ঢাকা | মে ১০, ২০২৪ - ৩:৪০ অপরাহ্ন

রাজশাহীতে সড়কে ব্যারিকেড দিয়ে ডাকাতি!

  • আপডেট: Saturday, February 10, 2024 - 9:01 pm

স্টাফ রিপোর্টার: নওহাটার বায়া-তানোর সড়কে ব্যারিকেড দিয়ে যানবাহনে ডাকাতি চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার দিবাগত ভোররাত ৪টার দিকে পবার বাগসারা-বাগধানীর মাঝামাঝি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ডাকাত দলের কবলে পড়া এক প্রত্যক্ষদর্শী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। এবং পুলিশের জরুরি সেবার ৯৯৯ নম্বরে কল করার কথা জানিয়েছেন।

নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার নাকইল গ্রামের ব্যবসায়ী এনামুল হক ভোররাতে বায়া-তানোর সড়ক হয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। তিনি জানান, তিনি একটি নতুন প্রাইভেট কার কিনে ঢাকা থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। পেছনের আরেকটি মাইক্রোবাসে তাঁর কয়েকজন নিকটাত্মীয় ছিলেন। তিনি প্রাইভেট কার নিয়ে সামনে ছিলেন, পেছনে মাইক্রোবাসটি ছিল একটু দূরে।

তানোর উপজেলার সীমানার মধ্যে ঢোকার একটু আগে এনামুল হক দেখেন, সামনে কয়েকটি মাছবাহী মিনি ট্রাক, পিকআপ ও সিএনজি অটোরিকশা দাঁড়িয়ে আছে। তিনি ভেবেছিলেন সামনে যানজট লেগেছে। তাই ডান পাশ দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা গাড়িগুলো ওভারটেক করার চেষ্টা করেন।

এ সময় ডাকাত দলের কয়েকজন সদস্য দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাঁর গাড়ি ঘিরে ধরে। তারা গাড়ির গেট খোলার জন্য বলতে থাকে। কিন্তু এনামুল হক গেট না খুলে গাড়িকে পেছনের দিকে নিতে থাকেন।

এরই মধ্যে পেছনের মাইক্রোবাসটি চলে আসে। একইভাবে এনামুল হকের প্রাইভেট কারের গেট খোলার জন্যও বলেন ডাকাত দলের সদস্যরা। তবে এই গাড়ির চালক তুহিন আলীও গেট না খুলে গাড়ি পেছনে ঘোরাতে থাকেন। তখন ডাকাত দলের সদস্যরা গাড়িতে হাঁসুয়া ও রামদার আঘাত করতে শুরু করেন। প্রাইভেট কারের চালক তুহিনের গাড়ির গ্লাস ভেঙে দেয়া হয়।

গাড়ি নিয়ে পালানোর চেষ্টা করায় ডাকাত দলের এক সদস্য তুহিনকে লক্ষ্য করে হাঁসুয়ার আঘাত করেন। এতে তুহিনের ব্লেজার কেটে যায়। তিনি একটুর জন্য রক্ষা পান। এভাবে তাঁরা পালিয়ে আসেন। ডাকাত দলের কবলে পড়ে এনামুলের নতুন প্রাইভেট কারও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এনামুল হক জানান, ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে তাঁরা আবার বায়া মোড়ে চলে আসেন। এর প্রায় ২০ মিনিট পর ওই রাস্তা দিয়ে আরও গাড়ি যেতে শুরু করলে তারাও পেছনে পেছনে যান। গিয়ে দেখেন, ডাকাত দল যেখানে আক্রমণ করেছিল, সেখানে সড়কের ওপর থেকে একটি কাটা গাছ সরানো হচ্ছে। ওই সময় ঘটনাস্থলে ডাকাত দলের কোনো সদস্যকে দেখা যায়নি। এনামুল দাবি করেন, প্রথমবার ঘটনাস্থলে তিনি ১৫ থেকে ২০ জন ডাকাত দেখেছেন।

সবার হাতেই দেশীয় অস্ত্র ছিল। এনামুল হকের গাড়ি থেকে ঘটনার সময়ের একটি ভিডিও করা হয়েছে। এতে দেখা গেছে, এনামুলের গাড়ি ঘটনাস্থলে গেলেই দেশীয় অস্ত্র হাতে দুজন গাড়ির দিকে টর্চের লাইট মারে। গাড়ি থামলে তারা সামনে এসে দাঁড়ায়। এনামুল যখন গাড়ি পেছনে নিচ্ছিলেন, তখনো তাঁরা দুজন পেছন পেছন ধাওয়া করছিল।

এনামুল হকের আত্মীয় বায়া এলাকার আবদুল গনি পুলিশের জরুরি সেবার ৯৯৯ নম্বরে কল করেছিলেন বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমার আত্মীয়রা ডাকাত দলের কবলে পড়ে ফোন করেন। আমাকে তাঁরা বলেন ডাকাত দলের কবলে পড়েছেন। এখানে হতাহতের ঘটনাও ঘটতে পারে। এ খবর শুনেই তিনি পুলিশের ৯৯৯ নম্বরে কল করে ঘটনা জানান।

এ ব্যাপারে পবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সোহরাওয়ার্দী বলেন, শুক্রবার ভোর চারটার দিকে তারা ওই রাস্তায় ব্যারিকেট দিয়েছিল। খবর পেয়ে কয়েক মিনিটের মধ্যেই সেখানে পুলিশ পৌছে যায়। তার আগেই তারা পালিয়ে যায়।

কারো কোন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। ওই রাস্তায় নিয়মিত পুলিশ টহল থাকে। গত রাতে আমরা সারা রাত ডিউটি করেছি। আমার সঙ্গে এই জোনের উপকমিশনার (ডিসি) স্যারও ছিলেন। ওই রাস্তায় বিশেষ টহলের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, ওই স্থানে কয়েক বছর আগে একাধিকবার রাস্তায় ব্যারিকেট দিয়ে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এবং হত্যার ঘটনাও ঘটেছে বলে এলাকাবাসি জানান।

সোনালী/জেআর