ঢাকা | ডিসেম্বর ৩০, ২০২৫ - ৫:৩৪ পূর্বাহ্ন

মান্দায় শীতের প্রকোপ: বীজতলা নিয়ে দুশ্চিন্তায় কৃষক, বাড়ছে রোগী

  • আপডেট: Tuesday, December 30, 2025 - 12:12 am

মান্দা (নওগাঁ) প্রতিনিধি: নওগাঁর মান্দা উপজেলায় ঘন কুয়াশা ও হাড় কাঁপানো শীতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বৃষ্টির মতো ঝরছে শিশির। টানা তিনদিন ধরে সূর্যের দেখা না মেলায় বোরো ধানের বীজতলা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকেরা। একইসঙ্গে হাসপাতালে বাড়ছে ঠাণ্ডাজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত রোগীর ভিড়।

ঘন কুয়াশার কারণে দিনের অধিকাংশ সময় সড়কে যানবাহনকে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে দেখা গেছে। প্রয়োজন ছাড়া মানুষ ঘরের বাইরে বের হচ্ছেন না। এতে হাটবাজারে লোকজনের উপস্থিতি কমে গেছে। বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের শ্রমজীবী মানুষ, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও চার্জারভ্যান চালকেরা।

নওগাঁর বদলগাছী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সোমবার এ অঞ্চলে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে গত শনিবার ১১ দশমিক ৬ এবং গত শুক্রবার ১১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।

পর্যবেক্ষক হামিদুল হক জানান, পৌষ মাসের মাঝামাঝি সময় চলছে এবং সামনের দিনগুলোতে শীতের তীব্রতা আরও বাড়তে পারে। চলতি মাসেই এ অঞ্চলে শৈত্যপ্রবাহের সম্ভাবনা রয়েছে।

ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাচালক আব্দুর রশিদ বলেন, একটানা কনকনে ঠাণ্ডার কারণে রাস্তায় যাত্রী একেবারেই কম। আমি এই পেশার ওপর নির্ভর করে সংসার চালাই। পাশাপাশি এনজিওর ঋণের কিস্তিও দিতে হয়। আয় কমে যাওয়ায় চরম বেকায়দায় পড়েছি।

এদিকে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কোল্ড ইনজুরি থেকে রক্ষার জন্য বোরো ধানের বীজতলা পলিথিন দিয়ে ঢেকে দিচ্ছেন কৃষকেরা। যেসব বীজতলা ঢেকে দেয়া হয়নি, সেগুলোর চারা হলুদ ও বিবর্ণ হয়ে গেছে।

উপজেলার নাড়াডাঙ্গা গ্রামের কৃষক আফজাল হোসেন বলেন, এক সপ্তাহ আগে তৈরি করা বীজতলায় সবে চারা উঠতে শুরু করেছে। কিন্তু কয়েকদিন ধরে সূর্যের আলো না থাকায় দুশ্চিন্তায় আছি। পরিস্থিতি এভাবে চললে পলিথিন দিয়ে বীজতলা ঢেকে দিতে বাধ্য হব, এতে বাড়তি খরচ হবে। উপজেলা কৃষি অফিস

সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে মান্দা উপজেলায় ২০ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে প্রায় ৮০০ হেক্টর জমিতে বীজতলা তৈরি করা হয়েছে। বিরূপ আবহাওয়ার কারণে চারা উৎপাদন ব্যাহত হলে রোপণের সময় সঙ্কট দেখা দিতে পারে। এ জন্য কৃষকদের পলিথিন দিয়ে বীজতলা ঢেকে রাখার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।

অন্যদিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, ঠাণ্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা প্রতিদিন বাড়ছে। গতকাল সোমবার বহির্বিভাগে ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত ৩৫৬ জন রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। এদের মধ্যে শিশু ও বয়স্ক রোগীর সংখ্যা বেশি। রোববার ৫১ জন এবং সোমবার ৪৯ জন রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসাসেবা নিচ্ছেন।