ঢাকা | জুন ৯, ২০২৫ - ২:২০ পূর্বাহ্ন

বৈশ্বিক খাদ্যসংকটে দায় কার?

  • আপডেট: Friday, May 20, 2022 - 7:11 pm

 

অনলাইন ডেস্ক: ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর থেকে সারা বিশ্বে বেছে খাদ্যসংকট। এ প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া একে অপরকে দোষারোপ করছে।

বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের এক বৈঠকে বিশ্ব খাদ্য পরিস্থিতির অবনতির জন্য ওয়াশিংটন ও মস্কো একে অপরকে দায়ী করে। যুক্তরাষ্ট্রের আয়োজনে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। বার্তাসংস্থা এএফপি এ খবর জানিয়েছে।

ইউক্রেন বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ গম উৎপাদনকারী দেশ। যুদ্ধের কারণে ইউক্রেনের বন্দর থেকে গম রপ্তানি কার্যত বন্ধ হয়ে গেছে। দেশটির থেকে আরও কয়েকটি খাদ্যশস্য রপ্তানি হলেও সেগুলোও আপাতত বন্ধ রয়েছে। বন্ধ রয়েছে সূর্যমুখী তেলের রপ্তানিও। ফলে বিশ্ববাজারে এর স্পষ্ট প্রভাব পড়েছে।

এ প্রেক্ষাপটে ওয়াশিংটন কৃষ্ণসাগরের বন্দরগুলো দিয়ে ইউক্রেনের খাদ্যশস্য রপ্তানির সুযোগ দিতে মস্কোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে রাশিয়াকে উদ্দেশ্য করে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেন বলেন, কৃষ্ণসাগরের বন্দরগুলো অবরোধ করা বন্ধ করুন। ইউক্রেন থেকে খাদ্যবাহী জাহাজের পাশাপাশি ট্রেন ও ট্রাককে অবাধ যাতায়াতের সুযোগ দিন।

ব্লিঙ্কেন বলেন, ‘যেসব দেশ আপনাদের (রাশিয়া) আগ্রাসনের সমালোচনা করছে, সেসব দেশে খাদ্য ও সার রপ্তানি বন্ধের হুমকি থেকে সরে আসুন।’

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ইউক্রেনীয়সহ বিশ্বের লাখো মানুষের জন্য খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থা আক্ষরিকভাবেই অবরুদ্ধ করে রেখেছে রুশ সামরিক বাহিনী।

এ অবস্থায় জাতিসংঘে নিযুক্ত রুশ রাষ্ট্রদূত ভাসিলি নেবেনজিয়া পাল্টা অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেন, বিশ্বের সব দুর্দশার জন্য তার দেশকে দোষারোপ করা হচ্ছে। ভাসিলি বলেন, বিশ্ব দীর্ঘদিন ধরেই খাদ্যসংকটে ভুগছে। এ সংকটের পেছনে নানা কারণ রয়েছে। ভাসিলির দাবি, ইউক্রেন নিজেই তার বন্দরগুলো অবরোধ করে রেখেছে। কৃষ্ণসাগর উপকূলে তারা মাইন পুতে রেখেছে।

রুশ রাষ্ট্রদূতের অভিযোগ, বন্দরে আটকা পড়ে থাকা বেশ কিছু বিদেশি পণ্যবাহী জাহাজ ছেড়ে দিতে শিপিং কোম্পানিগুলোকে সহায়তা করছে না ইউক্রেন।

ভাসিলি রাশিয়ার বিরুদ্ধে পশ্চিমা দেশগুলোর আরোপিত নিষেধাজ্ঞারও সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, বিশ্বজুড়ে খাদ্য নিরাপত্তার ওপর এ নিষেধাজ্ঞা বাজে প্রভাব ফেলছে।

এর জবাবে অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেন পাল্টা দাবি করেন, রাশিয়ার খাদ্য ও সার রপ্তানি বাধাগ্রস্ত করছে না নিষেধাজ্ঞা। খাদ্যকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করার সিদ্ধান্তটি শুধুই মস্কোর।

এর আগে গত বুধবার জাতিসংঘ সতর্ক করে বলেছে, ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে আগামী মাসগুলোতে বিশ্বব্যাপী খাদ্যসংকট দেখা দিতে পারে। বিশ্ব সংস্থাটির মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, এ যুদ্ধ দরিদ্র দেশগুলোর খাদ্য নিরাপত্তাহীনতাকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। খাদ্যপণ্যের ক্রমবর্ধমান দামের কারণে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে। ইউক্রেনের রপ্তানি যদি যুদ্ধ-পূর্ব পর্যায়ে ফিরিয়ে নেয়া না যায়, তাহলে বিশ্ব দুর্ভিক্ষের মুখোমুখি হতে পাওে, যা চলতে পারে বছরের পর বছর ধরে।

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক আগ্রাসন শুরু করে রাশিয়া। দেশটির রাজধানী কিয়েভসহ বিভিন্ন শহরে গোলা ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু করে রুশ বাহিনী।

যুদ্ধে দুই পক্ষেরই ব্যাপক প্রাণহানির খবর পাওয়া যাচ্ছে। জাতিসংঘ বলছে, যুদ্ধের কারণে ইতোমধ্যে ইউক্রেন ছেড়ে অন্য দেশে আশ্রয় নিয়েছেন ৫০ লাখেরও বেশি মানুষ। আর অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন ৮০ লাখের বেশি লোক।

সূত্র জানায়, রাশিয়ার সীমান্তবর্তী ইউক্রেনের শহরগুলো ঘিরে রেখেছে রুশ সামরিক বাহিনী; হামলা চলছে ইউক্রেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর খারকিভেও।

রাশিয়ার গোলা ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় খারকিভ শহরেও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানির খবর পাওয়া যাচ্ছে।

Hi-performance fast WordPress hosting by FireVPS