বাঘায় ভারি বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা, দুর্ভোগে জনজীবন
শিক্ষার্থীদের সুবিধায় ফেলা হলো বালি:
বাঘা প্রতিনিধি: টানা ভারি বর্ষণে বাঘা পৌর শহরের প্রধান সড়ক, খেলার মাঠ ও নিচু এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। শহরের অনেক জায়গায় হাঁটুসমান পানি জমে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। ড্রেনের নোংরা পানি উপচে ঢুকে পড়েছে বহু দোকান ও বাসাবাড়িতে। গত রোববার দুপুর ১২টায় থেকে শুরু হয়ে রাত ৮টা পর্যন্ত অবিরাম বৃষ্টি হয়। রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, রোববার দুপুর ১২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
আবহাওয়া অফিস জানান, রাতে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ আরও বাড়তে পারে। আগামী কয়েকদিন একই ধরনের আবহাওয়া বিরাজ করার সম্ভাবনা আছে। বৃষ্টির কারণে শহরের প্রাণকেন্দ্র বাঘা পৌর মোড়সহ বাঘা আম চত্বর সড়ক, বাঘা বাজার, বাঘা জিরো পয়েন্ট সড়ক, পার্ক রোড, নারায়নপুর রোড, মুশিদপুর রোড, খান্দার, বাঘা মাজার এলাকার সড়কগুলো সম্পূর্ণভাবে হাঁটুপানিতে তলিয়ে যায়। ড্রেনের নোংরা পানি উপচে ঢুকে পড়েছে বহু দোকান ও বাসাবাড়িতে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, সামান্য বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতা এখন বাঘা পৌরবাসীর নিত্য সঙ্গী। শহরের অধিকাংশ ড্রেন দীর্ঘদিন ধরে পরিষ্কার না করায় এবং আবর্জনায় ভরে থাকায় পানি নিষ্কাশন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। বাঘা বাসটেন থেকে বাঘা বাজার পর্যন্ত প্রধান সড়কের সরু নালাগুলো প্রায় সময়ই বন্ধ থাকে।এ ছাড়াও বাঘা নদীর দুই তীরজুড়ে অবৈধ স্থাপনা গড়ে ওঠায় পানি বের হওয়ার পথে বড় ধরনের বাধা তৈরি হয়েছে। এনিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে স্থানীয়রা বলেন, প্রতি বর্ষায় একই ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। কিন্তু এর কোনো স্থায়ী সমাধান হচ্ছে না।
বাঘা পৌরসভার প্রশাসক শাম্মি আক্তার জলাবদ্ধতার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, শহরের এক হাজার কিলোমিটার সড়কের জন্য কমপক্ষে দুই হাজার কিলোমিটার নালা থাকা দরকার। কিন্তু বর্তমানে তার অর্ধেকও নেই। তবে তিনি আশ্বাস দেন, নালা সংস্কার ও নতুন নালা নির্মাণে পৌরসভা থেকে পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। পাশাপাশি শহরের জন্য একটি দীর্ঘমেয়াদি মাস্টারপ্ল্যন প্রণয়নের উদ্যোগও চলছে। এই উদ্যোগ দ্রুত বাস্তবায়িত হলে জলাবদ্ধতার স্থায়ী সমাধান সম্ভব হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। অনেক পুরোনো সড়কে নালা না থাকায় জলাবদ্ধতা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।
জলাব্ধতা নিরসনে মাদ্রাসা মাঠে ফেলা হল বালি: এদিকে, অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে রাজশাহীর বাঘা উপজেলার রিয়াজুল জান্নাত মাদ্রাসা মাঠ দখল করে ছিলো থৈ-থৈ পানি। এ অবস্থায় চলছিল পাঠদান। কখনো-কখনো সেই পানির উপরে হাঁস ভাঁসতে লক্ষ্য করা গেছে। তবে শেষ পর্যন্ত জলাবদ্ধতা নিরসনে সেই মাঠে বালি ফেলে শিক্ষার্থীদের মুখে হাসি ফোটালেন জেলা ছাত্রদল নেতা সালাউদ্দিন আহমেদ ওরফে শামীম সরকার। রিয়াজুল জান্নাত মাদ্রাসার অবস্থান বাঘা উপজেলার মনিগ্রাম ইউনিয়নে।
গত কয়েক দিন যাবত ক্রমাগত বৃষ্টির কারণে সেখানে দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা। এই জলাবদ্ধতা উপেক্ষা করে ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা পাঠদানের উদ্দেশ্যে নিয়মিত মাদ্রাসায় আসছিলো। তবে জুতা-সেন্ডেল বিহীন খালি পায়ে। নিরূপায় হয়ে মাদ্রাসার কয়েকজন শিক্ষক ছুটে যান বিএনপি নেতা আবু সাঈদ চাঁদের কাছে। ঘটনাটি শুনে বিষয়টি আমলে নেন আবু সাঈদ চাঁদ। তিনি ছাত্রদল নেতা এস.এম. সালাউদ্দিন আহমেদ ওরফে শামীম সরকারকে সমস্যাটি নিরসনের দায়িত্ব দেন। সেই মর্মে গতকাল সোমবার সকাল থেকে মাঠে বালি ফেলার কাজ শুরু হয়েছে। এই দৃশ্য দেখে আনন্দে আত্মহারা হয়েছে শিক্ষার্থীরা।











