খরায় ঝরছে আমের গুটি
স্টাফ রিপোর্টার: চৈত্রের খরতাপে পুড়ছে বরেন্দ্র অঞ্চল। বৃষ্টি নেই লম্বা সময়। এমন আবহাওয়ায় গাছ থেকে ঝরছে আমের গুটি। বৃষ্টিপাত না হওয়ায় বাড়ছে না আমের গুটির আকারও। এতে দুশ্চিন্তায় ভুগছেন রাজশাহীর আম চাষিরা। তারা অপেক্ষা করছেন বৃষ্টির।
রাজশাহী অঞ্চলের কয়েকটি আম বাগান ঘুরে দেখা গেছে, বাগানজুড়ে গাছে মুকুল এলেও চাষিদের কপালে চিন্তার ভাঁজ। টানা বৃষ্টিহীনতায় ফলন নিয়ে চিন্তিত সকলেই। তীব্র খরায় সেচ দিয়েও খুব একটা ফল পাচ্ছে না বাগান মালিকরা। উৎপাদন খরচ বাড়লেও ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। চরম উৎকণ্ঠায় ভুগছেন আম চাষিরা।
আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, বৃষ্টিহীনতার পাশাপাশি তাপমাত্রার সঙ্গে দিয়ে গরমও বেড়েছে। গত বুধবার রাজশাহীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছিল ৩৮ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বৃষ্টি না হলে তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে বলেও আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
কৃষি সম্প্রসারণ দপ্তর জানায়, গত মৌসুমে রাজশাহী জেলায় আম উৎপাদন হয়েছিল ১৭ হাজার ১২৮ টন। এ বছর জেলায় আম চাষ হচ্ছে ১৮ হাজার ৫১৫ হেক্টর জমিতে। গত বছর যে পরিমাণ ছিল ১৭ হাজার ৯৪৩ হেক্টর। এছাড়া রাজশাহী কৃষি অঞ্চলে (রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নাটোর ও নওগাঁ জেলা) গত মৌসুমে আম উৎপাদন হয়েছিল ১০ লাখ ৩০ হাজার ৬১৪ টন। এ বছর আম চাষ হয়েছে ৮৪ হাজার ৩৮৮ হেক্টর জমিতে।
বাঘার আম চাষি শাহিনুল ইসলাম বলেন, গত বছরের চেয়ে এবার মুকুলের সংখ্যা কম হলেও প্রায় সবগুলোতেই গুটি বাঁধছে। তবে বৃষ্টি না হওয়ার কারণে গুটি ঝরে যাচ্ছে। সেচ দিয়ে ঝরে পড়া রোধ করার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এতে তিনি উদ্বিগ্ন।
রাজশাহী ফল গবেষণা কেন্দ্রের মূখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আলীম উদ্দীন জানান, মূলত কয়েকটি কারণে আমের গুটি ঝড়ে। এর মধ্যে প্রধান গাছের পুষ্টির অভাব, পোকার আক্রমণ, রোগের আক্রমণ ও ধারণ ক্ষমতার বেশি আমের গুটি আসা। তবে এসময় গরম ও খরার কারণে গুটি ঝরা স্বাভাবিক।
তিনি আরও বলেন, প্রতিবছর যে পরিমাণ আমের গুটি আসে, তার সব থাকলে গাছ ভেঙে পড়বে। গুটির এক তৃতীয়াংশ থাকলেও গাছে জায়গা দেওয়া যাবে না। গুটি ঝরার ক্ষেত্রে খরার বড় প্রভাব রয়েছে। সে জন্য প্রতি ১০-১৫ দিন পর পর সেচ দিতে হবে। এসব বৈরি আবহাওয়া মোকাবেলা করেই আম টিকে থাকে। এতে দুশ্চিন্তা নেই।