রাজশাহীতে অক্সিজেন নিয়ে রিকশা চালানো সেই সেন্টুর পাশে ফারাজ
অনলাইন ডেস্ক: অক্সিজেনের পাইপ নাকে নিয়ে রিকশা চালানো সেই মাইনুরজ্জামান সেন্টুর পাশে দাঁড়িয়েছেন ফারাজ করিম চৌধুরী। ফারাজ চট্টগ্রাম-৬ আসনের সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীর জ্যেষ্ঠ সন্তান। দেশজুড়ে তিনি সমাজসেবক হিসেবেও পরিচিত।
এর আগে রিকশাচালক সেন্টুর নিউজ ও ছবি গণমাধ্যমে প্রকাশের পর তা ফেসবুকে ভাইরাল হয়। এরপরই তার দিকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন ফারাজ।
সেন্টু বর্তমানে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের ১২ নম্বর বেডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। মোবাইল ফোনে তার ও তার স্ত্রীর সঙ্গে সরাসরি কথা বলে জাতীয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল বাংলানিউজের মাধ্যমে বুধবার (১৭ মে) মে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নগদ ৫৫ হাজার টাকা আর্থিক সহযোগিতা পৌঁছে দেন ফারাজ করিম।
তার পক্ষ থেকে পাঠানো নগদ অর্থ রিকশা চালক সেন্টুর হাতে তুলে দেন বাংলানিউজের সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট শরীফ সুমন।
আর্থিক সহযোগিতা নিয়ে এগিয়ে আসা ফারাজ করিম চৌধুরী জানান, গতকাল ফেসবুকে রাজশাহীর এই রিকশা চালক সেন্টুর খবরটি নজরে আসে তার। আর এ ঘটনা জেনেই ভেতরটা মুষড়ে ওঠে। সেন্টুর এমন জীবন সংগ্রাম তার হৃদয় ছুঁয়ে যায়। তিনি তাৎক্ষণিকভাবে তার সঙ্গে যোগাযোগের জন্য চেষ্টা শুরু করেন। তার ছবি দিয়ে নিজের ফেসবুক পেজে স্ট্যাটাস দেওয়ার পর খোঁজ পান রিকশা চালক সেন্টু বর্তমানে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি।
সেন্টু তাকে জানান, চিকিৎসকরা তাকে একটি অক্সিজেন সিলিন্ডার কেনার কথা লিখে দিয়েছেন। যেটার দাম ৫০ থেকে ৫৫ হাজার টাকা। এ কথা শুনে তিনি পুরো টাকাটা তাকে পৌঁছে দিলেন। তবে এজন্য তিনি কোনো প্রচার চান না। সেন্টু এর মাধ্যমে সুস্থ থাকলে তার কাছে সেটাই আনন্দের ও সুখকর হবে বলে জানান ফারাজ।
মাইনুরজ্জামান সেন্টু রাজশাহী নগরীর ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কলাবাগান এলাকার বাসিন্দা। তার বয়স ৫৫ বছর। দীর্ঘ সাত বছর ধরে ফুসফুসের সমস্যার কারণে শ্বাসকষ্টজনিত রোগে ভুগছেন। তার দুই মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে। তবে তাদের সবার বিয়ে হয়ে যাওয়ায় তারা আলাদা আলাদা সংসার নিয়ে ব্যস্ত।
তাই এ বয়সেও চরম অসুস্থ শরীর নিয়েও রিকশা চালিয়ে নিজের জীবিকা নির্বাহ করতে হয় সেন্টুকে। এর পাশাপাশি অক্সিজেন সিলিন্ডারের যোগান দিতে হয় তাকেই।
মাইনুরজ্জামান সেন্টু রিকশার হেন্ডেলের সঙ্গে অক্সিজেন সিলেন্ডার বেঁধে রিকশা চালান। সিলেন্ডার থেকে বের হওয়া অক্সিজেনের নল সব সমই তার নাকের ভেতর রাখতে হয়। না হলে তার শাস কষ্ট শুরু হয়ে যায়। আর এভাবেই গত সাত বছর ধরে অক্সিজেন নিয়ে রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছেন সেন্টু।
ফারাজ করিম চৌধুরী সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ায় সেন্টু ও তার স্ত্রী চম্পা বেগম তার প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানান। এ সময় তারা ফারাজের জন্য দোয়া করেন।
চট্টগ্রাম-৬ আসনের সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীর জ্যেষ্ঠ সন্তান ফারাজ করিম চৌধুরী সব সময় অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ান। সমাজের চারপাশের নানা রকম অনিয়মের বিপরীতে অবিরাম ছুটে চলেছেন এ স্বপ্নবাজ তরুণ। একের পর এক ব্যতিক্রমী কর্মকাণ্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তুলে ধরে গোটা দেশজুড়ে অর্জন করেছেন তুমুল জনপ্রিয়তা।
২০১৩ সালে কিংস কলেজ লন্ডন থেকে আন্ডার গ্রাজুয়েট শেষ করে ২০১৫ সালে লন্ডনের ইউনিভার্সিটি অব ম্যানচেস্টার থেকে উচ্চশিক্ষা (মাস্টার্স) অর্জন করে দেশে আসেন এ তরুণ। তখন থেকেই বিভিন্ন সামাজিক ও মানবিক কর্মকাণ্ডে অংশ নিয়ে বেশ পরিচিতি পান।
সোনালী/জেআর