কাপ্তাই হ্রদের বাঁধ খুললে প্লাবিত হতে পারে চট্টগ্রামের ৪ উপজেলা
অনলাইন ডেস্ক: বর্ষা আসলেই চট্টগ্রামের মানুষের মনে উঁকি দেয় কখন খুলবে কাপ্তাই হ্রদের বাঁধ। কারণ এ বাঁধের পানি ছাড়লেই ডুবে যায় চট্টগ্রামের বিস্তীর্ণ জনপদ।
বাঁধের ফটক খুলে দিলে প্লাবিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে চট্টগ্রামের ৪ উপজেলা। এতে পানি বন্দি হতে পারে প্রায় সাড়ে ১৫ লাখ মানুষ।
কাপ্তাই হ্রদের পানি বেড়ে যাওয়ায় শনিবার (২৪ আগস্ট) কর্ণফুলী জল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ১৬টি স্পিলওয়ে এর গেট খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জল বিদ্যুৎকেন্দ্র কর্তৃপক্ষ। প্রতিটি গেইট ৬ ইঞ্চি করে ১৬টি গেট দিয়ে ছাড়া হবে পানি।
এতে পানি নিষ্কাশন করা হবে প্রতি সেকেন্ডে ৯ হাজার কিউসেক। এছাড়া বৃষ্টিতে পানি আরও বাড়লে স্পিলওয়ের গেইট খোলার পরিমাণ আরও বাড়াতে পারে বলে জানায় প্রতিষ্ঠানটি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, কাপ্তাই হ্রদের পানি ছাড়লে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া, রাউজান, বোয়ালখালী, হাটহাজারী উপজেলার সড়ক, ঘরবাড়ি, ফসলি জমি ও পুকুর ডুবে ব্যাপক ক্ষতি হতে পারে। কারণ প্রতিদিনই দুই বার করে জোয়ার ভাটা হয় সাগরে।
জোয়ারের সময় বঙ্গোপাসাগরের পানি উজানে উঠলে এবং বৃষ্টির পানি ও হ্রদের পানি এক সঙ্গে কর্ণফুলি ও হালদা হয়ে সমুদ্রে নামতে না পারলে পানি উপচে প্লাবিত হতে পারে আশে পাশের এলাকা।
এদিকে, কয়েকদিনের ভারি বৃষ্টিতে ইতোমধ্যে রাউজান ও ফটিকছড়ির বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হওয়ায় হ্রদের পানি প্রবেশ করলে পানির উচ্চতা আরও বাড়তে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। শুধু তাই নয়, নতুন করে প্লাবিত হতে পারে বোয়ালখালী ও হাটহাজারী উপজেলা। নতুন করে প্লাবিত হলে চট্টগ্রাম জেলার চার উপজেলা প্রায় ২০ হাজার হেক্টরেরও বেশি আমন আবাদ প্লাবিত হতে পারে।
নদী গবেষক ড. শফিকুল ইসলাম বলেন, গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে অনেক জায়গায় বেড়ি বাঁধ ভেঙে হালদার পানি হাটহাজারী, রাউজানসহ বিভিন্ন এলাকায় পানি প্রবেশ করেছে। এখন নতুন করে কাপ্তাই বাঁধ ছাড়লে নতুন করে আরও অনেক এলাকা প্লাবিত হতে পারে। এতে মানুষ পানি বন্দি হওয়ার পাশাপাশি মাছের ঘের, ফসলী জমিও ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
তবে রাত দশটায় পানি ছাড়ার সম্ভাব্য সময় থাকলেও হ্রদের নির্ধারিত পরিমাণ পানি পূর্ণ হওয়া সাপেক্ষে গেট খোলা হবে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ। কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক ড. এম এম এ আব্দুজ্জাহের জানান, পানি ছাড়ার ক্ষেত্রে সাধারণত ভাটার সময় ছাড়তে চেষ্টা করি। এতে ভাটির টানে পানি যাতে সহজে নেমে যেতে পারে। তবে যখনই পানি ধারণ ক্ষমতার বেশি হয়ে যায় তখন পানি ছাড়তে হয়। আমরা এরই মধ্যে সতর্কতা জারি করেছি।