ঢাকা | মে ২, ২০২৫ - ২:১৫ পূর্বাহ্ন

শিরোনাম

রাজশাহীতে বেড়েছে পেঁয়াজ বীজ চাষ, পরাগায়ণে ব্যস্ত চাষিরা

  • আপডেট: Tuesday, March 5, 2024 - 9:45 pm

মিজান মাহী, দুর্গাপুর থেকে: সারাদেশেই বছর জুড়েই এবার পেঁয়াজের বাজার ছিল চাঙ্গা। দাম ভাল পাওয়ায় খুশি চাষিরাও। তাই রাজশাহীতে এবার পেঁয়াজ কদমের (বীজ) চাষ বেড়েছে। চাষিরাও মাঠে মাঠে পুরোদমে পরিচর্যায় ব্যস্ত রয়েছেন। তবে মৌমাছির আনাগোনা কম হওয়ায় চাষিরা হাতের আলতো ছোয়া দিয়ে হস্ত পরাগায়ণ করছেন।

এ বছর রাজশাহীতে পেঁয়াজ বীজের চাষ বেড়েছে ১২ হেক্টর জমিতে। চাষিরা জানান, গত বছর পেঁয়াজের বীজ বাজারে বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার টাকা কেজি দরে। এতে পেঁয়াজ বীজ চাষে আগ্রহ বেড়েছে।

এ বছর রাজশাহী জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি পেঁয়াজের (কদম) চাষ হয়েছে দুর্গাপুর উপজেলায়। এই উপজেলায় পেঁয়াজ বীজের চাষ হয়েছে ১০৫ হেক্টর জমিতে। এ ছাড়া জেলার উপজেলা গুলোর মধ্যে গোদাগাড়ীতে ৮৫ হেক্টর, পুঠিয়া উপজেলায় ৭০ হেক্টর, পবা, মোহনপুর, বাগমারা, চারঘাট ও বাঘা উপজেলায় পেঁয়াজের বীজের চাষ হয়েছে ৫ থেকে ১০ হেক্টর জমি করে।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, বছরজুড়েই পেঁয়াজের দাম বেশি ছিল। তাই এবার বীজ চাষে ঝুঁকছেন চাষিরা। তুলনামূলক ভাবে বীজের দাম বেশি থাকে বাজারে। জেলায় এবার ২৭০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের বীজ চাষ করা হয়েছে। এ থেকে ২০০ টনের বেশি বীজ উৎপাদনের আশা করা হচ্ছে। এ ছাড়া গত বছর পেঁয়াজের বীজের চাষ হয়েছিল ২৫৮ হেক্টর জমিতে। এসব উৎপাদিত বীজ জেলার চাহিদা মিটিয়ে অন্য জেলায়ও সরবরাহ করা হয়ে থাকে।

দুর্গাপুর উপজেলার কয়ামাজমপুর গ্রামের জুয়েল রানা বলেন, পেঁয়াজ বীজ চাষ অত্যন্ত লাভজনক। তবে আবহাওয়া ভাল থাকতে হবে। গত বছর ঝড় শিলা বৃষ্টিতে আমার খেত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। তারপরও লাভের আশায় এবছর এক বিঘা জমিতে চাষ করেছি। কারণ বাজারে বছর জুড়েই পেঁয়াজের দাম ভাল ছিল।

তিনি বলেন, এখন মাঠে সরিষা নেই। তাই মৌমাছি নেই। পরাগায়ণ হচ্ছে না। তাই ফুলে হাতের আলতো ছোঁয়া দিয়ে হস্তপরায়ণ করছি। আশা করছি, এবার পেঁয়াজ বীজের ভাল ফলন হবে। পুঠিয়া উপজেলার তাঁরাপুর গ্রামের সোলেমান আলী শাহা বলেন, গতবছর ১০ কাঠা জমি থেকে ৭০ হাজার টাকা লাভ হয়েছিল।

এবার ৫কাঠা বাড়িয়ে ১৫ কাঠা জমিতে পেঁয়াজ বীজ চাষ করেছেন। কিন্তু ঝড় ও শিলা বৃষ্টিতে ঝুঁকিতে আছেন। সোলেমান বলেন, পেঁয়াজের কদম বীজ সাড়ে তিন থেকে চার মাস জমিতে থাকেন। এই ফসলের পরিচর্যা বেশি লাগে। পরিচর্যার অভাব হলে ফলন কমে যাবে। সময় মতো কীটনাশক দিতে হবে।

দুর্গাপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কুন্তনা ঘোষ বলেন, পেঁয়াজ বীজ চাষ ব্যাপক লাভজনক। চাষিদের পেঁয়াজচাষে নানা ভাবে উদ্বুদ্ধ করছে কৃষি বিভাগ। তাই পেঁয়াজ বীজচাষ বাড়ছে। তিনি বলেন, জমিতে মৌমাছি না থাকলে নানা পন্থা অবলম্বন করে চাষিদের পরাগায়ণে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোজদার হোসেন বলেন, পেঁয়াজের ফুলকে সবাই কদম বলে থাকে। এই কদম থেকে পেঁয়াজের বীজ হয়। গত বছর বেশ ভালো দাম পেয়েছিলেন চাষিরা। তাই এই বছর বেড়েছে পেঁয়াজ বীজের চাষ।

সোনালী/জেআর

Hi-performance fast WordPress hosting by FireVPS