ঢাকা | সেপ্টেম্বর ২০, ২০২৪ - ১২:০১ পূর্বাহ্ন

শিরোনাম

অভ্যুত্থানের পর ৪৩ জন শীর্ষ সন্ত্রাসী বেরিয়েছে: আইজি প্রিজন্স

  • আপডেট: Tuesday, September 17, 2024 - 9:32 pm

অনলাইন ডেস্ক: ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর দেশের কয়েকটি কারাগারে বিশৃঙ্খলা-বিদ্রোহ করেছিলেন বন্দিরা। বিভিন্ন কারাগারসহ কোনো কোনোটিতে চালানো হয় বাইরে থেকে হামলা-ভাঙচুর।

এ পরিস্থিতিতে দুই হাজারের অধিক বন্দি পালিয়ে গেছেন। এদের মধ্যে মৃত্যুদণ্ড, যাবজ্জীবন, বিভিন্ন মেয়াদে সাজা পাওয়া বন্দিসহ বিচারাধীন মামলার আসামিরা আছেন। এখন পর্যন্ত নয়শ বন্দি পলাতক রয়েছেন।

পালিয়ে যাওয়া বন্দিদের মধ্যে ৭০ জন আছে। এই ৭০ জনের মধ্যে ৯ জন সাজাপ্রাপ্ত ছিল। এছাড়া শীর্ষ সন্ত্রাসী বিভিন্ন কারাগারে থাকা এই ধরনের ৪৩ জন বন্দি কারাগার থেকে বেরিয়ে গেছে।

মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর বকশিবাজারে অবস্থিত কারা অধিদপ্তরে কারা নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিভিন্ন গৃহীত ব্যবস্থাদি সম্পর্কিত ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন কারা মহাপরিদর্শক (আইজি প্রিজন্স) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মো. মোতাহের হোসেন।

তিনি জানান, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে দেশের পট পরিবর্তনের সময়কালে দেশের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সরকারি অনেক প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামো ক্ষয়ক্ষতির সাধিত হয়। দেশের কারা অধিদপ্তরের ব্যাতিক্রম ছিল না।

বেশ কয়েকটি কারাগারে নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয় এবং প্রায় দুই হাজারের অধিক বন্দি কারাগার থেকে পালিয়ে যায়। এখন পর্যন্ত অনেক বন্দিদের গ্রেপ্তার করেছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। পাশাপাশি দুই-একজন আসামি ফিরেও এসেছেন। এখন পর্যন্ত নয়শ বন্দি পলাতক রয়েছেন।

কারা মহাপরিদর্শক বলেন, কয়েকটি কারাগার থেকে গোলাবারুদ লুটের ঘটনাও ঘটে এবং কয়েকটি কারাগারে বন্দি পলায়ন সময় কয়েকজন বন্দির মৃত্যুসহ অনেক কারা কর্মকর্তা এবং কারারক্ষী গুরুতর আহত হন। অগ্নিসংযোগ এবং ব্যাপক ভাঙচুরের ফলে দুটি কারাগারে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি সাধিত হয়। অনেক কারা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আবাসস্থলও ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সেনাবাহিনীর তাৎক্ষণিক সহায়তায় কারা বিভাগ অদম্য সাহসিকতার সঙ্গে অন্যান্য কারাগারগুলো সুরক্ষিত রাখতে সক্ষম হয়।

পরবর্তীতে দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে কারাগার থেকে পালিয়ে যাওয়া অধিকাংশ বন্দিকেই কারাগারে ফেরত নিয়ে আসা সম্ভব হয়। এর মধ্যে কিছু বন্দি স্বেচ্ছায় এবং বাকিদের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় গ্রেপ্তার করা হয়। এ প্রক্রিয়া চলছে। ইতোমধ্যে কারাগারের লুট করা অস্ত্র ও গোলাবারুদের উল্লেখ্যযোগ্য অংশও উদ্ধার করা হয়েছে, অবশিষ্টগুলো উদ্ধারের জন্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, কারাগারকে সেবাগ্রহণকারীদের আস্থাভাজন হিসেবে গড়ে তোলাসহ একটি প্রকৃত সংশোধনাগার হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পেশাগত দক্ষতা বাড়ানোর জন্য ইতোমধ্যে প্রশিক্ষণের পরিকল্পনা প্রণয়নসহ দক্ষতা এবং যোগ্যতার ভিত্তিতে গুরুত্বপূর্ণ পদগুলো পদায়নের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। জ্যেষ্ঠতা নির্ধারণ সংক্রান্ত জটিলতা নিরসন পূর্বক স্থবির পদোন্নতির ক্ষেত্রে গতিশীলতা আনয়নসহ জনবল বাড়ানোর ন্যায্যদাবিগুলোর বিষয়ে নানামুখি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

এছাড়া দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিষয়ে যথাযথ তদন্তপূর্বক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার কার্যক্রমও প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এক্ষেত্রে কারা বিভাগ নিশ্চয়তা দিয়েছে যে, এখন থেকে কারা বিভাগের কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীর দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে অতি দ্রুত তার সঙ্গে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

এই সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিভাগের কারা উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি প্রিজন্স) মো. জাহাঙ্গীর কবিরসহ অধিদপ্তরের অন্যান্য কর্মকর্তারা।