ঢাকা | ডিসেম্বর ২৬, ২০২৫ - ৩:০১ পূর্বাহ্ন

রাজশাহীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা দুর্ভোগে নিম্নআয়ের মানুষ

  • আপডেট: Friday, December 26, 2025 - 12:04 am

স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহীতে জেঁকে বসেছে শীত। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজশাহীতে চলতি মৌসুমে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। আবহাওয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, রাজশাহীতে গতকাল সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১০ দশমিক ২ ডিগ্রি এবং সর্বোচ্চ ২১ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা এ দিন দেশের মধ্যে সর্বনিম্ন।

গতকাল সকালে রাজশাহীতে ছিল ঘন কুয়াশার দাপট। কুয়াশার কারণে ট্রেনসহ বিভিন্ন যানবাহনকে লাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে দেখা যায়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হালকা সূর্যের দেখা মিললেও তাতে তেমন উষ্ণতা মেলেনি। হাড় কাঁপানো শীতে শহরের ফুটপাত, রেলস্টেশন, বাস টার্মিনাল ও আশপাশের বস্তি এলাকায় বসবাসকারী দরিদ্র লোকজন অসহায় অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন। অনেককে খড়কুটো ও কাঠ জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করতে চোখে পড়ে।

আবহাওয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, গত দুই দিনে রাজশাহীতে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা দুটিই কমেছে। গত বুধবার রাজশাহীতে দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১২ দশমিক ৩ ডিগ্রি এবং সর্বোচ্চ ছিল ২২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ দিন সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার পার্থক্য ছিল ৯ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে গত মঙ্গলবার দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৩ ডিগ্রি এবং সর্বোচ্চ ছিল ২৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সেদিন তাপমাত্রার পার্থক্য ছিল ১০ ডিগ্রি।

রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রহিদুল ইসলাম বলেন, রাজশাহীতে গতকাল মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। এটি দেশেরও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। সর্বনিম্ন তাপমাত্রার দিক থেকে রাজশাহীর কাছাকাছি রয়েছে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলা, যেখানে তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ১০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

শীতে দরিদ্র মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌঁচেছে। দিনে সূর্যের মুখ দেখা গেলেও নেই তাপের প্রখরতা। উত্তরের হিমেল বাতাস শীতের তীব্রতা আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। দিনের বেলাতেও মানুষজনকে গরম কাপড় পরে বাইরে বের হতে দেখা গেছে। শীতের প্রকোপ বৃদ্ধিতে নিম্নআয়ের মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে বেশি। সকালে তারা কাজে যেতে পারছেননা। রাত গভীর না হতেই রাস্তাঘাট ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে।

শিশু ও বয়স্করা এই শীতে পড়েছেন বেশি সমস্যায়। তারা আক্রান্ত হচ্ছেন শীতজনিত নানা অসুখে। হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা নিতে বয়স্ক ও শিশুদের ভিড় বাড়ছে। চিকিৎসকরা এসময় সকলকে সাবধানে চলাচল করতে পরামর্শ দিচ্ছেন। এই প্রতিকূল আবহাওয়ায় মাঠ পর্যায়ে চাষিদের পাশে থেকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছেন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা।

শীতের তীব্রতা বৃদ্ধিতে গরম কাপড়ের ব্যবসা জমে উঠেছে। ক্রেতারাও ভিড় করছেন গরম কাপড় কেনাকাটায়। বিশেষ করে নিম্নআয়ের মানুষরা ভিড় করছেন ফুটপাতের গরম কাপড়ের দোকানগুলোতে। এই সুযোগে বিক্রেতারা দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন।

এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, রাতে সারাদেশে শীতের অনুভূতি আরও তীব্র হতে পারে। একই সঙ্গে মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন স্থানে কুয়াশা পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষ করে উত্তরাঞ্চল ও নদী অববাহিকায় কোথাও কোথাও ঘন কুয়াশা দেখা দিতে পারে। সেই সঙ্গে রাতের তাপমাত্রা আরও কমতে পারে, ফলে শীতের প্রকোপ বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ১২০ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর এসব তথ্য জানিয়েছে।