ঢাকা | নভেম্বর ২৭, ২০২৪ - ১:৫৯ পূর্বাহ্ন

গোদাগাড়ী-মুর্শিদাবাদ নৌ-রুট উদ্বোধন ১২ ফেব্রুয়ারি!

  • আপডেট: Thursday, February 8, 2024 - 9:10 pm

স্টাফ রিপোর্টার: ভারতের মায়া থেকে রাজশাহীর গোদাগাড়ী সুলতানগঞ্জ নৌ রুটের উদ্বোধন হতে যাচ্ছে। ইন্দো-বাংলাদেশ প্রটোকল রুট নং ৫ ও ৬ অর্থাৎ আরিচা-রাজশাহী-সুলতানগঞ্জ-মায়া-ধুলিয়ান অংশের সুলতানগঞ্জ অংশের উদ্বোধন হতে যাচ্ছে আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি। নৌ রুটের উদ্বোধন করার কথা রয়েছে নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি’র।

উদ্বোধনের পর সুলতানগঞ্জ নদী বন্দরের মাধ্যমে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদবাদ জেলার সাগরদিঘি থানার মায়া ঘাট বা নদী বন্দরের মধ্যে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য শুরু হবে। নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা, কাস্টমস এর কর্মকর্তা, গোদাগাড়ী উপজেলা প্রশাসন, উপজেলা চেয়ারম্যান, গোদাগাড়ী পৌরসভার মেয়র নৌ রুটের উদ্বোধনী পর্বকে সাফল্য মন্ডিত করার জন্য সর্বাত্নক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের পরিচালক রফিকুল ইসলাম সূত্রে জানা যায়, উদ্বোধনের দিন দুপুর ১২ টায় সুলতানগঞ্জ হাই স্কুলে জনসভা অনুষ্ঠিত হবে। উদ্বোধনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত থাকবেন আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলির সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, রাজশাহী -১ আসনের সাংসদ ওমর ফারুক চৌধুরী, ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার মি. প্রণয় ভার্মা, অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কমোডর আফির আহমেদ মোস্তফাসহ মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তারা ও কাস্টমস এর উর্ধ্বতন কর্মকতাবৃন্দ।

উদ্বোধনী দিন ভারত থেকে একটি ভেসেলে পাথর আমদানির সম্ভবনা রয়েছে। নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকতা সূত্রে জানা যায়, দু-এক দিনের মধ্যে একটি ফাঁকা ভেসেল বাংলাদেশ থেকে ভারতের মায়ায় পাঠানোর কথা। উদ্বোধনী দিন থেকে ৫টি ট্রিপ বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে পণ্য আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমে সম্পৃক্ত থাকবে। প্রাথমিক পর্যায়ে এই পথে ভারত থেকে সিমেন্ট তৈরির কাঁচামাল, পাথর, মার্বেল, খনিজ বালু ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের খাদ্য সামগ্রী বাংলাদেশে আসবে।

অন্যদিকে এই পথে বাংলাদেশ থেকে বস্ত্র, মাছ, পাট ও পাটজাত পণ্য ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের কৃষিপণ্য ভারতে যাবে। এসব পণ্য মূলত বিভিন্ন স্থলবন্দরের মাধ্যমে সড়ক ও রেলপথে বাংলাদেশে আমদানি করা হয়। সুলতানগঞ্জ থেকে মায়া নৌঘাটের নদীপথে দূরত্ব মাত্র ১৭ কিলোমিটার। সুলতানগঞ্জ নৌঘাটটি রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ মহাসড়ক থেকে মাত্র এক কিলোমিটার ভেতরে পদ্মা মহানন্দার মোহনায় অবস্থিত। সারা বছর সুলতানগঞ্জ পয়েন্টে পদ্মায় গভীর পানি থাকে।

অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গের ময়া নৌঘাটটি মুর্শিদাবাদ জেলার জঙ্গিপুর মহকুমা শহরের কাছে ভারতীয় ৩৪নং জাতীয় সড়কের সঙ্গে যুক্ত। ফলে সুলতানগঞ্জ-ময়া পথে নৌবাণিজ্য শুরু হলে পরিবহণ খরচ অনেক কমবে। স্থানীয়রা জানান, ১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের আগপর্যন্ত সুলতানগঞ্জ-ময়া ও গোদাগাড়ী ও ভারতের লালগোলা নৌঘাটের মধ্যে নৌপথে বিপুল বাণিজ্য চালু ছিল। বাংলাদেশ থেকে এই পথে ভারতে বিপুল পরিমাণ পাট রফতানি হতো। বর্তমানে রাজশাহীতে প্রচুর মাছ উৎপাদন হয়। এই মাছ এই নৌপথে ভারতে রফতানি করা সম্ভব হবে।

নৌ প্রটোকল রুটের সফলতার উপর নির্ভর করছে আগামীতে পণ্য আমদানি-রপ্তানী তথা নৌ রুট সম্প্রসারণের বিষয় টি। ইতোমধ্যেই অনেক ব্যবসায়ী এই নৌ পথ দিয়ে ভারতের সাথে ব্যবসা করার আগ্রহ দেখাচ্ছেন ফলে এই নৌ রুট এই অঞ্চলের সর্বশ্রেণীর পেশার মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের একটি উৎস হিসেবে কাজ করবে বলে বিশেষজ্ঞগণ মনে করছেন।

সোনালী/জেআর