২৪ ঘন্টায় রাজশাহীতে রেকর্ড বৃষ্টিপাত, নিম্নাঞ্চলে জনদুর্ভোগ
স্টাফ রিপোর্টার: মুষলধারে বৃষ্টিতে নগর জুড়ে সৃষ্টি হয়েছে জলমগ্নতা। এতে নগরীর অধিকাংশ সড়কগুলোতে পানি জমে সৃষ্টি হয় জনদুর্ভোগ। গত ২৪ ঘন্টায় রাজশাহীতে বৃষ্টিপাত হয়েছে ২৫০ মিলিমিটার- যা এবছরের সর্বোচ্চ রেকর্ড।
গতকাল রাত ১০টা থেকে শুরু হয়েছে বৃষ্টি। আরো ২ থেকে ৩ দিন এমন আবহাওয়া অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছেন রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষণ কর্মকর্তা রহিদুল ইসলাম। গতকালের প্রবলবর্ষণে শহরের অধিকাংশ সড়কে পানি জমে যায়।
নগরীর উপশহর গোরস্থান মোড় এবং সপুরা গোরস্থান হতে হাউজিং স্টেট রোডে হাটুর ওপরে পানি। কাদিরগঞ্জ গ্রেটার রোড মসজিদ সংলগ্ন সড়ক, সপুরা পলেটেকনিক সড়ক, লক্ষ্মীপুর মোড় হতে মেডিকেল কলেজ সড়কগুলো পানিতে তলিয়ে যায়। আর বর্ণালী-হেতেম খা সড়কেরতো কথায় নাই। সামান্য বৃষ্টিতে সড়কটিতে পানি জমে যাওয়া স্বভাবিক নিয়মে পরিণত হয়েছে।
অন্য সড়কে হাঁটু পানির নিচে থাকলেও সেখানে কমরের ওপরে পানি জমে। এ সব সড়কে পানি জমে এলাকাবাসীর দুর্ভোগ চরমে উঠেছে। এতে দ্বিগুণ, তিনগুণ রিকশা ভাড়া গুণতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। আবার রিকশা না পাওয়ায় চরম বিপাকে পড়তে হয় পথচারিকে ।
প্রবল বর্ষণে বড় ড্রেনগুলোর ওপর দিয়ে প্রচন্ড বেগে নিচের দিকে পানি প্রবাহের কারণে পানির চাপে ড্রেনের উভয় ধার উপচে আশপাশের নিচু এলাকায় পানি প্রবেশ করে সেখানে জলমগ্নতার সৃষ্টি হচ্ছে বলে ভুক্তভোগীরা জানান। এরজন্য নগরীর অপরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থাকে দায়ি করছেন বিশেষজ্ঞগণ। এছাড়া আগের পুরাতন বড় ড্রেন পরিস্কার না করাকে দায়ি করছেন সর্বসাধারণ।
উপশহর সড়ক, শিরোইল মোড়, তেরখাদিয়া কাঁচাবাজার হতে ডাবতলা মোড়, মহিলা কমপালেক্স-এর সম্মুখের সড়ক ,শহিদ এএইচএম কামারুজ্জামান স্টেডিয়াম-এর সামনের সড়ক, মহিষবাথান, হড়গ্রাম, গুঁড়িপাড়ার সামনের সড়ক সহ নগরীর অধিকাংশ সড়কে পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এর পাশাপশি নগরীর কাশিয়াডাঙ্গা, রায়পাড়া, গুঁড়িপাড়া বিলশিমলা, তেরখাদিয়া, বহরমপুর, ডিঙ্গাডোবা, কয়েরদাঁড়া, মালদাকলোনী, শিল্পীপাড়া,মথুরডাঙ্গ, নওদাপাড়া, ভাড়ালিপাড়া, বাগানপাড়া, ছোটবনগ্রাম, আসামকলোনী, শিরোইল কলোনী,মেহেরচন্ডি, বুধপাড়া, চৌদ্দপায়া, মিজানের মোড়, কাজলা, বিনোদপুরের নিম্নাঞ্চলে পানি উঠে প্লাবিত হয়েছে।
নগরীর এ সব নিম্নাঞ্চলের বাড়ি-ঘর, দোকান-পাট এবং আশপাশে পানি উঠে চাপকল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিশুদ্ধ পানির সঙ্কট এবং ঘরে পানি উঠায় রান্না করতে না পারায় খাবার সঙ্কট দেখা দিয়েছে। ঘরে পানি প্রবেশ করে আসবাবপত্র ভিজে অনেক পরিবার একমাত্র বিছানাতে বসে দিন পার করেছেন জানা গেছে।
তেরখাদিয়া মধ্যপাড়ার অধিকাংশ পুরানো একতলা বাড়িতে বৃষ্টির পানি হানা দিয়েছে বলে ঐ এলাকা ঘুরে দেখা গেছে। নগরীর বেশ কিছু এলাকায় নৌকায় করে মানুষকে চলাচল করতে দেখা গেছে। বৃষ্টি অব্যহত থাকলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনের বাইওে চলে যেতে পারে বলেও অনেকের অভিমত।
রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী গত ২৪ ঘন্টায় রাজশাহীতে বৃষ্টিপাত হয়েছে ২৫০ মিলিমিটার। গতকাল বুধবার রাত ১০টায় প্রবল বর্ষণ শুরু হলে নিমিশের মধ্যে নগরীর অধিকাংশ সড়কে পানি জমে যায়। যান চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি হয়।
অনেককেই অটো রিকশা না পেয়ে ভিজতে ভিজতে বাড়ি যেতে দেখা গেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২৭ ডিগ্রি এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৫.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস ।
সোনালী/জেআর