ঢাকা | নভেম্বর ১৭, ২০২৪ - ৫:৪১ পূর্বাহ্ন

ইলমার স্বামীর বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনার প্রমাণ মিলেছে: পুলিশ

  • আপডেট: Friday, April 15, 2022 - 7:43 pm

 

অনলাইন ডেস্ক: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃত্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী ইলমা চৌধুরীর স্বামী ইফতেখার আবেদীনের বিরুদ্ধে তার আত্মহত্যায় প্ররোচনার সংশ্লিষ্টতা পেয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। তবে এতে তার শাশুড়ি শিরিন আমিন ও শ্বশুর আমিনের কোনো সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) গুলশান বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মশিউর রহমান।

শুক্রবার বিকালে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) গুলশান বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মশিউর রহমান ঢাকাটাইমসকে এসব কথা বলেন।

ডিসি মশিউর বলেন, ‘ডিজিটাল-ফরেনসিক প্রমাণের পাশাপাশি আসামি ও অন্যান্য সাক্ষীদের জিজ্ঞাসাবাদসহ মামলার সব বিষয় শেষ করে এনেছি। তাড়াতাড়িই এই মামলার চার্জশিট দেওয়া হবে। প্রায় চার মাস তদন্তে যতটা দেখেছি, তবে এটা হত্যা করা হয়েছে বলে মনে হয়নি। স্বামীর প্ররোচনায় ইলমা আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রমাণ পেয়েছি। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে ইলমা আত্মহত্যা করেন।’

গত বছরের ১৪ ডিসেম্বর রাজধানীর বনানীতে স্বামী ইফতেখারের বাসায় ঢাবির নৃত্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী ইলমা চৌধুরী মেঘলার মৃত্যু হয়। ইলমার এমন রহস্যজনক মৃত্যুতে পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয় তাকে হত্যা করা হয়েছে। কানাডা প্রবাসী স্বামী ইফতেখার আবেদীন দেশে ফেরার তিন দিনের মাথায় ইলমার মৃত্যু হওয়ায় সন্দেহ আরও বেড়ে যায়। এছাড়া তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখমের স্পষ্ট চিহ্নও ছিল।

ঘটনার দিন রাতেই রাজধানীর বনানী থানায় নিহত ইলমার বাবা সাইফুল ইসলাম একটি হত্যা মামলা করেন। এতে ইলমার স্বামী ইফতেখার আবেদীন, শাশুড়ি শিরিন আমিন ও শ্বশুর আমিনকে আসামি করা হয়। এদিকে ইলমার মৃত্যুর পরপরই তার স্বামী ইফতেখারকে গ্রেপ্তার করে বনানী থানা-পুলিশ। পরে মামলার তদন্তভার পায় ডিবি।

ওই দিন অজ্ঞান অবস্থায় মেঘলাকে গুলশান ইউনাইটেড হসপিটালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে। পরে ময়নাতদন্তের জন্য তার মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গে পাঠায় বনানী থানা পুলিশ।

ইলমার বাবা সাইফুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, বিয়ের পরপরই ইলমার স্বামী ইফতেখার ও তার বাবা-মা লেখাপড়া বন্ধ করে দিতে চান। রাজি না হওয়ায় ইলমার মাথার চুল কেটে দেন তারা। এছাড়াও সাংসারিক নানা কাজের জন্যও ইলমার ওপর অত্যাচার-নির্যাতন চালানো হতো।

পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, পারিবারিক অবস্থা ভালো না থাকায় অল্প দিনের পরিচয়ে ওই বছরই ইফতেখারের সঙ্গে ইলমার বিয়ে দেওয়া হয়। ইলমার স্বামী কানাডায় থাকতেন। আর বিয়ের পর ইলমা চৌধুরী বনানীতে শ্বশুর-শাশুড়ির সঙ্গেই থাকতেন।

মামলার এজাহারে বলা হয়, বিয়ের পর থেকেই বিভিন্ন সময় ইলমা চৌধুরীকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন স্বামীসহ তার পরিবারের সদস্যরা। ইলমার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে দেয়া হত না বলেও অভিযোগ করা হয়েছে। এছাড়া মৃত্যুর দিনও শারীরিক নির্যাতনের ফলে তার মৃত্যু হয়েছে বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়। ইলমার মৃতদেহে ‘প্রচুর’ আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে বলে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।