ঢাকা | মে ৪, ২০২৪ - ১১:৪৬ পূর্বাহ্ন

পুরুষ সেজে পালিয়ে চাচিকে বিয়ে করেছিলেন তরুণী

  • আপডেট: Friday, May 27, 2022 - 9:26 pm

স্টাফ রিপোর্টার: স্বামীর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদের সাত মাস পর হঠাৎ মেয়েটি ঘোষণা দেন যে তিনি পুরুষে রূপান্তর হয়েছেন। ২২ বছরের এই তরুণী নিজের নাম রাখেন ফাহিম। তারপর ১৯ বছরের এক তরুণীর সঙ্গে গড়ে তোলেন প্রেমের সম্পর্ক। এই তরুণী সম্পর্কে কথিত ফাহিমের চাচি। ফাহিমের সঙ্গে প্রেম হয়ে যাওয়ায় তিনিও নিজের স্বামীর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটান।

এরপর দশ দিন আগে তাঁরা ঢাকায় পালিয়ে গিয়ে বিয়েও করেন। কিন্তু ফাহিমের পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় জিডি করা হয়। আর ফাহিমের চাচির পরিবার দুজনকে কৌশলে বাড়ি আনার চেষ্টা করে। বৃহস্পতিবার রাতে তারা বাড়ি ফেরার পর এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। ফাহিম আসলেই পুরুষ হয়েছেন কি না তা নিয়ে বিতর্ক ওঠে। তখন পরিবারের সদস্যরা ফাহিমের প্যান্ট খুলে উদ্ধার করেন একটি নকল পুরুষাঙ্গ। পুলিশ সেটি জব্দ করেছে।

শুক্রবার সকালে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় আজব এই ঘটনা ঘটেছে। ফাহিম নাম ধারণ করা মেয়েটি স্বামীর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ করেছেন সাত মাস আগে। তার দেড় বছর বয়সী একটি মেয়ে আছে। তবে বিবাহ বিচ্ছেদের পর যখন তিনি নিজেকে পুরুষ হিসেবে ঘোষণা দেন তখন থেকেই ছেলেদের প্যান্ট-শার্ট পরতে শুরু করেন। চুলও ছেঁটে রাখেন ছেলেদের মত করে। কথিত ফাহিমের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠার পর এক মাস আগে স্বামীর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটান কথিত ফাহিমের চাচি। তাঁর কোন সন্তান নেই।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কথিত ফাহিমের বাড়ি গোদাগাড়ী উপজেলার হুজরাপুর গ্রামে। অন্য মেয়েটির স্বামীর বাড়িও ছিল এই গ্রামে। তাঁর বাবার বাড়ি গোদাগাড়ী পৌরসভার মাদারপুর মহল্লায়। স্বামীর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদের পর বাবার বাড়িতে থাকতেন তিনি। হঠাৎ দশদিন আগে দুজনে ঢাকায় চলে যান। সেখানে কাজী অফিসে বিয়েও করেন। তারপর দুজনে ঢাকায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়ে থাকতে শুরু করেন।

স্থানীয়রা আরও জানান, বিয়ের পর ঢাকায় মাদারপুরের মেয়েটির আত্মীয়ের বাড়িতেই দুজনে ছিলেন। এই মেয়েটির পরিবার কৌশলে দুজনকে বাড়িতে ডেকে আনে। বৃহস্পতিবার রাতে মেয়েটি ফাহিমকে সঙ্গে নিয়েই আসেন। সকালে উৎসুক মানুষ বাড়িটিতে জড়ো হন। তাঁরা প্রশ্ন তোলেন যে ফাহিম আসলেই ছেলে হননি। হয়ত পুরুষ হয়ে থাকার স্বাদ হয়েছে তার। এ সময় পরিবারের সদস্যরাই ফাহিমের প্যান্ট খুলে একটি নকল পুরুষাঙ্গ উদ্ধার করেন। পরে দুই মেয়েকে গোদাগাড়ীর প্রেমতলী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়।

মাদারপুরের মেয়েটি পুলিশের কাছে দাবি করেছেন, দুজনে ঢাকায় গিয়ে বিয়ে করেছেন। তবে বিয়ের কাগজ দেখাতে পারেননি। কাবিননামা ফাহিমের কাছে ছিল বলে তিনি জানিয়েছেন। তিনি পুলিশকে আরও জানিয়েছেন, বিয়ের আগে ও পরে ফাহিমের সঙ্গে তাঁর শারীরীক সম্পর্ক হয়েছে। কিন্তু ফাহিম যে নকল পুরুষ সেজেছিলেন তা তিনি টের পাননি। তবে ফাহিমের বিরুদ্ধে তাঁর কোন অভিযোগ নেই বলেও তিনি পুলিশকে বলেছেন।

গোদাগাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ইসলাম বলেন, ‘আজব এক ঘটনা। এরা কি বলে না বলে কিছুই ঠিক নাই। এদের এই সম্পর্ক কোন আইনের ভেতরেও পড়ে না। তাই জিডির ভিত্তিতে ফাহিম নাম ধারণ করা মেয়েটিকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আইনগত প্রক্রিয়া শেষে অন্য মেয়েটিকেও পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।’