পবায় খাস জমির স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেয়ার দু’দিন পরেই ফের কাজ শুরু
স্টাফ রিপোর্টার: সম্প্রতি রাজশাহীর পবার হরিপুর ইউনিয়নের একটি খাস জমি দখল করে নির্মাণ করা অবৈধ স্থাপনা জেলা প্রশাসন কর্তৃক ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়ার মাত্র দুইদিনের মাথায় আবারও নির্মাণকাজ শুরু করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত ৩০ অক্টোবর জেলা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে চালানো ‘বড়সর’ অভিযানের মাত্র কয়েকদিনের ব্যবধানে ফের কাজ শুরুর বিষয়টি নানা আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়েছে স্থানীয় এলাকাবাসীর মধ্যে।
জানা গেছে, রাজশাহীর পবা উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নে সরকারি খাস জমি দখল করে দোকানঘর ও অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করছিলেন ওই ইউনিয়নের মৃত গিয়াস উদ্দীনের ছেলে রেন্টু এবং একই ইউনিয়নের মৃত লোকমান সরকারের ছেলে আব্দুল হাই।
কিন্তু পবা উপজেলা ভূমি অফিস সূত্রে জানা যায়, ৪০ নম্বর হরিপুর মৌজার আরএস ১৬৮১ নম্বর দাগের ২.০৪ একর ওই জমিটি সরকারি খাস জমি হিসেবে রেকর্ডভুক্ত। এসময় ভূমি অফিস কর্তৃক সরেজমিন তদন্ত করে দেখা যায়, খাস জমি দখল করা রেন্টু প্রায় ১১৫৬ বর্গফুট (০.০২৬৫ একর) জায়গায় পাকা ছাদ ঢালাই ঘর নির্মাণ করেছিলেন। এছাড়াও অপর আরেকজন আব্দুল হাই (মন্টু) প্রায় ৯৫০ বর্গফুট (০.০২১৮ একর) জায়গায় টিনসেড দোকানঘর নির্মাণ করেছিলেন।
এমন পরিস্থিতিতে বিষয়টি রাজশাহী জেলা প্রশাসনের নজরে এলে গত ৩০ অক্টোবর দুপুরে সেখানে অভিযান চালানো হয়। অভিযানে এক্সকেভেটরের মাধ্যমে সরকারি খাস জমিতে স্থানীয় বাসিন্দা রেন্টুর দোকান ও নির্মাণাধীন অবৈধ স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেয়া হয় এবং সেখানে লাল পতাকা টানিয়ে সরকারি দখল নিশ্চিত করা হয়।
অভিযানে নেতৃত্ব দেন রাজশাহী জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী কমিশনার (ভূমি অধিগ্রহণ শাখা) মানজুরা মুশাররফ। এসময় সেখানে পবা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আরাফাত আমান আজিজ, পবা উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) জাহিদ হাসানসহ অন্যান্য কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। অভিযান চালিয়ে খাস জমি মুক্ত করার বিষয়টি তুলে ধরে পরেরদিন রাজশাহীর বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদও প্রকাশিত হয়। এতে স্থানীয়রা আনন্দ প্রকাশ করে জেলা প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানান।
কিন্তু অভিযানের মাত্র দুই দিন পরেই গত ২ নভেম্বর থেকে আবারও সেখানে নতুন করে স্থাপনা নির্মাণ শুরু করেছেন রেন্টু। গতকাল বুধবার সকালে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, তার দখলে থাকা যে অংশটি প্রশাসন গুঁড়িয়ে দিয়েছে; ঠিক তার পাশেই তিনি আবারও স্থাপনা নির্মাণ শুরু করেছেন। ওই অংশটিকে খাসের পরিবর্তে নিজের দাবি করলেও রেকর্ডে পুরো অংশই খাস জমি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত আছে বলে জানা গেছে। প্রশানসকে তোয়াক্কা না করে তার এমন কর্মকাণ্ড নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে নেতিবাচক ধারণার জন্ম দিয়েছে।
এই প্রতিবেদক বিষয়টি পবা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরাফাত আমান আজিজের নজরে আনলে তিনি জানান, ‘কোনোভাবেই সেখানে অবৈধ স্থাপনা গড়ে তোলার সুযোগ নেই। প্রশাসন সকল খাস জমি দখলমুক্ত রাখতে চায় বলেই সেখানে অভিযান চালানো হয়। আপনার মাধ্যমেই জানতে পারলাম, সেখানে আবারো কাজ শুরু হয়েছে। অভিযান চালিয়ে আসার পরেও নাগরিকদের এমন অদায়িত্বশীলতায় আমি মর্মাহত। আপনারা প্রস্তত থাকুন, খুব শিগগিরই সেখানে আবারও অভিযান চালানোর সংবাদ গণমাধ্যমে প্রকাশিত করতে পারবেন।
সোনালী/জগদীশ রবিদাস











