ঢাকা | মে ৯, ২০২৪ - ১০:৫১ পূর্বাহ্ন

মৃত্যুর মিছিল থামাইতে হইবে

  • আপডেট: Friday, June 9, 2023 - 9:45 am

সড়কে মৃত্যুর মিছিলের সর্বশেষ নজির হিসাবে সিলেটের ভয়াবহ দুর্ঘটনা বেদনাদায়ক। বৃহস্পতিবার সমকালে প্রকাশিত প্রতিবেদন মোতাবেক, সিলেটের দক্ষিণ সুরমার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে মালবোঝাই ট্রাক এবং পিকআপের মধ্যকার সংঘর্ষে অন্তত ১৪ জনের প্রাণহানি ঘটিয়াছে।

বলাবাহুল্য, হতাহত অধিকাংশই শ্রমিক, যাহারা ছিল পিকআপের আরোহী। মালবাহী পিকআপে যাত্রী পরিবহন নিষিদ্ধ হইলেও নিয়মিত ইহা চলমান; বিস্ময়করও বটে।

দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে চালকের দায় অনেকখানি। এই ক্ষেত্রেও তাহার ব্যতিক্রম ঘটেনাই। এক যাত্রী দাবি করিয়াছেন, ট্রাকচালক তাঁহাদের পিকআপটি অতিক্রম করিবার সময় তন্দ্রাচ্ছন্ন ছিল। সম্প্রতি পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্তে অপর দুর্ঘটনায়ও দেখা গিয়াছে, চালককে বিশ্রামের সুযোগ না দিয়া টানা যানবাহন চালাইতে বাধ্য করিয়াছে মালিকপক্ষ। বারংবার দুর্ঘটনার পরও কেন আমাদের টনক নড়িতেছে না?

দূরপাল্লার যাত্রায় দুইজন চালক নিশ্চিত করিয়া পালা করিয়া যান চালনার নির্দেশনা থাকিলেও তাহা বাস্তবায়ন না হওয়া দুঃখজনক। আমরা মনে করি, গাড়ি চালাইবার ক্ষেত্রে সর্বাগ্রে চালকের দক্ষতা ও সুস্থতা নিশ্চিত করিতে হইবে। চালকের লাইসেন্স নিরীক্ষণ; ঘুমন্ত ও নেশাগ্রস্ত অবস্থায় কেহ যেন গাড়ি না চালায়, তজ্জন্য মালিকপক্ষ ও সড়ক নিরাপত্তায় দায়িত্বপ্রাপ্তদের তৎপরতা জরুরি।

মনে রাখিতে হইবে, আমাদের সড়ক এমনিতেই দুর্ঘটনাপ্রবণ। সড়কসমূহ নিরাপদ করিতে হইলে কোনো দিক হইতে ছাড় দেওয়া চলিবে না। উপযুক্ততাহীন যানবাহন ধরিতে যদ্রূপ জোরালো অভিযান দরকার, তদ্রূপ যাত্রী পরিবহনের অনুমতি না থাকিলেও পিকআপসহ এইরূপ যানে যাত্রী পরিবহন বন্ধ করিতে হইবে।

আলোচ্য সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবারকে যে পরিমাণ অর্থ দেওয়া হইয়াছে, তাহা খুবই সামান্য। বর্তমান বাস্তবতায় সরকারের উচিত নিহত প্রত্যেক পরিবারকে অন্তত ২০ লাখ টাকা করিয়া ক্ষতিপূরণ প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ, আহতদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের দায়িত্বও লইতে হইবে। শ্রমিক বলিয়া দায় এড়াইবার সুযোগ নাই। আমরা মনে করি, সড়কে শৃঙ্খলা নিশ্চিতে সকল পক্ষের দায়িত্বশীলতা কাম্য। এই ক্ষেত্রে যে কাহারও অবহেলা কতটা মর্মান্তিক হইতে পারে; সিলেটের আলোচ্য দুর্ঘটনাই তাহার প্রমাণ।