ঢাকা | জুন ১৯, ২০২৫ - ২:৫৯ পূর্বাহ্ন

টোল আদায়ের নামে চাঁদাবাজি, আটক করেও ছেড়ে দিল পুলিশ

  • আপডেট: Tuesday, April 16, 2024 - 11:59 pm

স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহীর গোদাগাড়ী পৌরসভা এলাকার বালুর ঘাটে ট্রাক থেকে জোর করে অতিরিক্ত টোল আদায়ের দায়ে গত রোববার রাতে দুই জনকে সরেজমিন আটক করে গোদাগাড়ী থানা পুলিশ।

অভিযোগ উঠেছে, সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রমাণসহ তাদের আটক করা হলেও কার্যকর কোন আইনি ব্যবস্থা ছাড়াই শুধুমাত্র মুচলেকা নিয়ে অভিযুক্তদের ছেড়ে দেয়া হয়েছে। আটক পরবর্তী পুলিশের এমন ভূমিকায় নানা মহলে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া! ভুক্তভোগী ট্রাকচালকের অভিযোগ, এ ঘটনায় তিনি লিখিত অভিযোগ দিলেও পুলিশ তা গ্রহণ করেনি।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গোদাগাড়ী পৌর এলাকার বালুঘাটে টোল আদায়ের ইজারা পেয়েছে মেসার্স মুন এন্টারপ্রাইজ নামে একটি প্রতিষ্ঠান। ইজারা নেয়ার পর বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন প্রতিষ্ঠানটি বালুবাহী ট্রাক থেকে টোল আদায় শুরু করে। আর প্রথম দিনই তারা সরকারিভাবে নির্ধারিত ১২০ টাকা টোলের পরিবর্তে ট্রাকপ্রতি জোরপূর্বক ৫০০ টাকা করে আদায় করে। এনামুল হক নামে এক ট্রাকচালক অতিরিক্ত টোল দিতে না চাইলে তাকে মারধরও করা হয়।

পরে এনামুল পুলিশের জরুরি সেবার ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে অভিযোগ দিলে গত রোববার রাত সাড়ে ১২টার দিকে গোদাগাড়ী থানা-পুলিশ পৌরসভার তৌমুরের মোড় এলাকায় বালুঘাটে অভিযান চালিয়ে দুজনকে আটক করে।

আটকৃতরা হলেন, জাহাঙ্গীর আলম ও রকিবুর রহমান। তাদের দুজনেরই বাড়ি গোদাগাড়ী এলাকায়। তারা ট্রাকের টোল আদায়কারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স মুন এন্টারপ্রাইজের পক্ষ থেকে টোল আদায় করছিলেন। জরুরি সেবার নম্বরে ফোন পেয়ে পুলিশ তাদের আটক করে থানায় নিয়ে গেলেও তাদের বিরুদ্ধে তেমন কোন কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি। ভবিষ্যতে আর অতিরিক্ত টোল আদায় করা হবে না, শুধুমাত্র এমন মুচলেকা নিয়ে তাদের ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ।

কিন্তু ভুক্তভোগী ট্রাকচালক এনামুল হকের অভিযোগ, এ ঘটনায় তিনি ওই ইজারাদার প্রতিষ্ঠানের মালিকসহ সংশ্লিষ্টদের আসামী করে থানায় লিখিত অভিযোগ দিলেও পুলিশ তা নেয়নি। অভিযুক্তদের মুচলেকা নিয়েই ছেড়ে দেয়া হয়েছে।

বালুবাহী ট্রাকচালকরা জানিয়েছেন, এ বছর গোদাগাড়ী পৌরসভার ট্রাকের লোড-আনলোডের টোল আদায়ের ইজারা পায় রাজশাহী নগরীর কাশিয়াডাঙা এলাকার মুখলেসুর রহমান মুকুলের প্রতিষ্ঠান মেসার্স মুন এন্টারপ্রাইজ। ইজারার নিয়ম অনুযায়ী ১ বৈশাখ (১৪ এপ্রিল) থেকে গোদাগাড়ী পৌরসভা এলাকায় ট্রাকের লোড-আনলোডের টোল আদায় শুরু করে।

তারা জোতগোসাই তৌমুরের মোড়ে বালুবাহী যানবাহনের টোল আদায় করে। সারেংপুর ঘাট থেকে বালুগুলো নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। এসময় ১২০ টাকা টোলের পরিবর্তে ট্রাকপ্রতি জোর করে ৫০০ টাকা করে টোল আদায় করছিলেন তারা। সাকিব নামে এক ট্রাকড্রাইভার জানান, সরকারি রেটের বাইরে জোর করে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের কারণেই ট্রাক ড্রাইভাররা বাধ্য হয়ে পুলিশের জরুরি সেবার নম্বর ৯৯৯ এ ফোন করে অভিযোগ দেন।

এ বিষয়ে জানতে বালুর ঘাটের টোল আদায় দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা মো. বাবু বলেন, ইজারাদার যেভাবে নির্দেশনা দিয়েছেন, কর্মচারীরা সেভাবেই টোল আদায় করে থাকেন। এ বিষয়ে ইজারাদার ভালো বলতে পারবেন।

গোদাগাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মতিন ভুক্তভোগী ট্রাকচালকের লিখিত অভিযোগ গ্রহণ না করার বিষয়ে বলেন, আমি সময় মতো অভিযোগটি পাইনি। মুচলেকা নিয়ে দু জনকে ছেড়ে দেয়ার পর হয়তো অভিযোগ নিয়ে এসেছিল। আর অতিরিক্ত টোল আদায় করা হবে না, এ রকম মুচলেকা আদায় করা হয়েছে।

সোনালী/জগদীশ রবিদাস

Hi-performance fast WordPress hosting by FireVPS