ঢাকা | নভেম্বর ১৬, ২০২৫ - ১:১৯ পূর্বাহ্ন

শিরোনাম

নির্বাচন একটি অবধারিত ঘটনায় পরিণত হচ্ছে, রাজশাহীতে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য

  • আপডেট: Saturday, November 15, 2025 - 9:22 pm

স্টাফ রিপোর্টার: অর্থনীতিবিদ ও গণনীতি বিশ্লেষক ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, নির্বাচন এখন ক্রমান্বয়ে একটি অবধারিত ঘটনায় পরিণত হচ্ছে।

শনিবার রাজশাহীতে ‘নাগরিক প্ল্যাটফর্মের প্রাক-নির্বাচনী উদ্যোগ’-এর রাজশাহী আঞ্চলিক পরামর্শ সভায় অংশ নিয়ে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।

বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত রাজশাহী পবার ব্র্যাক লার্নিং সেন্টারের সম্মেলনকক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ-এর সম্মানীয় ফেলো এবং নাগরিক প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘নির্বাচন এখন ক্রমান্বয়ে একটি অবধারিত ঘটনায় পরিণত হচ্ছে। যে কোনো একটি ঘটনায় পৌঁছানোর ক্ষেত্রে রাস্তা অনেক ক্ষেত্রে সমস্যাসংকুল থাকে। প্রত্যেকেই আশা করছেন, নির্বাচনটা হবে যথাসময়ে। সুষ্ঠুভাবে হবে, অংশগ্রহণমূলক হবে এবং যে ফলাফল আসবে তা বাংলাদেশের আগামী দিনের যে চেষ্টা, সেটাকে আরও এগিয়ে নেবে।’

এর আগে পরামর্শ সভায় বৃহত্তর রাজশাহী অঞ্চলের সাধারণ নাগরিক, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, গবেষক, রাজনৈতিক দলের স্থানীয় পর্যায়ের প্রতিনিধি, আইনজীবি, পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিদের পাশাপাশি স্থানীয় উদ্যোক্তা, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন পেশাজীবি মানুষ অংশগ্রহণ করেন।

সেখানে সংস্কার, সুশাসন, নিরাপত্তা, প্রার্থী নির্বাচন, কর্মসংস্থান, শিক্ষা সংস্কার, স্বাস্থ্য সংস্কার, আঞ্চলিক ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণসহ নানা বিষয়ে অংশগ্রহণকারীরা মত দেন। এছাড়া আগামী সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীদের বিবেচ্য বিষয় ও সরকারের কাছে প্রত্যাশার বিষয়গুলো তারা তুলে ধরেন।

সভা শেষে ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘অংশগ্রহণকারীরা দেখতে চাচ্ছে একটা নির্বাচন, যেখানে প্রকৃত জনপ্রতিনিধিরা নির্বাচিত হবেন। ব্যয়কে নিয়ন্ত্রণ করা, সোশ্যাল মিডিয়া-সামাজিক মিডিয়ার অপব্যবহারকে নিয়ন্ত্রণ করা এবং যথাপযুক্ত প্রার্থীকে দাঁড় করানোর ব্যাপারে খুব বড়ভাবে কথা আসছে। নির্বাচনের ব্যয় যদি কমানো না যায়, তাহলে দুর্নীতি কমানো মুশকিল হবে। প্রত্যেকটা জনপ্রতিনিধি কী দায়িত্ব পালন করলেন, বাৎসরিক ভাবে সেই হিসাব দেওয়ার কথা তারা বার বার বলছেন।’

তিনি জানান, রাজশাহীকে কেন্দ্র করে চারটি বড় বড় বিষয় উঠে আসছে। রাজশাহী মরুকরণ হচ্ছে। উত্তরাঞ্চলে পদ্মা ও তিস্তার পানি সংকটকে নিরসন করা। দ্বিতীয়ত জ্বালানি সংকট রয়েছে। বিশেষ করে গ্যাসের সমস্যা। যোগাযোগ ব্যবস্থার সমস্যার কথা এসেছে। এখানে শিল্প নেই। শিল্পায়নের ব্যাপারে অনেকে গুরুত্বারোপ করেছেন। স্বাস্থ্যসেবা, মানসম্মত শিক্ষা, দরিদ্র মানুষের সামাজিক সুরক্ষার ব্যাপারে কথা হয়েছে। সবচেয়ে বেশি এসেছে নিরাপত্তার বিষয়টি।

এটি শুধু অর্থনৈতিক নিরাপত্তার বিষয় না, সামাজিক নিরাপত্তা, সাংস্কৃতিক নিরাপত্তা এবং ব্যবসার ক্ষেত্রে নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে আসছে। নিরাপত্তার বিষয়টিকে মানুষ সুশাসনের সাথে, বিচার বিভাগের স্বাধীনতার সাথে, প্রশাসনের দক্ষতা-সক্ষমতার সাথে, রাজনৈতিক মনোভাবের সাথে এবং সরকারের অভিপ্রায়ের সাথে যুক্ত করে দেখেছেন। অর্থাৎ নিরাপত্তার বিষয়টিকে তারা সামগ্রিকতায় বিচার করেছেন।’

তিনি বলেন, ‘এই নিরাপত্তাকে যদি জোরদার করা না যায়, তাহলে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন করা কষ্টকর হবে বলে অংশগ্রহণকারীরা বিবেচনা করেছেন। নিবার্চনরোত্তর নিরাপত্তার বিষয়টিও তাদের কাছে কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। কাজেই এ সমস্ত বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দিতে হবে।’

এর আগে পরামর্শ সভায় সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের সম্মানীয় ফেলো ও নাগরিক প্ল্যাটফর্মের কোর গ্রুপ সদস্য অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফরিদ উদ্দিন খান, স্থানীয় দৈনিক সোনালী সংবাদের সম্পাদক মো. লিয়াকত আলী, ডাসকো কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম, কলেজশিক্ষক মোশাররফ হোসেন, শিক্ষার্থী ফুয়াদ রাতুলসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ তাদের মতামত তুলে ধরেন। তাদের এসব মতামত নাগরিক ইশতেহার হিসেবে রাজনৈতিক দলগুলোকে দেওয়া হবে।