ঢাকা | নভেম্বর ২১, ২০২৫ - ১:১১ পূর্বাহ্ন

রাবিতে জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে সেমিনার অনুষ্ঠিত

  • আপডেট: Thursday, November 20, 2025 - 9:53 pm

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বৃহস্পতিবার বিকেলে ‘বিপ্লব ও গণঅভ্যুত্থানের সফলতা ও ব্যর্থতা: ৭ নভেম্বর থেকে ৫ আগস্ট’ শীর্ষক এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে প্রতিপাদ্য নিয়ে বক্তৃতা দেন দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান। উপাচার্য প্রফেসর সালেহ্ হাসান নকীবের সভাপতিত্বে এই সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা দেন উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) প্রফেসর মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীন ও উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) প্রফেসর মোহা: ফরিদ উদ্দীন খান। সেখানে অন্যদের মধ্যে প্রফেসর রায়হানা শামস্ ইসলাম (পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ) বক্তব্য রাখেন।

জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক প্রফেসর মো. আখতার হোসেন মজুমদার সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ও সেমিনারটি সঞ্চালনা করেন। এই অনুষ্ঠানে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রথম বার্ষিকীতে আয়োজিত নাট্যরচনা ও রং তুলিতে জুলাই বিপ্লব শীর্ষক চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার পুরস্কারও প্রদান করা হয়।

সেমিনারে ড. মাহমুদুর রহমান বলেন, ৭ই নভেম্বর ও ৫ই আগস্টের বিপ্লব অভিন্ন লক্ষ্যে ঘটেছিল। দুটো বিপ্লবেরই লক্ষ্য ছিল আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে জাতীয় মুক্তি। উভয় বিপ্লবের স্লোগান ছিল প্রায় একই। জনগণ লক্ষ কণ্ঠে বলে উঠেছিল ‘দিল্লী না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা’। ৭ই নভেম্বর বিপ্লব ছিল সিপাহী-জনতার বিপ্লব, আর ৫ই আগস্টের বিপ্লবে শামিল হয়েছিল এদেশের ছাত্রদের নেতৃত্বে আপামর জনসাধারণ।

৫ই আগস্ট বিপ্লবের ভ্যানগার্ড আমাদের তরুণ প্রজন্ম ১৯৭১ দেখেনি, কিন্তু দেখেছিল আধিপত্যবাদের মদদপুষ্ট এক নির্মম স্বৈরাচারী শাসন ব্যবস্থা। তারা গর্জে উঠেছিল মুক্তির লক্ষ্যে এবং সে মুক্তি অর্জন করেছিল। আমরা এখনও বিপ্লবের প্রক্রিয়ার মধ্যে আছি। আমাদের পৌঁছাতে হবে গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় প্রয়োজন একটি স্বচ্ছ নির্বাচন। আগামী নির্বাচনটি হবে আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জের। বিপ্লবী জনগণের সার্বিক চেতনায় সে লক্ষ্যে নিশ্চয় পৌঁছাতে পারবো বলে আমরা আশাবাদী। কিন্তু আমাদের সতর্ক থাকবে হবে, যাতে দেশের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে স্বৈরাচারী শাসন ব্যবস্থার এখনও যে অবশিষ্টাংশ আছে তারা যেন মাথাচাড়া দিয়ে অনেক রক্তের বিনিময়ে অর্জিত মুক্তি কেড়ে নিতে না পারে।

উপাচার্য প্রফেসর সালেহ্ হাসান নকীব তাঁর বক্তব্যে বলেন, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা আমাদের স্বাধীনতা অর্জন করেছিলাম। কিন্তু ক্রমে আধিপত্যবাদী শক্তির কাছে সেই স্বাধীনতা হারিয়ে ফেলেছিলাম। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত সে স্বাধীনতার জন্য ১৯৭৫ এর নভেম্বরে দেশপ্রেমিক শক্তি রাজপথে নেমে আসে। অবসান হয় আধিপত্যের। কিন্তু আমাদের অনৈক্য, দেশপ্রেমের ঘাটতি আধিপত্যবাদী শক্তিকে আবার সক্রিয় করে এবং তারা ১৬ বছর ধরে এদেশীয় প্রক্সির মাধ্যমে জনগণের উপর নির্মম নিপীড়ন চালায়।

আমরা ৫ই আগস্টের বিপ্লবের মাধ্যমে আমাদের হারানো মর্যাদা ফিরে পেয়েছি। একে আমাদের রক্ষা করতে হবে। এর জন্য প্রয়োজন এভাবে বারবার স্বাধীনতা হারিয়ে ফেলার কারণ অনুসন্ধান ও গভীর আত্মবিশ্লেষণ এবং তার পুনরাবৃত্তি রোধে দূরদর্শী কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ। সেটা অনুধাবন করতে পারলেই আমরা আমাদের আপামর জনসাধারণের একতায় উদ্বুদ্ধ দেশপ্রেমের মাধ্যমে আমাদের অধিকারকে, আমাদের মর্যাদাকে রক্ষা করতে পারবো। তরুণ প্রজন্ম সর্বদাই আমাদের অনুপ্রেরণার উৎস। তারা হবেন জাতির সার্বভৌমত্ব ও আধিপত্যবাদবিরোধী শক্তির সম্মুখ সারির যোদ্ধা।