ঢাকা | মে ৫, ২০২৪ - ১২:০৯ পূর্বাহ্ন

খুলে গেলো ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের দুই ফ্লাইওভার

  • আপডেট: Monday, April 25, 2022 - 9:05 pm

 

অনলাইন ডেস্ক: কাজ শেষ না হলেও ঈদে ঘরমুখো মানুষের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে সোমবার দুপুরে খুলে দেয়া হলো ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের উপর নবনির্মিত সফিপুর ও নাওজোর ফ্লাইওভার।

কোনো আনুষ্ঠানিকতা না করেই সোমবার দুপুর দুইটার দিকে এক যোগে গাজীপুরের নাওজোড় ও সফিপুর বাজারের উড়ালসড়ক দুইটি যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়েছে। নতুন দুটি ফ্লাইওভার যান চলাচরের জন্য চালু করায় ঈদযাত্রায় উত্তরবঙ্গগামী যাত্রীদের জন্য খুবই স্বস্তিদায়ক হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

গাজীপুর-নবীনগর রুটে চলাচলকারী নিরাপদ পরিবহনের চালক স্বপন জানান, ফ্লাইওভার খুলে দেয়ায় অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার ঈদের ঘরমুখো মানুষের যাতায়াত অনেকটা স্বস্তিদায়ক হবে। ঢাকার সাথে দেশের উত্তরাঞ্চলের ২৩টি জেলার যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ ও প্রধান সড়ক ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক। প্রতি ঈদে এই সড়ক পথে ভোগান্তি পোহাতে হয় যাত্রী ও চালকদের। যানজটে পড়ে থাকতে হয় ঘণ্টার পর ঘণ্টা। এবার এ ফ্লাইওভার ব্রীজ খুলে দেয়ায় যানজট অনেকাংশে লাঘব হবে।

ফ্লাইওভারের প্রকল্পের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান স্পেক্ট্রা ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের উপ-ব্যবস্থাপক সাখাওয়াৎ হোসেন জানান, ঈদে ঘরেফেরা মানুষের যেন ভোগান্তি না হয় এজন্য যানবাহন চলাচলের জন্য ফ্লাইওভার খুলে দেয়া হয়েছে।

সাসেক সড়ক সংযোগ প্রকল্পের জয়দেবপুর থেকে এলেঙ্গা পর্যন্ত চারটি প্যাকেজে কাজ হচ্ছে। জয়দেবপুরের ভোগড়া মোড় থেকে কালিয়াকৈরের হাইটেক পার্ক পর্যন্ত ১নং প্যাকেজের অধীন নাওজোর ও সফিপুর ফ্লাইওভারের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে।

সাউথ এশিয়া সাব রিজিওনাল ইকোনমিক কো-অপারেশন (সাসেক) ১নং প্যাকেজের প্রজেক্ট ম্যানেজার, সড়ক ও জনপথের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহানা ফেরদৌস বলেন, এবার গত দুই বছরের তুলনায় বেশি মানুষ ঢাকার বাইরে ঈদ করতে যাবে। তাই প্রত্যেকটা মহাসড়ক যানজট মুক্ত রাখতে নির্দেশনা দিয়েছিলেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী। সেই মোতাবেক মন্ত্রণালয়ের সচিব, প্রধান প্রকৌশলী ও সাসেক’র প্রকল্প পরিচালকসহ সংশ্লিষ্টরা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে যানজট কমিয়ে আনতে পরিকল্পনা করেন। সেই প্রেক্ষিতে আমাদের সাসেক সড়ক সংযোগ প্রকল্প শেষ পর্যায়ে রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, মহাসড়কে ১নং প্যাকেজের অধীনে সফিপুর ও নাওজোর এলাকায় দুটি ফ্লাইওভারের নির্মাণ কাজ চলমান ছিল। ২০২০সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ৫৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ৮১০ মিটার দৈর্ঘ্য নাওজোর ফ্লাইওভার ও ২০১৯ সালের জুন মাসে ১০৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ১২৬২ মিটার দৈর্ঘ্য সফিপুর ফ্লাইওভারের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ফ্লাইওভার দুটি ৯৮ ভাগ নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। রেলিং এর কিছু কাজ বাকী রয়েছে।

তিনি বলেন, ঈদে ঘরমুখো মানুষের ভোগান্তি কমানোর জন্য ওই ফ্লাইওভার যানচলাচলের জন্য সোমবার দুপুর থেকে খুলে দেয়া হয়েছে। দুইটি উড়াল সড়কের সংযোগ সড়ক নির্মাণ হলেও সেখানে কার্পেটিং করা হয়নি। লাইটিংসহ বেশ কিছু কাজ এখনও বাকি আছে। আর কয়েকদিন পর ঈদযাত্রা শুরু হবে। ওই সময়ে যাতে যানজট না হয় সেই চিন্তা করে সোমবার দুপুর থেকে যানবাহন চলাচলের জন্য উড়াল সড়ক দুটি উন্মুক্ত করে দেয়া হয়েছে।

শাহানা ফেরদৌস বলেন, দুটি ফ্লাইওভারের ৯৮ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে, তাই ঈদের পর ফ্লাইওভারটি আর বন্ধ করার প্রয়োজন হবে না। যতটুকু কাজ বাকি আছে স্বল্প সময়ের জন্য এক লেন বন্ধ করেই আমরা তা সম্পন্ন করতে পারবো।

গাজীপুর মহানগরের ভোগড়া স্টার লাইট সোয়েটার কারখানার শ্রমিক আবুল কাসেম জানান, আমার বাড়ি সিরাজগঞ্জ। গত দুই বছর করোনার প্রভাবের কারণে ঈদে বাড়ি যেতে পারিনি। এবার আমাদের মতো বহু কর্মজীবী মানুষ পরিবার পরিজন নিয়ে ঈদ উদযাপন করতে ছুটে যাবে গ্রামের বাড়ি। ঈদের ছুটি শুরু হলেই মানুষ সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েন সড়কপথে। এবারও সেই আশঙ্কাতেই আছেন ঘরমুখো মানুষ।

অধিকাংশ এলাকাতে সড়কের অবস্থা আগের চেয়ে ভালো হলেও যানবাহনের চাপের কারণে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। তবে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে নির্মিত এসব ফ্লাইওভার ব্রীজ নির্মাণ হওয়ায় যাত্রীদের পথে ভোগান্তি অনেকটা লাঘব হবে।

সালনা কোনাবাড়ি হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ হোসেন বলেন, ঢাকা টাঙ্গাইল মহাসড়কের গুরুত্বপূর্ণ ফ্লাইওভার দুটি খুলে দেয়ায় ঈ‌দে উত্তরবঙ্গগামী মানু‌ষের যানজ‌টের ভোগান্তি অনেকটাই কমে এসে যাত্রা নির্বিঘ্ন হবে।