ঢাকা | জানুয়ারী ১, ২০২৬ - ৩:৩৩ পূর্বাহ্ন

বাগমারার ভ্যানচালক হত্যা মামলায় আটজন গ্রেপ্তার

  • আপডেট: Wednesday, December 31, 2025 - 11:10 pm

বাগমারা প্রতিনিধি: কারা হেফাজতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বাগমারার ভ্যানচালক ওমর ফারুকের মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের হওয়া হত্যা মামলায় ভবানীগঞ্জ সিএনজি মালিক সমিতির সভাপতি রেজাউল করিম ও সম্পাদক আব্দুল মতিনসহ এ পর্যন্ত মোট ৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গ্রেপ্তার হওয়া অন্য আসামিরা হলেন- ওই সমিতির সদস্য আব্দুল হান্নান, রফিকুল ইসলাম, আসাদুল ইসলাম ও হাবিবুর রহমান। মঙ্গলবার রাতে নাটোর থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে বাগমারা থানার ওসি সাইদুল আলম বুধবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে রহিদুল ইসলাম ও জুয়েল রানাকে আটক করা হয়। তবে ভ্যানচালক ওমর ফারুকের মৃত্যুর বিষয়ে ময়না তদন্তের রিপোর্টে তাকে শারীরিক নির্যাতনের কোন প্রমাণ মিলেনি। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিফ মেডিসিন বিভাগের লেকচারার ড. শারমিন সোবহান কাবেরী সাংবাদিকদের এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, ওমর ফারুক একজন ডায়াবেটিসের রোগী ছিল। তার কিডনি ও হার্ডের সমস্যাও ছিল। তার মৃত্যুর বিষয়ে ময়না তদন্ত আমি নিজেই করেছি। তাতে সুরতাহাল রিপোর্টে তাকে শারীরিক নির্যাতনের কোন প্রমাণ বা আলামত পাওয়া যায়নি। তবে তার শরীরে হালকা ছোলার মত গোল গোল কিছু দাগ ছিল। তবে সেই দাগগুলো অনেক আগের পুরাতন। মূলত কিডনি ও হার্ডের সমস্যাজনিত কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে।

এদিকে শারীরিক নির্যাতনে ভ্যানচালক ওমর ফারুককের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করে তার বাবা মোসলেম সরদার বাদী হয়ে ভবানীগঞ্জ সিএনজি মালিক সমিতির সভাপতি রেজাউল করিম ও সম্পাদক আব্দুল মতিনসহ সমিতির ১২ জন সদস্যের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও ১০-১২ জনের বিরুদ্ধে গত ২৫ ডিসেম্বর বাগমারা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

মামলার আরজিতে বলা হয়েছে, ওমর ফারুককে গত ১৭ ডিসেম্বর ভবানীগঞ্জ সিএনজি স্ট্যান্ডে আটকে রেখে মারধর করা হয়। এছাড়া তার দুই পায়ে ৮-১০ টি লোহার পেরেক ও পায়ু পথে মরিচের গুড়া ঢুকিয়ে দেয়া হয়। এরপর তাকে গাঁজা ব্যবসায়ী হিসাবে উপজেলা সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) অবহিত করা হলে ভাম্যমাণ আদালত কর্তৃক তাকে সাত দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়।

রাজশাহীর কেন্দ্রীয় কারাগারে সাজা ভোগের সময় সে অসুস্থ হলে কারা হেফাজতে তাকে ২০ ডিসেম্বর রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা যান।

এদিকে ওমর ফারুককে কারাদণ্ড দেয়ার বিষয়ে বাগমারা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাইফুল ইসলাম ভূজ্ঞা বলেছেন, ভ্রাম্যমাণ আদালতে তার কাছে থেকে গাঁজা পাওয়া গেছে এবং সে নিজেই মাদক সেবন ও ব্যবসার কথা স্বীকার করেছে। এ কারণে তাকে সুস্থ অবস্থায় সাত দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার সময় তাকে মারধর করা কিংবা তার দুই পায়ে লোহার পেরেক ও পায়ু পথে মরিচের গুড়া ঢুকিয়ে দেয়ার মত কোন আলামত দেখা যায়নি।