বঙ্গবন্ধু হত্যার পেছনে মার্কিন দূতাবাস জড়িত ছিল: বাদশা
শ্রদ্ধ নিবেদন শেষে এমপি বাদশা
বিশেষ রিপোর্টার: ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যার নেপথ্যে তৎকালীন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশের দূতাবাস প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিল বলে মন্তব্য করেছেন ১৪ দলের শরিক ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ও রাজশাহী-২ আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা।
আজ মঙ্গলবার সকালে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে শহরের সিঅ্যান্ডবি মোড়ে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশকে ঘিরে আমেরিকার ষড়যন্ত্র এখনো চলছে। কাজেই মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে আরো ঐক্যবদ্ধ হয়ে সজাগ থাকতে হবে।
ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, “বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জড়িত ছিল; এই সত্য আগেই প্রমানিত হয়েছে। এখন দেখা যাচ্ছে, সেই আমেরিকাই আমাদের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বিষয়ে হস্তক্ষেপ করছে। আমাদের উচিত হবে, বাংলাদেশে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক আন্দোলন গড়ে তোলা।”
যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন কার্যক্রমের কড়া সমালোচনা করে ১৪ দলের কেন্দ্রীয় এই নেতা বলেন, “১৯৭৪ সালে স্বাধীন বাংলাদেশকে দুর্ভিক্ষের কবলে ফেলতে আমেরিকা বঙ্গোপসাগর থেকে তাদের নৌবহর ফিরিয়ে নিয়েছিল। এতে অনেক মানুষের মৃত্যু হয়েছিল, কিন্তু বাংলাদেশের মৃত্যু হয়নি! মানুষ লড়াই করে সেদিন বাংলাদেশকে সমুন্নত রেখেছিল। ওদের ষড়যন্ত্র সফল হয়নি।”
বঙ্গবন্ধুর খুনিদের দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে মন্তব্য চাইলে এমপি বাদশা সাংবাদিকদের বলেন, “পশ্চিমারাই বঙ্গবন্ধুর খুনিদের এখন পর্যন্ত পাহারা দিচ্ছে। এমনকি আমেরিকাতেও অনেকে আছে। কাজেই বর্তমানে আমাদের রাজনৈতিক অবস্থান শক্ত হওয়া উচিত। এতে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের দেশে যেমন ফেরানো যাবে; তাদের শাস্তিও নিশ্চিত করা যাবে।”
বৈদেশিক ষড়যন্ত্রের পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে স্বাধীনতার পক্ষের শক্তিকে আরো মজবুত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে রাকসুর সাবেক এই ভিপি বলেন, “আমরা যদি মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধ থাকি, মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তিকে প্রতিহত করার জন্য সংগ্রাম চালিয়ে যাই, তবে অবশ্যই জাতির পিতার আদর্শ ও চেতনাকে সমুন্নত রাখা যাবে। আর যদি জাতির পিতার আদর্শ না বুঝি, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ঐক্যবদ্ধ না হই; তাহলে বঙ্গবন্ধুকে হত্যাকারীদের ষড়যন্ত্র এদেশে চলতেই থাকবে।”
ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক এসময় বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পেছনের কুশিলব ও আয়োজনকারীদের সামনে আনতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত তদন্ত কমিশন দ্রুত গঠন ও কার্যকরী করার জোর দাবি জানান।
কর্মসূচিতে রাজশাহী মহানগর ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি লিয়াকত আলী লিকু, জেলার সভাপতি রফিকুল ইসলাম পিয়ারুল, মহানগরের সাধারণ সম্পাদক দেবাশিষ প্রামানিক দেবু, জেলা নারী মুক্তি সংসদের সভাপতি অধ্যাপক তসলিমা খাতুন, জেলা ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল হক তোতা, মহানগর সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সাদরুল ইসলাম, সিরাজুর রহমান খান, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আজাদ, আব্দুল মতিন, মনিরুদ্দীন পান্না, নাজমুল করিম অপু, যুবমত্রৈীর মহানগরের সভাপতি ও ৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মতিউর রহমান মতি, সাধারণ সম্পাদক শামীম ইমতিয়াজ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও মহানগর সদস্য সীতানাথ বণিক, শাহিনুর বেগম, আলি আলতাব তপন, আলমগীর হোসেন, মাসুম আক্তার অনিক, শাহীন শেখ, আদিবাসী পরিষদের নেতা গণেশ মাঝি, বিমল চন্দ্র রাজোয়ার, ছাত্রমৈত্রীর সভাপতি ওহিদুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক বিজয় সরকার প্রমুখ।
সোনালী/জগদীশ রবিদাস