ঢাকা | মে ১৭, ২০২৪ - ১:৪৪ অপরাহ্ন

নবজীবনের আশায় বাঙালির জেগে ওঠার দিন আজ

  • আপডেট: Thursday, April 14, 2022 - 12:00 am

আজ পয়লা বৈশাখ, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ। বাঙালির শুভ নববর্ষ। সর্বজনীন উৎসবে মেতে ওঠার দিন। নববর্ষকে আমরা সাধারণত বরণ করে নেই প্রাণের টানে, স্বতঃস্ফূর্তভাবে নানা আয়োজনে, গানে-কবিতায়, সমাবেশে-শোভাযাত্রায়, আবেগে-উচ্ছ্বাসে। পয়লা বৈশাখ বাঙালি ঐতিহ্যের অনুষঙ্গ হয়ে আছে অনাদিকাল থেকে। বাঙালির জাতীয় ঐতিহ্যকে সতেজ-সজীব করে রেখেছে পয়লা বৈশাখ।

ধর্ম-বর্ণ-সম্প্রদায় নির্বিশেষে সব শ্রেণি-পেশার মানুষ এই দিনে ভেদাভেদ ভুলে মেতে ওঠে মিলনোৎসবে। নতুন বছরের সূর্যোদয়ের সাথে তাল মিলিয়ে রঙিন সাজে সজ্জিত হয়ে আনন্দ উৎসবে পথে বেরিয়ে আসে হাজারো জনতা, ছোট-বড় সব বয়সের বাঙালি। করোনায় ছেদের পর পয়লা বৈশাখে আবার বাঙালি আজ মেতে উঠেছে প্রাণের উৎসবে। জাতীয় উৎসব হিসেবে পরিণত দিনটি হয়েছে আমাদের জাতি সত্ত্বার শেকড় খোঁজার আয়োজনে।

নববর্ষ চিরায়ত বাংলার ঐতিহ্যে লালিত অনন্য এক দিন। দিনটি সবাইকে প্রবলভাবে আপ্লুত করে। জীর্ণ পুরাতনকে ঝেড়ে ফেলে নবজীবনের আশায় জেগে ওঠার দিন আজ। দৃপ্ত পদভারে এগিযে চলার দিনও। দেশজুড়ে চৈত্রসংক্রান্তি উৎসব আর বৈশাখী মেলা, সংখ্যায় কমে আসলেও, এখনও দেশিয় সংস্কৃতি চর্চা ও বিকাশে অনবদ্য ভূমিকায় উজ্জ্বল।

বিশ্ব জুড়ে ছড়িয়ে থাকা প্রবাসী বাঙালিরাও নববর্ষের উৎসবে মেতে ওঠে বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনায়। সব বিভেদ ভুলে বাঙালি জাতির পরিচয়ে সবাই মিলিত হয় একই মোহনায়। এদিনে আমরা জাতিগত উৎসের পরিচয় খুঁজে পাই। তা রক্ষার অঙ্গীকার করি। তাই বাঙালির আত্মপরিচয় চিনে নেয়ার দিনও পয়লা বৈশাখ।

আবহমান বাংলার গ্রামগঞ্জের মানুষ চৈত্রসংক্রান্তি ও বৈশাখী মেলার মাধ্যমে নববর্ষ পালন করে আসছে দীর্ঘকাল ধরে। তবে নাগরিক সমাজে এর উপস্থিতি যেন হারিয়ে যেতে বসেছিল। আধুনিকতার জোয়ারে শেকড়ের খবর রাখার ফুরসৎ কমে আসছিল নগর জীবনে। আনুষ্ঠানিকতায় বাঁধা পড়েছিল নববর্ষ। কিন্তু সে অবস্থা পাল্টাতে শুরু করেছে দৃশ্যমানভাবেই।

নববর্ষ এখন শহর গ্রাম সর্বত্রই নানা আয়োজনে পালিত হচ্ছে। সবার অংশগ্রহণে বাঙালির চিরন্তন অসাম্প্রদায়িক চেতনার স্বতঃস্ফূর্ত প্রকাশ ঘটে এদিন সর্বত্রই। মৌলবাদী ও সাম্প্রদায়িক অপশক্তির বিরুদ্ধে পয়লা বৈশাখ বাঙালি মূল্যবোধ ও জাতিয়তাবোধ সুদৃঢ় করে, সম্মিলিতভাবে এগিয়ে চলার দিশা তুলে ধরে।

আপামর বাঙালি নববর্ষকে ধারণ করেছে অসাম্প্রদায়িক জীবনযাত্রা ও সংস্কৃতির অনুষঙ্গ হিসেবেই। তাই অতীতের সব ব্যর্থতা, গ্লানি, বিভেদ, ভুলে এই দিন জাতীয় জীবনের সবক্ষেত্রে ঐক্যের বন্ধন আরও দৃঢ় করে। নবজীবনের আশায় জেগে ওঠার, এগিয়ে চলার প্রেরণা জোগায় এই দিন। বয়ে আনে অনাবিল আনন্দের বারতা।

তাই আসুন, আজ সমন্বরে গেয়ে উঠি, ‘এসো হে বৈশাখ, এসো এসো….’। ১৪২৯ সবার জন্য বয়ে আনুক অনাবিল আনন্দ আর সফলতা। আবারও শুভ নববর্ষ।