ঢাকা | মে ৪, ২০২৪ - ৮:১৯ অপরাহ্ন

করোনাকালের ভূমিকা: এমপি হিসেবে ফের বাদশাকেই চান রাজশাহীবাসী

  • আপডেট: Friday, January 5, 2024 - 9:00 pm

জগদীশ রবিদাস: ২০২০-২১ সালে করোনা মহামারীর সময় মানুষ যখন মানুষের কাছ থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছিল, সবাই যখন নিজ-নিজ বিষয় নিয়ে ব্যস্ত; তখন মানবসেবার এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করে রাজশাহীর মানুষের মন জয় করেছিল ‘শহিদ জামিল ব্রিগেড’। রাজশাহী-২ আসনের সংসদ সদস্য ১৪ দলের কেন্দ্রীয় নেতা ফজলে হোসেন বাদশার উদ্যোগে গড়ে ওঠা তৎকালীন ‘বিপদের বন্ধু হিসেবে খ্যাত’ স্বেচ্ছাসেবী ওই সংগঠনের সদস্যরা একটি ফোন পেলেই বিনামূল্যে অক্সিজেন-অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে হাজির হতো রোগীদের বাড়ি-বাড়ি।

এতে করে সে সময় হাজারো মানুষের প্রাণ রক্ষা করেছিল লাল গেঞ্জি পরিহিত এমপি বাদশার ব্রিগেড বাহিনীর সদস্যরা। বাড়িতে অক্সিজেন সেবা, অ্যাম্বুলেন্সে করে রোগী নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করানোর কাজটি তারা করেছে পরম মমতা ও ভালোবাসায়। যার জন্য তাদের দিতে হয়নি একটি টাকাও। নিজ খরচে টানা দেড় বছর মানুষকে এই সেবা দেয়ায় দল-মতের উর্ধ্বে গিয়ে রাজশাহীর প্রতিটি মানুষের মনে দাগ কেটেছিলেন সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা।

করোনার দ্বিতীয় ধাপে আক্রান্ত রোগীদের জীবন বাঁচাতে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন হচ্ছিল অক্সিজেনের। নগরীর হাসপাতালগুলোতে অক্সিজেন সংকটে অনেক রোগী মারাও যাচ্ছিল। অক্সিজেনের পাশাপাশি রোগীদের আরও জরুরি প্রয়োজন হচ্ছিল অ্যাম্বুলেন্সের। এই দুই সেবা তাৎক্ষণিক না পেলে যেকোনো সময় প্রাণ হারানোর ঝুঁকি থাকতো করোনায় আক্রান্তদের। এমন পরিস্থিতি বিবেচনা করে সেদিন সবার আগে মানুষের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা। তার গড়া জামিল ব্রিগেডের সদস্যরা একটি ফোন পেলেই বিনামূল্যে রোগীর বাড়িতে গিয়ে অক্সিজেন পৌঁছে দিয়েছেন। রোগীকে হাসপাতালে নিতে ২৪ ঘন্টা দেয়া হয়েছিল ফ্রি অ্যাম্বুলেন্স সেবা।

ঝড়-বৃষ্টি এবং মধ্যরাতের প্রতিবন্ধকতা উপেক্ষা করে তারা এই মানবিক সেবা দিয়ে গেছেন। শুধু রাজশাহী শহরে করোনা মোকাবিলায় ২০২০ সালের ৫ জুন ৫০ জন তরুণ-যুবকের সমন্বয়ে শহীদ জামিল ব্রিগেড গঠন করা হয়। প্রথম ধাপে টানা তিন মাস মহানগর এলাকায় শুধু একটি ফোনকলে মানুষের বাড়িতে অ্যাম্বুলেন্স ও অক্সিজেন পৌঁছে দিয়ে মানবতার সেবায় কাজ করেছেন জামিল ব্রিগেডের সদস্যরা। পরে ওই বছরের ৮ আগস্ট তাদের সেবায় যুক্ত হন চারজন চিকিৎসক। তারাও বিনামূল্যে রোগীদের সেবা ও পরামর্শ দিয়েছেন।

করোনা মহামারীতে ফজলে হোসেন বাদশার ভূমিকা এখনো মনে রেখেছেন রাজশাহীর আপমর জনগণ। করোনাকালে টিকা নিয়ে যখন গুজব রটে, তখন সবার আগে হাসপাতালে গিয়ে টিকা নিয়ে রাজশাহীর মানুষকে পথ দেখিয়েছিলেন ফজলে হোসেন বাদশা। এতে জনপ্রতিনিধি হিসেবে ফজলে হোসেন বাদশাকে নিয়ে মানুষের কাছে অত্যন্ত পজেটিভ ধারণা তৈরি হয়। সেই ধারণা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে সংসদ নির্বাচনে।

মানুষ বলছে, করোনাকালে যখন সবাই নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছিল; তখন ফজলে হোসেন বাদশা সাধারণ মানুষের পাশে এসে দাঁড়িয়েছিলেন। এখন অনেকেই দেখছি বড় বড় কথা বলে নানা প্রতীকে ভোট চাইছেন। কিন্তু করোনার সেই দুঃসময়ে তাদের মুখ পর্যন্ত দেখা যায়নি। তারা এখন কোন মুখে এসে মূল্যবান ভোট চাচ্ছেন; আমাদের জানা নেই। আমরা এমন কোন নেতা চাইনা, যিনি দুঃসময়ে ঘরের মধ্যে ঢুকে থাকবেন। আমরা এমন নেতা চাই, যিনি আমাদের সঙ্গে, আমাদের কাতারে এসে দাঁড়াবেন। বিপদের দিনে ফজলে হোসেন বাদশাকে রাজশাহীর মানুষ যেমন পেয়েছে, তেমন আগামী নির্বাচনে ফজলে হোসেন বাদশা সাধারণ মানুষকে পাশে পাবেন, এটিই স্বাভাবিক।

এনিয়ে জানতে চাইলে সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, নির্বাচনে কাজে লাগানোর জন্য আমরা জামিল ব্রিগেড করিনি। সেটি ছিল আমাদের মুক্তিযুদ্ধের প্রতিশ্রতি ও জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতা। আমি মনে করেছি, আমি এই এলাকার সন্তান ও জনপ্রতিনিধি। আমার নৈতিক দায়িত্ব আমার এলাকার মানুষের বিপদে পাশে থাকা। আমি থেকেছি। বাকিটা রাজশাহীর জনগণ মূল্যায়ন করবে। আমার দেহে যতদিন প্রাণ আছে, ততদিন আমি রাজশাহীর মানুষের সঙ্গেই আছি। কারণ আমার রাজনীতি তাদের নিয়েই। তাদের জন্যই আমি। কে কী করলো, তা জানি না, আমি কি করেছি; সেটাই জানি। আমি বুকে হাত দিয়ে বলতে পারি, কখনোই নিজের দায়বদ্ধা হতে পিছপা হইনি। তাই আমি জানি, রাজশাহীবাসী আমার সঙ্গে ছিল, আছে এবং থাকবে।

সোনালী/জেআর