ঢাকা | মে ১৮, ২০২৪ - ১২:৪৯ অপরাহ্ন

টাকা না দিলে জমিতে পানি পায় না কৃষক!

  • আপডেট: Monday, July 31, 2023 - 10:22 pm

বিএমডিএ’র সেচ প্রকল্প

তানোর প্রতিনিধি: রাজশাহীর তানোরে বাড়তি টাকা না দেয়ায় বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) আওতায় স্থাপিত গভীর নলকুপের স্থানীয় অপারেটরের বিরুদ্ধে রোপা আমনের জমিতে সেচ না অভিযোগ উঠেছে।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগী কৃষক তানোর পৌর এলাকার রায়তান বাজে আকচা মহল্লার মৃত শহর মোল্লার পুত্র আলহাজ গাফ্ফার মোল্লা ও বাজে বড়শো গ্রামের মৃত হরিপদ সরকারের ছেলে ধীরেন্দ্রনাথ বাদি হয়ে ডিপ অপারেটরের বিরুদ্ধে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ তানোর জোনের সহকারি প্রকৌশলী বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

অভিযোগের বিষয়ে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় কৃষকদের মধ্যে হতাশার পাশাপাশি চরম ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে।

অভিযোগ ও স্থানীয় কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, অতিরিক্ত টাকা না দেয়ায় তানোর পৌর এলাকার বাজে বড়শো মৌজায় বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের স্থাপিত ২ নম্বর গভীর নলকুপের অপারেটর তানোর পৌর এলাকার রায়তান বাজে আকচা গ্রামের মৃত রুব্বানের পুত্র জসিমুদ্দীন মন্ডল কৃষকদের ফেটে যাওয়া রোপা আমনের জমিতে সেচ দিচ্ছেন না।

ফলে, শুকিয়ে যাওয়া জমি ফেটে চৌচির হয়ে মরতে বসেছে রোপা আমন ধান। সোমবার বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে সরেজমিনে ওই জমির ক্ষেতে গিয়ে দেখা গেছে, ওই এলাকার রোপা আমনের ক্ষেত শুকিয়ে মাটি ফেটে চৌচির হয়ে পড়েছে। দু’একদিনের মধ্যে বৃষ্ট না হলে বা সেচ না দেয়া হলে নষ্ট হয়ে যাবে রোপণ করা রোপা আমন ধান।

এলাকার বেশ কয়েকজন কৃষকের সাথে কথা বললে অভিযোগ করে তারা বলেন, রোপা আমন রোপনের সময পরিমান মত বৃষ্টি না হওয়ায় কৃষকরা গভীর নলকুপ থেকে সেচ দিয়ে ধান রোপনের সময় গভীর নলকুপ অপারেটর জসিমুদ্দীন মন্ডল কৃষকদের জিম্মি করে ঘন্টা প্রতি ২শ’ টাকা করে আদায় করেছেন। রোপা আমনের সময় পার হয়ে যাওয়ার কারণে বাধ্য হয়ে কৃষকরা ওই সময় ২শ’ টাকা ঘন্টায় পানি নিয়ে সেচ দিতে বাধ্য হয়েছিলেন।

একই সাথে পানির লাইনের ভল্টার চুরি হওয়ায় কৃষকদের কাছ থেকে বিগা প্রতি ১শ’ টাকা করে নিয়েছেন কিন্তু সেটি ম্যারামত করেননি। দীর্ঘদিন ধরে বৃষ্টি না হওয়ায় নোপা আমনের ক্ষেত শুকিয়ে ফেটে চৌচির হয়ে পড়েছে। ফলে রোপা আমন ধান বাঁচাতে কৃষকরা ওই অপারেটরের কাছে জমিতে সেচের জন্য পানি নিতে গেলে আবারো ঘন্টা প্রতি ২শ’ টাকা করে দাবি করেন।

এসময় কৃষকরা কার্ড দিয়ে পানি নিতে চাইলে অপারেটর জসিমুদ্দীন ঘন্টা প্রতি অতিরিক্ত ৫০ টাকা করে দাবি করেন। কৃষকরা অতিরিক্ত টাকা দিতে না চাওয়ায় অপারেটর কৃষকদের ফেটে যাওয়া রোপা আমনের জমিতে সেচ দেননি এবং দিচ্ছেন না। ফলে এলাকার রোপা আমনের ক্ষেত শুকিয়ে ফেটে চৌচির হয়ে পড়েছে। এতে ফসল নষ্টের অপক্রম হয়ে পড়েছে রোপা আমনের ধান। এ ঘটনায় এলাকায় কৃষকদের মধ্যে হতাশার পাশাপাশি চরম অসন্তোষ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে।

এ বিষয়ে মোবাইলে ফোন যোগাযোগ করা হলে অভিযুক্ত গভীর নলকুপ অপারেটর জসিম উদ্দীন মন্ডল ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘‘এখন ডাল সিজিন তাই জমিতে সেচ দিতে হলে ঘন্টা প্রতি ২শ ‘ টাকা দিতে হবে। আর কার্ড দিয়ে সেচ দিতে হলে ঘন্টা প্রতি আমাকে অতিরিক্ত ৫০ টাকা করে দিতে হবে। না হলে পানি দিবো না।’’

এ ব্যাপারে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তানোর জোনের সহকারি প্রকৌশলী কামরুজ্জামান বরেন, ‘‘অভিযোগ পাওয়া গেছে। কৃসকদের জমিতে সেচ প্রদানের জন্য অপারেটরকে বলা হবে জানিয়ে তিনি মোবাইল সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।’’

সোনালী/জেআর