ঢাকা | মে ৩, ২০২৪ - ১১:৪৯ পূর্বাহ্ন

১৪ দিনে ডেঙ্গুতে ৪৬ মৃত্যু, অপ্রতুল চিকিৎসা সুবিধা

  • আপডেট: Saturday, July 15, 2023 - 10:00 am

অনলাইন ডেস্ক: রাজধানীসহ সারা দেশের হাসপাতালে বাড়ছে ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। গত ১৪ দিনে মারা গেছে ৪৬ জন। হাসপাতালগুলোতে বাড়ছে রোগীর ভিড়।

গতকাল আক্রান্ত হয়েছেন ৪৪৯ জন। এ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন ১৭ হাজার ৮৩১ জন, মারা গেছেন ৯৩ জন।

স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার সব হাসপাতালের তথ্য না আসায় রোগীর সংখ্যা কম হয়েছে। ঢাকার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৮৪ জন, ঢাকার বাইরের হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২৬৫ জন।

গতকাল কোনো মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি। চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১৪ জুলাই পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা ১৭ হাজার ৮৩১ জন। তাদের মধ্যে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন চার হাজার ২২০ জন।

এর মধ্যে ঢাকার ভিতরে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন দুই হাজার ৭৫৫ জন। আর ঢাকার বাইরে অন্যান্য বিভাগে ভর্তি হয়েছেন এক হাজার ৪৬৫ জন।

এ সময়ের মধ্যে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন ১৩ হাজার ৫১৮ জন। তাদের মধ্যে ঢাকার বাসিন্দা ৯ হাজার ১১২ জন এবং ঢাকার বাইরের চার হাজার ৪০৬ জন। আর এ সময়ে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে দেশে মারা গেছেন ৯৩ জন। রাজধানীর হাসপাতালগুলোতে ঊর্ধ্বমুখী রোগীর চাপ। মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছেন ৪৮১ জন।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আছেন ২১৪ জন, মিটফোর্ড হাসপাতালে ১৮৬ জন, শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটে ৬০ জন, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৮২ জন, পুলিশ হাসপাতালে ৯৩ জনসহ ঢাকার সরকারি হাসপাতালে গতকাল ১৫০০ রোগী ভর্তি ছিল। বেসরকারি হাসপাতালে ১ হাজার ২৫৫ জন ভর্তি ছিল।

ডেঙ্গু আক্রান্ত বেড়ে যাওয়ায় সরকারি সব হাসপাতালে ডেঙ্গু চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি সেগুলোতে পৃথক ডেঙ্গু কর্নার চালু করা হয়েছে। পাশাপাশি মেডিকেল কলেজ ও বিশেষায়িত হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু ডেডিকেটেড ওয়ার্ড চালু করা হয়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।

শেরেবাংলা মেডিকেলে ডেঙ্গু রোগী সেঞ্চুরি :

বরিশাল শেরেবাংলা কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ডেঙ্গু রোগী সেঞ্চুরি পূর্ণ করেছে। সব শেষ গতকালের রিপোর্ট অনুযায়ী বৃহস্পতিবার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন ১০০ রোগী। যা চলতি মৌসুমসহ সাম্প্রতিক বছরে চিকিৎসাধীন সর্বোচ্চ ডেঙ্গু রোগীর রেকর্ড।

এর আগে বুধবার চিকিৎসাধীন ছিলেন ৯৬ জন রোগী, মঙ্গলবার ৯৯ জন এবং সোমবার চিকিৎসাধীন ছিলেন ৯৭ জন রোগী। গতকাল সকালে শেরেবাংলা মেডিকেল ঘুরে দেখা যায়, চিকিৎসাধীন ডেঙ্গু রোগীদের জন্য এই হাসপাতালে ন্যূনতম সুবিধা নেই। অপরিষ্কার-অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে তেলাপোকা আর মশা মাছির উৎপাতে অতিষ্ঠ রোগী ও স্বজনরা। রোগ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে হয় বাইরে থেকে। কিনতে হয় বেশিরভাগ ওষুধ। ডেঙ্গু চিকিৎসার যন্ত্রপাতি না থাকায় গুরুতর রোগীদের ঢাকায় পাঠিয়ে দেন চিকিৎসকরা।

রোগীরা জানান, ডাক্তার-নার্সরা ডেঙ্গু রোগীদের তেমন খবর নেন না। ডাকলেও তাদের পাওয়া যায় না। তারা তদারকি বাড়ালে রোগীরা আরও দ্রুত সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরতে পারতেন বলে ধারণা রোগীদের। এদিকে গুরুত্বপূর্ণ ‘সেল সেপারেটর’ যন্ত্র না থাকায় একটু অবস্থা খারাপ হলেই রোগীদের ঢাকায় প্রেরণ করেন চিকিৎসকরা।

এতে বিপাকে পড়েন অনেকে। তারা হাসপাতালেই ডেঙ্গু রোগীর যথাযথ চিকিৎসা ব্যবস্থা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন। শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. এইচএম সাইফুল ইসলাম বলেন, ডেঙ্গু পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। রোগীর চাপ প্রতিদিন বাড়ছে। চলতি মৌসুমে ডেঙ্গু রোগীর চাপ আরও বাড়তে পারে আশঙ্কায় আরও ১০০ শয্যা প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

ধারণ ক্ষমতার ১০ গুণ রোগী এবং তাদের সঙ্গে অতিরিক্ত ভিজিটরের কারণে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে রাখা যায় না। কর্তৃপক্ষ পরিচ্ছন্ন করে তারা আবার নোংরা করে। প্রয়োজনীয় জনবল ও যন্ত্রপাতি পেলে এই হাসপাতালেই ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসা সম্ভব বলে তিনি জানান।

সোনালী/জেআর