ঢাকা | সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২৫ - ২:০৩ পূর্বাহ্ন

যৌতুকের দাবিতে স্ত্রী ও শ্বশুরকে মারধরের অভিযোগ

  • আপডেট: Saturday, September 13, 2025 - 10:20 pm

স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহীর দামকুড়া থানার ঝিনাইপুকুর এলাকায় যৌতুকের দাবিতে স্বামী-শ্বশুরের হাতে গৃহবধূকে নির্যাতনসহ তার বাবাকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় দামকুড়া থানায় মামলা গ্রহণ না করায় দোষিদের বিচার চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী গৃহবধূ লিজা খাতুন। শনিবার দুপুরে নগরীর একটি রেস্টুরেন্টে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে গৃহবধূ লিজা খাতুন অভিযোগ করেন, চার বছর আগে দামকুড়া থানার শিতলাই বাথানবাড়ি এলাকার রবিউল ইসলাম সেন্টুর ছেলে তাসলিম আহমেদ ওরফে তানিমের সাথে তার বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই তানিম যৌতুকের জন্য তাকে নির্যাতন শুরু করে। টাকার জন্য তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেছে। এরমধ্যেই ৩ বছর আগে তাদের একটি সন্তানের জন্ম হয়। যৌতুকের জন্য নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে গেলে গৃহবধূ লিজার বাবা বরজাহান আলী মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে ২০২২ সালের ২৯ নভেম্বর তার স্বামীকে দুই লাখ টাকা দেন। এরপর কিছুদিন তার প্রতি নির্যাতন বন্ধ ছিল।

এর কয়েক মাস পর আবার তার স্বামী ও শ্বশুরসহ পুরো পরিবার তাকে নির্যাতন শুরু করে। নির্যাতন সইতে না পেরে ওই গৃহবধূ চলতি বছরের ৪ আগস্ট বাবার বাড়িতে চলে যান। ১৮ আগস্ট বিকেল পৌনে ৫টার দিকে তার বাবার সাথে তিনি ডাক্তার দেখানোর জন্য দামকুড়া বাজারে গেলে ইলিয়াস মন্টুসহ কয়েকজন জনসম্মুখেই তাদের গালাগালি দিয়ে তাকে চড় থাপ্পড় মারা শুরু করে। প্রাণ ভয়ে তারা বাড়িতে ফিরে যান। এর কিছুক্ষণ পর তারা লোখমুখে জানতে পারেন যে, তাদেরকে মারধর করার জন্য তার স্বামীসহ শ্বশুর বাড়ির লোকজন বাড়ি আসছে। বিষয়টি জানার পর তারা দামকুড়া থানায় অভিযোগ দেওয়ার জন্য যান।

তাদের অনুপস্থিতে সাড়ে ৬টার দিকে তার শ্বশুর বাড়ির লোকজন তার বাবার বাড়িতে ঢুকে ঘরের জিনিসপত্র এলোমেলো করে এবং স্বর্ণের চেইন ও ৫০ হাজার টাকা লুট করে নিয়ে যায় বলেও তিনি অভিযোগ করেন। এ ঘটনায় তার বাবা বাদী হয়ে দামকুড়া থানায় মামলা করতে যান কিন্ত অজ্ঞাত কারণে থানার ওসি সেটি মামলা হিসেবে গ্রহণ না করে শুধু অভিযোগ গ্রহণ করে। কিন্তু অভিযোগেরও কোনো সুরাহা বা দৃশ্যমান তদন্ত করেননি। তাদের অভিযোগের দায়িত্ব দেওয়া হয় দামকুড়া থানার এসআই আওয়ালকে। এসআই আওয়াল তার বাবাকে বলেন, ওরা খুব খারাপ লোক। মামলা করে কি করবেন?

রাস্তাঘাটে চাকু মেরে দিবে। তার থেকে এসব না করাই ভালো। এই মামলা দায়ের করার জন্য থানায় একাধিকবার গেলেও ওসি ও এসআই কেউ তাদের পাত্তা দিচ্ছেন না। তারা পুরো পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলেও দাবি করা হয়। তাই প্রশাসনের মাধ্যমে এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে অপরাধীদের বিচার দাবি করছি। সংবাদ সম্মেলনে গৃহবধূ লিজার বাবা বরজাহান আলী, মা ও বোনসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন। বিষয়টি জানতে গৃহবধূর স্বামী তাসলিম আহমেদ ওরফে তানিমের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।

তবে আরএমপির দামকুড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রবিউল ইসলাম বলেন, গৃহবধূ লিজার পরিবার থানায় দুটি অভিযোগ দিয়েছে। ছেলের পরিবারের পক্ষ থেকেও থানায় অভিযোগ আছে। শুধু মারধরের অভিযোগের বিষয় হলে এজাহার নেওয়া যাবে। চুরির বিষয়ে মামলা গ্রহণ করা সম্ভব নয়। এসআই আওয়ালের ব্যাপারে বলেন, এসআই এ ধরণের কথা বলার কথা নয়। তারপরও বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখবো।