ঢাকা | জুলাই ২৬, ২০২৪ - ১১:২৯ পূর্বাহ্ন

প্রতিশ্রুতির ইশতেহার এখনও বাস্তবায়ন হয়নি: সিপিডি

  • আপডেট: Saturday, August 13, 2022 - 10:12 pm

 

অনলাইন ডেস্ক: সিপিডির প্রবন্ধ উপস্থাপনায় বলা হয়েছে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির ইশতেহার এখনও বাস্তবায়ন হয়নি। শনিবার গুলশানের হোটেল লেকশোরে সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি) আয়োজিত ‘জাতীয় উন্নয়নে অঙ্গীকার : শিক্ষা, মানসম্মত কর্মসংস্থান, জেন্ডার সমতা’ শীর্ষক সংলাপের প্রবন্ধে এ তথ্য উঠে আসে।

প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন প্রবন্ধ উপস্থাপনা করেন। সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন। পরিকল্পনামন্ত্রী এম. এ. মান্নান এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

সিপিডির প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে ছিল—২০২১ সালের আগে মধ্য আয়ের দেশে উন্নীত হওয়া, ২০২০ সালের মধ্যে ‘টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি)’ অর্জন, ২০৪১ সাল নাগাদ উন্নত দেশের মর্যাদা লাভ, ‘বদ্বীপ পরিকল্পনা’ বা ডেলটা প্ল্যান ২১০০ বাস্তবায়নের পথে অগ্রসর হওয়া। এ ছাড়া ইশতেহারে ৩৩টি খাতে জোর দেয়া হয়।

অনুষ্ঠানে উল্লেখ করা হয়, ২০১৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে ‘নারীর ক্ষমতায়ন’ শীর্ষক ৩.১২ ধারায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পাঁচটি অঙ্গীকারের মধ্যে অন্যতম ছিল শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র তৈরি করা। তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে বলা হয়েছিল, সরকারি প্রতিষ্ঠানে উন্নতমানের দিবাযত্ন কেন্দ্র গড়ে তোলা ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে এই বিষয়ে উৎসাহিত করা।

প্রবন্ধে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের ৭৭ শতাংশ কর্মস্থলে এখনো নারী কর্মীদের জন্য শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র নেই। কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর ২০২০-২১ অর্থবছরে ৪৫০টি শিশু যত্নকেন্দ্র স্থাপন করেছে এবং ২০২১-২২ অর্থবছরের ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত ৩৭১টি শিশু কক্ষ স্থাপন করেছে।

ফাহমিদা খাতুন বলেন, বাংলাদেশে প্রতিটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় রাজনৈতিক দলগুলো প্রথাগতভাবে নির্বাচনী ইশতেহারের অঙ্গীকার যেকোনো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কেননা এটিকে দল ও ভোটারদের মধ্যে একটি লিখিত চুক্তি বলে ধরে নেয়া যায়। ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় নির্বাচনের প্রাক্কালে ‘সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ’ শিরোনামে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ তাদের নির্বাচনী ইশতেহার ২০১৮ প্রকাশ করে। স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি সুস্পষ্ট কর্মসূচি নিয়ে গত তিন বছর ধরে এই অঙ্গীকারগুলো বাস্তবায়নে কাজ করছে সরকার। সিপিডি গত দুই বছরে এ বিষয়ে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করে। সারাদেশে ১৫টি জেলায় আঞ্চলিক এ সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়।

ওইসব সংলাপে যেসব বিষয় এসেছে তা হলো- বেশিরভাগ মানুষ উল্লেখ করেন তারা নিজ দাবি সরাসরি বা লিখিত আকারে প্রার্থীদের কাছে উপস্থাপন করতে পারেননি। তাদের অত্যন্ত সীমিত আকারে এসব সমস্যা উপস্থাপন করার অনুমতি দেওয়া হলেও চূড়ান্ত ইশতেহারে তা প্রতিফলিত হয়নি। অংশগ্রহণকারীদের অনেকেই ইশতেহারে উল্লিখিত লক্ষ্যগুলো সম্পর্কে অবগত নয়। অনেকক্ষেত্রেই ইশতেহার বলতে তারা জনপ্রতিনিধিদের মৌখিক অঙ্গীকারকেই বুঝে থাকেন।

সিপিডির প্রবন্ধ উপস্থাপনায় বলা হয়েছে, প্রতিশ্রুতির ইশতেহার এখনও বাস্তবায়ন হয়নি এমন বিষয়গুলো হলো- ২০২০ সাল নাগাদ উচ্চ শিক্ষায় নারীপুরুষ শিক্ষার্থীর অনুপাত বর্তমানের ৭০ থেকে ১০০ শতাংশে উন্নীত করা। প্রশাসন ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের উচ্চপদে অধিকসংখ্যক নারী নিয়োগের নীতি আরও জোরালোভাবে অনুসরণ করা। নারী উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করতে তাদের জন্য আলাদা ব্যাংকিং সুবিধা, ঋণ সুবিধা, কারিগরি সুবিধা, সুপারিশসহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করা।

জয়িতা ফাউন্ডেশনের সম্প্রসারণের মাধ্যমে নারীদের সফল উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ী হিসেবে গড়ে তোলার কাজ আরও জোরালোভাবে চালিয়ে নেয়া এবং নারী-পুরুষের সমান মজুরির নিশ্চয়তা, গ্রামীণ নারীদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা ও সব ক্ষেত্রে নারীর কর্ম পরিবেশ উন্নয়ন করা। তবে এসব প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়িত হয়নি কিংবা বাস্তবায়নের গতি মন্থর বলে প্রবন্ধ উপস্থাপনায় উল্লেখ করা হয়।