ঢাকা | জুন ২০, ২০২৫ - ১২:৩২ অপরাহ্ন

শিরোনাম

রাজশাহীতে অনলাইনে আম ব্যবসায় বড় ধরনের বিপর্যয়

  • আপডেট: Thursday, June 19, 2025 - 11:02 pm

বাঘা প্রতিনিধি: বর্তমানে লেখাপড়ার পাশাপাশি রাজশাহী জেলার অনেক সাধারণ ছাত্র অনলাইনে আম বিক্রি করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন।

এই জেলার বিখ্যাত মৌসুমি ফল আমের প্রতি দেশজুড়ে চাহিদা থাকায় শিক্ষার্থীরা এটিকে সম্ভাবনাময় একটি খাত হিসেবে বিবেচনা করে ফেসবুক পেজ, ই-কমার্স সাইট ও হোম ডেলিভারি সার্ভিসের মাধ্যমে কৃষকের কাছ থেকে আম সংগ্রহ করে সরাসরি ক্রেতাদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছেন।

এতে ক্রেতারা যেমন নিরাপদ ও সরাসরি কৃষকের আম পাচ্ছেন, তেমনি ছাত্ররাও নিজের খরচ চালাতে পারছেন। তবে এ বছর অনলাইন আম ব্যবসায় বড় ধরনের বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। মূলত কুরিয়ার সার্ভিসের অব্যবস্থাপনার কারণে আম সময়মতো পৌঁছাচ্ছে না, ফলে হাজার হাজার টন আম নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

বিশেষ করে স্টেডফাস্ট কুরিয়ার সার্ভিস এর প্রতি অভিযোগ উঠেছে সবচেয়ে বেশি। অনলাইন উদ্যোক্তারা বলছেন, ক্যাশ অন ডেলিভারি ভিত্তিতে আম পাঠানোর পরও ৪-৫ দিন দেরিতে পণ্য পৌঁছানোয় ক্রেতারা পচা আম ফেরত দিচ্ছেন। এতে বিক্রেতারা অর্থনৈতিকভাবে বড় ক্ষতির মুখে পড়ছেন এবং ভেঙে পড়ছেন মানসিকভাবেও।

রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আমদপুর গ্রামের ছাত্র উদ্যোক্তা সাগর আহমেদ (২৬) বলেন, গত ১৪ জুন আমি দেশের বিভিন্ন স্থানে ৫০ মন আম পাঠাই, যার বাজার মূল্য প্রায় ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। ১৮ জুন পর্যন্ত মাত্র ৩২ মন আম ডেলিভারি হয়েছে। অনেক জায়গায় আম পৌঁছালেও ক্রেতার হাতে পায়নি।

যারা পেয়েছেন, তারাও বলছেন আম খাওয়ার অযোগ্য। একই উপজেলার নূর ইসলাম (২১) বলেন, আমার ৩ তারিখের পাঠানো আম ৭ তারিখে শাখায় পৌঁছেছে। আমগুলো পচে গেছে, ক্রেতারা নিচ্ছেন না। অথচ ডেলিভারি চার্জ আমাকেই আগেই পরিশোধ করতে হয়েছে। এখন আমের দামও গচ্চা দিতে হবে।

শিমুল হাসান (২৩) নামের আরেক ছাত্র উদ্যোক্তা জানান, ১৩ জুন পাঠানো আম ১৭ ও ১৮ জুনে পৌঁছেছে। এত দিন লাগায় সব আম নষ্ট হয়ে গেছে। ক্রেতারা নিচ্ছেন না, আমরা বড় ধরনের লোকসানে পড়েছি। ছাত্র হিসেবে এই ক্ষতি সামলানো অসম্ভব। ১০০% ক্ষতিপূরণ চাই।

এই পরিস্থিতিতে বাঘা স্টেডফাস্ট কুরিয়ার ব্রাঞ্চের ম্যানেজার আব্দুল হানান জনি বলেন, ঈদের কারণে আমাদের অনেক কর্মী ছুটিতে ছিলেন, গাড়িও সঙ্কটে ছিল। রাজশাহী থেকেও সময়মতো গাড়ি ছাড়লেও রাস্তার জ্যামের কারণে কিছু বিলম্ব হয়েছে।

অভিযোগ অনুযায়ী ক্ষতিগ্রস্তদের ৪০% থেকে ৫০% ক্ষতিপূরণ দেয়ার বিষয়ে আমরা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। তবে উদ্যোক্তারা বলছেন, এই ক্ষতিপূরণ মোটেও যথেষ্ট নয়।

তারা দাবি করছেন, যদি এভাবে চলতে থাকে তাহলে তরুণ উদ্যোক্তারা অনলাইন আম ব্যবসা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবেন, পাইকারদের দৌরাত্ম্য বাড়বে এবং আম চাষিরাও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। এর প্রভাব পড়বে রাজশাহী জেলার সামগ্রিক আম শিল্পে।

Hi-performance fast WordPress hosting by FireVPS