হাতানো হচ্ছে টাকা: মাতৃত্বকালীন ভাতার কার্ডে দালালদের দৌরাত্ম্য

শিবগঞ্জ (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) প্রতিনিধি: চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে মাতৃত্বকালীন ভাতার কার্ড দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে কয়েকজন দালালদের বিরুদ্ধে। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটেছে।
সরজমিনে গিয়ে ভুক্তভোগীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার শাহাবাজপুর ইউনিয়নের শিয়ালমারা গ্রামের ববিতা বেগম ও কানসাট ইউনিয়নের বালুর চর গ্রামের মরিয়ম এক সাথে বিভিন্ন গ্রামের গর্ভবর্তী মহিলাদের মাতৃত্বকালীন কার্ড করে দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে জনপ্রতি আট হাজার টাকা থেকে ১৪ হাজার টাকা করে আদায় করেছে। কিন্তু মাতৃত্বকালীন কার্ড না দিয়ে দীর্ঘদিন যাবত হয়রানি করছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।
শিয়ালমারা গ্রামের ভুক্তভোগী ফিনিয়ারা বেগম বলেন, আমাকে মাতৃত্বকালীন ভাতার কার্ড করে দেবে বলে আমার কাছ থেকে আট হাজার তিনশত টাকা নিয়েছে। এ পর্যন্ত কার্ড পাইনি। একাধিকবার অনুরোধ করলেও শুধু দিব দিচ্ছি বলে সময় ক্ষেপণ করছে। একই গ্রামের মেরিনা বেগম বলেন, মাতৃত্বকালীন কার্ড করে দেয়ার কথা বলে বেবিয়ারা বেগম ও কানসাট বালুচর গ্রামের মরিয়ম বেগম আমার কাছ থেকে আট হাজার টাকা নিয়েছে।
সুফিয়া বেগম বলেন, আমার দুই মেয়ের মাতৃত্বকালীন কার্ড করে দেয়ার কথা বলে ১৬ হাজার ছয়শত টাকা নিয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে ঘুরেও মিলছে না কার্ড। এমনকি টাকাও ফেরত দিচ্ছে না। রুবিয়ারা বেগম বলেন, আমি সাত হাজার টাকা দিয়েছি। কোন ফলাফল পাইনি। তিনি আরো বলেন, শুধু তাই নয়, শিয়ালমারা গ্রামেই ২৯ জনের নিকট হতে প্রায় একই হারে টাকা নিয়েছেন।
অন্যদিকে দাইপুখুরিয়া ইউনিয়নের চক শ্রীরামপুর গ্রামের রিনিয়ারা বেগম, আদরী বেগম ও রিজিয়া বেগমসহ মোট ছয়জনের নিকট হতে দাইপুখুয়িরা ইউনিয়নের বাটা গ্রামের মহিলা মেম্বার নাসিমা বেগম তিন হতে পাঁচ হাজার করে টাকা নিয়েছেন। যা তিনি আংশিক স্বীকার করেছেন। যার ভিডিও রেকর্ড সংরক্ষণে আছে।
একই অভিযোগ উপজেলার অন্যান্য ইউনিয়নের। একইভাবে মাতৃত্বকালীন ভাতার কার্ড দেয়ার কথা বলে কিছু দালাল ও ইউপি সদস্যরা জড়িত। অভিযুক্ত শিয়ালমারা গ্রামের বেবিয়ারা বেগমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি মোবাইল ফোন রিসিভ না করায় মন্তব্য মেলেনি। তবে তার সহযোগি কানসাট বালুচর গ্রামের মরিয়ম বেগম বলেন, আমি ফোনে কোন কথা বলবো না।
অন্যদিকে বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যানরা বলেন, যদি কেউ এ ধরনের কাজ করে থাকে অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে। উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা বন্দনা সাহা বলেন, এ সমস্ত দালালদের সাথে অফিসের কোন কর্মকর্তা ও কর্মচারীর সংশ্লিষ্টতা নেই। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আজাহার আলী বলেন, মাতৃত্বকালীন ভাতার কার্ডে কোন ধরনের টাকা খরচ হয় না। ভুক্তভোগীদের লিখিত অভিযোগ পেলে শিগগির তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।