ঢাকা | জুলাই ২৬, ২০২৪ - ৮:৩৪ পূর্বাহ্ন

বিপৎসীমার ওপরে আত্রাই নদীর পানি, নতুন এলাকা প্লাবিত

  • আপডেট: Saturday, July 15, 2023 - 10:32 am

অনলাইন ডেস্ক: দিনাজপুরের খানসামার আত্রাই নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বেশ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। আরও নতুন নতুন এলাকা ডুবে যাওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

এছাড়া নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় নদীতীরবর্তী এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। এরই মধ্যে বসতভিটা কৃষিজমি সব হারিয়ে অনেকে নিঃস্ব হয়েছেন।

এর আগেও বিভিন্ন সময় রাস্তা-ঘাট, হাট-বাজার, স্কুল-কলেজ, মসজিদ, মাদরাসাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে।

এই আত্রাই নদীর ভাঙনে ভাবকি ইউনিয়নের চাকিনীয়া গ্রামে প্রায় ২০০ একর আবাদি জমি বিলীন হয়ে গেছে। হুমকির মুখে রয়েছে প্রায় দুই শতাধিক ঘরবাড়ি।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভাবকি ইউনিয়নের পশ্চিম-দক্ষিণে অবস্থিত চাকিনীয়া গ্রামে আত্রাই নদীর গতিপথ পরিবর্তন হয়ে গেছে। এতে স্থানীয় মানুষ জীবিকা নির্বাহের এতমাত্র সম্বল কৃষি জমি হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।

এছাড়াও নদীর পাশ দিয়ে চলাচলের একমাত্র সড়ক ও বসবাসরত দেড় শতাধিক বাড়ির লোকজন চরম দুশ্চিন্তায় দিন পার করছেন।

স্থানীয়রা জানান, গত তিন বছর আগে বর্ষাকালে হঠাৎ করে নদীর গতিপথ পরিবর্তন হয়ে আবাদি জমির ওপর দিয়ে স্রোত বয়ে যায়। এতে আমাদের প্রায় ২০০ একর আবাদী জমি নদীগর্ভে চলে যায়। এরপর গতবছর বর্ষাকালে আবারো প্রায় ১০০ একর জমি নদীতে বিলীন হয়ে যায়।

আর এ বছর ভাঙতে ভাঙতে একেবারে আমাদের বাড়ির কাছে এসে পৌঁছেছে। এমনকি নদীর পাশ দিয়ে চলাচলের একমাত্র রাস্তা যেকোন সময় ভেঙে যেতে পারে।

বাড়িঘর হুমকির মধ্যে রয়েছে। ভাঙন রোধে ও বাড়িঘর রক্ষার জন্য নদীতে বাঁধ নির্মাণের জন্য স্থানীয় লোকজন প্রশাসনকে জানায়।

নদীর পাড়ের বাসিন্দা আ. গনি বলেন, আমার ৩ বিঘা জমি চাষ করে সংসার চলত। এ বছর নদীতে সেই শেষ সম্বল জমি ও গাছপালা বিলীন হয়ে গেছে। বর্তমানে এখন বাড়ি নিয়ে প্রতিনিয়ত হুমকির মধ্যে রয়েছি।

নদীর পাড়ের আরেক বাসিন্দা আ. সামাদ জানান, নদী ভাঙতে ভাঙতে আমার বাড়ির কাছে চলে এসেছে। এ বছর মনে হয়, আমার বাড়িতে থাকা হবে না। কেমন করে পরিবার নিয়ে থাকবো, সেই চিন্তায় আছি।

গভীর হতাশা নিয়ে রশিদ মিয়া বলেন, ধীরে ধীরে আত্রাই নদী আমাদের খেয়ে ফেলছে। এভাবে নদী ভাঙন অব্যাহত থাকলে ভবিষ্যতে এ চাকিনিয়া গ্রামের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে পড়বে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মকবুল হোসেন বলেন, আমারও ৫ বিঘা জমি নদীতে চলে গেছে। নদী ভাঙন রোধে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের পরামর্শে উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানিয়েছি।

সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল আলম তুহিন বলেন, বিষয়টি আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। দ্রুত সময়ের মধ্যে নদী ভাঙন রোধে একটা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

দিনাজপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রধান নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল ইসলাম বলেন, আত্রাই নদীর পানি বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এতে এই নদীর তীরবর্তী বেশ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বেশ কিছু গ্রাম নতুন ভাবে প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে। বর্তমানে আত্রাই নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।

সোনালী/জেআর