নাটোরসহ তিন জেলায় ট্রেনে কাটা পড়ে তিনজনের মৃত্যু
সোনালী ডেস্ক: নাটোরের লালপুর, গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ ও যশোরের ঝিকরগাছায় ট্রেনে কাটা পড়ে স্টেশনমাস্টারসহ তিনজনের মৃত্যু হয়েছে।
লালপুর (নাটোর) প্রতিনিধি জানান, নাটোরের লালপুরে ট্রেনে কাটা পড়ে ফিরোজা বেগম (৬০) নামের এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে। গত সোমবার রাতে উপজেলার আজিমনগর স্টেশন সংলগ্ন গোপালপুর পৌর কেন্দ্রীয় গোরস্থানের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে। মঙ্গলবার সকালে ঘটনাস্থল থেকে তার লাশ উদ্ধার করে নিয়ে যান পরিবারের সদস্যরা।
ফিরোজা বেগম উপজেলার গোপালপুর পৌরসভার ভুঁইয়াপাড়া গ্রামের ঝড়ু প্রামাণিকের মেয়ে। নিহতের ভাতিজা গোপালপুর বাজার কমিটির সভাপতি ও সাবেক জেলা পরিষদ সদস্য বদিউর রহমান বদর জানান, গত সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে গোপালপুর পৌর কেন্দ্রীয় গোরস্থানের সামনে তার ফুফু ফিরোজা বেগম রেললাইন পারাপারের সময় টুঙ্গিপাড়া এক্সপ্রেস ট্রেনে কাটা পড়ে মারা যান।
মঙ্গলবার সকালে স্থানীয়রা খবর দিলে পরিবারের লোকজন তার লাশ উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে যান। ঈশ্বরদী রেলওয়ে পুলিশ (জিআরপি) থানার ওসি হারুনুজ্জামান রোমেল বলেন, নিহতের খবর পেয়ে রেলওয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এফএনএস জানায়,: গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে ট্রেনে ওঠার সময় পা পিছলে পড়ে গিয়ে হাত-পা হারিয়ে মারা গেছেন স্টেশন মাস্টার আব্দুস সোবহান আকন্দ (৬৩)। মঙ্গলবার দুপুর ২টার দিকে বগুড়া শহিদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। এর আগে গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে উপজেলার মহিমাগঞ্জ রেল স্টেশনে এ দুর্ঘটনা ঘটে। স্টেশন মাস্টার আবদুস সোবহানের গ্রামের বাড়ি উপজেলার রাখালবুরুজ ইউনিয়নে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল ১১টার দিকে ডিউটি শেষে সান্তাহার থেকে বুড়িমারীগামী করতোয়া এক্সপ্রেস ট্রেনে গাইবান্ধা শহরস্থ বাড়িতে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন স্টেশন মাস্টার আবদুস সোবহান। এ সময় ট্রেনে উঠতে গিয়ে পা পিছলে ট্রেনের নিচে পড়ে যান তিনি। এতে তার ডান হাত ও পা কাটা পড়ে।
স্থানীয়রা দ্রুত তাকে উদ্ধার করে বগুড়া শহিদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুপুর ২টার দিকে মারা যান তিনি। বোনারপাড়া রেলওয়ে থানার ওসি জাহাঙ্গীর আলম চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে যশোরের ঝিকরগাছায় ট্রেনের ধাক্কায় গদখালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহাজান আলী (৬০) নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার সকাল ৭টার দিকে সৈয়দপাড়া নামক গ্রামে রেললাইনে এ দুর্ঘটনা ঘটে। তিনি গদখালী ইউনিয়নের বেনেয়ালী বাজারে বসবাস করতেন।
জানা যায়, প্রতিদিনের মতো ভোরে ঘুম থেকে উঠে হাঁটতে বের হয়েছিলেন শাহাজান আলী। সকালে তিনি সৈয়দপাড়া রেললাইনের ওপর দিয়ে হেঁটে বাজারের দিকে যাচ্ছিলেন। এ সময় পেছন দিক থেকে আসা একটি ট্রেনের ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। পরে আশপাশের লোকজন রেললাইনের পাশে চেয়ারম্যানকে পড়ে থাকতে দেখে পুলিশ ও স্থানীয়দের খবর দেয়। নিহত ইউপি চেয়ারম্যানের আত্মীয় শাহীন হোসেন জানান, তিনি অসুস্থ ছিলেন। চোখে কম দেখতেন। সকালে হাঁটতে বেরিয়ে ট্রেনের ধাক্কায় তার মৃত্যু হয়।
এদিকে ঘটনাস্থলে উপস্থিত রেলওয়ে পুলিশের এসআই আবদুর রশিদ জানান, সুরতহাল চলছে। তার শরীরে ক্ষত রয়েছে। পরিবার ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ চেয়েছে। এজন্য তাদের বলা হয়েছে ম্যাজিস্ট্রেটের অনুমতি নিতে। ঝিকরগাছা থানার ওসি সুমন ভক্ত জানান, সকালে ট্রেনের ধাক্কায় চেয়ারম্যান শাহাজান আলীর মৃত্যু হয়েছে। বিষয়টি জিআরপি পুলিশ দেখছে। ঘটনাস্থলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
সোনালী/জেআর