ঈদকে সামনে রেখে বেপরোয়া তৃতীয় লিঙ্গের দল
দুর্গাপুর প্রতিনিধি: দুর্গাপুর উপজেলায় নবজাতক বা শিশু বাচ্চা দেখলেই বাড়িতে ঢুকছে একদল হিজড়া। তারপর টাকা দাবি। না দিতে পারলে শিশু বাচ্চাকে নিয়ে টানাহেঁছড়া ও চালানো হচ্ছে তাণ্ডব। এমন অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। টাকা দিতে দেরি হলেই শুরু করেন তাঁরা দুর্ব্যবহার। এমন পরিস্থিতিতে কেউ সম্মানের কথা ভেবে টাকা দিয়ে দিচ্ছেন আবার কেউ প্রতিবাদ করছেন।
দুর্গাপুর পৌর এলাকার দেবীপুর গ্রামে একদল হিজড়া একটি ফ্ল্যাট বাসা বাড়িতে শিশু বাচ্চা দেখে ঢুকে পড়েন। তারপর বাচ্চাকে কোলে নিয়েই টাকা দাবি করেন। এসময় ওই বাড়ির গৃহিনী তাদের টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানান। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে তুমূল ঝগড়া বাধে। এক পর্যায়ে বাড়ির মালিক এসে হিজড়াদের টাকা দিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন।
ভুক্তভোগী আশরাফুল ইসলাম বলেন, প্রায়ই দেখি তাঁরা এভাবে বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে চাঁদাবাজি করছেন। ছোট বাচ্চা দেখলেই সেই বাড়িতে গিয়ে টাকা দাবি করেন। গতকাল আমার বাড়িতেও এসে ছিলেন। তাদের দাবিও মোটা অংকের টাকা। এ নিয়ে বাক-বিতান্ডা শুরু হয়। পরে কোন মতে ২০০ টাকা ধরিয়ে দিয়ে তাদের বিদায় করতে পেরেছি।
জানা গেছে, সম্প্রতি ২০ থেকে ২৫ জন হিজড়া দুর্গাপুর সদর বহরমপুর এলাকায় ভাড়া নিয়ে বাসা বাড়িতে আস্তানা গড়েছেন। তাদের অধিকাংশ শহরে থেকে এসেছেন। প্রতিদিন সকাল হলেই কয়েক ভাগে ছড়িয়ে পড়ে পুরো দুর্গাপুর উপজেলা। দাঁপিয়ে বেড়ায় আর চাঁদাবাজি করে দিনভর। অশ্লীল কথা, নোংরা বাচন ভঙি ও গান দিয়ে মানুষকে আকৃষ্ট করার চেষ্টা করে। এমন পরিস্থিতিতে কেউ সম্মানের কথা ভেবে টাকা দিয়ে দেন। আবারও কেউ প্রতিবাদও করেন। তখনই শুরু হট্রগোল। এক পর্যায়ে মারপিটের ঘটনাও ঘটছে। আগে রাস্তা ঘাট দোকান পাটে চাঁদাবাজি করলেও এখন প্রকাশ্যে বাড়িতে ঢুকে পড়েছে হিজড়ারা।
কলনটিয়া গ্রামের পুরানো পুকুর সংস্কারকারী মামুন জানায়, কী বলব। বাপ দাদার আমলের একটা পুকুর সংস্কার করছিলাম। এসময় হিজড়ারা এসে পুকুরে চাঁদা দাবি করে। প্রথমে ২০হাজার, পরে ১০হাজার সবশেষ ৫হাজার টাকা দিয়ে রক্ষা পেয়েছি। টাকা দিতে না চাইলে আবার খারাপ ব্যবহার করছে। এদের বিরুদ্ধে কেউ কোন কথা বলছে না। কী যে এক বিব্রতকর অবস্থা, তাদের বুঝানো মুশকিল।
দুর্গাপুর সদরে অবস্থানরত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক হিজড়া জানান, সামনে ঈদ। শহরে আর ব্যবসা নাই। তাই এখন গ্রামে চলে এসেছি। এখানে বাসা ভাড়া নিয়েছি। দিনভর যা টাকা আদায় করি সর্দারের কাছে জমা দেই। তিনি বলেন, আগের মত মানুষজন এখন আর টাকা পয়সা দিতে চায় না। এখন আর জোর করি না। যে যা দেই, তাই নিই।
জানতে চাইলে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাসমত আলী বলেন, এসব বিষয়ে কোন সুনিদিষ্ট অভিযোগ পাইনি। সাধারণ মানুষের সাথে খারাপ আচারণ ও চাঁদা আদায়ে সুনিদিষ্ট অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।