়।

পরে আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, এনসিপির বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ইমরান ইমন ও জেলা এনসিপির আহ্বায়ক সাইফুল ইসলামের ছবি সংবলিত কুশপুতুল পোড়ানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য সুমাইয়া আক্তার। তিনি বলেন, আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে রাষ্ট্রীয়ভাবে কার্যক্রম নিষিদ্ধ রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত কিছু ব্যক্তি বর্তমানে এনসিপির সঙ্গে পুনরায় সক্রিয় হয়ে উঠেছে, যা রাজশাহী জেলা কমিটিতে পরিলক্ষিত হচ্ছে।

একটি নিষিদ্ধ সংগঠনের প্রতিনিধি কীভাবে বৈধ রাজনৈতিক কাঠামোর ভেতর সক্রিয় থাকতে পারে এ প্রশ্ন আজ দেশের প্রতিটি সচেতন নাগরিকের। আমরা লক্ষ্য করেছি বিগত সময়ে সক্রিয়ভাবে যুক্ত থাকা সাইফুল ইসলাম জুলাই অভ্যুত্থানে ছাত্রসমাজের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছিল।

তিনি আরও বলেন, জুলাই আন্দোলনে ৫ আগস্ট রাজশাহীর আওয়ামী লীগের দোসর রুবেল যে দুই হাতে সাধারণ ছাত্র-জনতার দিকে গুলি চালিয়েছে নির্মমভাবে, তার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ সহচর ছিল এই সাইফুল। জুলাই আন্দোলনের নেতৃত্ব দানকারী দল জাতীয় নাগরিক পার্টির রাজশাহী জেলা কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে এই সাইফুল ইসলামকে কমিটির শীর্ষ পদে বা আহ্বায়ক অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদ ও আহতদের প্রতি এটি অন্যায়, অবিচার ও পরিষ্কারভাবে শহীদদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করা হয়। তাই আমরা জুলাই যোদ্ধারা ও আহত সদস্যরা জোর প্রতিবাদ জানিয়ে ঘোষণা করছি আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রাজশাহী জাতীয় নাগরিক পার্টির জেলা কমিটি বাতিল ঘোষণা করতে হবে। সেই সঙ্গে জাতীয় নাগরিক পার্টির বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ইমরান ইমনকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করছি। যদি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এই আওয়ামী লীগের দোসরদের বাতিল ঘোষণা না করা হয় তাহলে আমরা রাজপথ ছাড়বো না। যদি আমাদের আবারও রাজপথে রক্ত ঝরাতে হয় আমরা রক্ত দিতে প্রস্তুত। আমাদের ইনকিলাব এখনো শেষ হয়নি।

এসময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দেন আরেক জুলাই যোদ্ধা আব্দুল বাছির আল হাদী। তিনি বলেন, আমাদের প্রধান সমস্যা হচ্ছে সাইফুল ইসলামকে নিয়ে। আমরা ইতোপূর্বে লক্ষ্য করেছি আওয়ামী লীগের, মানে একদম সন্ত্রাসী শ্যুটার রুবেলের সঙ্গে তার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠতা রয়েছে ও আওয়ামী লীগের দোসর মেয়র লিটনের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতা রয়েছে। সেক্ষেত্রে সে জুলাই আন্দোলনে ছাত্র সমাজের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছিল। আমরা জোর দাবি জানাচ্ছি, তাকে এনসিপি থেকে বহিষ্কার করার জন্য।

তিনি আরও বলেন, এর আগেও আমরা আমাদের জায়গা থেকে প্রতিবাদ জানিয়েছি ও সেটা মিডিয়াতেও গেছে। আমরা এনসিপির বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ইমরান ইমনকে বিষয়টা সুস্পষ্টভাবে বলেছি যে তার আওয়ামী লীগ সম্পৃক্ততা রয়েছে, তারপরেও এই কমিটিতে তাকে আহ্বায়ক হিসেবে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। আমরা ২৪ ঘণ্টা আল্টিমেটাম দিয়েছি। এরপরেও যদি না হয় পরবর্তীতে আবার রাজপথ বেছে নেব, আবারও জুলাইকে জাগিয়ে তুলবো। রাজশাহীতে আমরা এনসিপিকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করবো।

এসময় জুলাই যোদ্ধা ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য মাহফুজা রাহাত বুসরা, শুয়াইব আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।