ঢাকা | সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২৫ - ১:০৮ পূর্বাহ্ন

মাঠজুড়ে সৌন্দর্য ছড়াচ্ছে কাশফুল

  • আপডেট: Saturday, September 27, 2025 - 9:00 pm

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জের কাজিপুরে প্রতিবছরের মতো এবারও মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে শরৎ-এর কাশফুল। মাঠের পর মাঠ জুড়ে দোল খাচ্ছে শুভ্র কাশফুল। দূর থেকে তাকালে মনে হয়, আকাশের ভেসে থাকা সাদা মেঘ নেমে এসেছে যেন কাশবনে। প্রকৃতির এমন অপরূপ সৌন্দর্য মুগ্ধ করছে স্থানীয় বাসিন্দা ও প্রকৃতিপ্রেমীদের। কাশবন কোনো পরিচর্যা ছাড়াই অবলীলায় প্রকৃতিতে বেড়ে ওঠে, তবু এর সৌন্দর্যে কোনো ঘাটতি থাকে না। শরৎ ঋতুতে সাদা ধবধবে কাশফুল সত্যি মনোমুগ্ধকর। এর সৌন্দর্য যেকোনো মানুষের মনকে আকৃষ্ট করতে বাধ্য। বাংলাদেশের প্রায় সব অঞ্চলেই শরতের শুরুতে দেখা মেলে কাশফুলের। মেঘমুক্ত আকাশের নিচে কাশফুল মনে অনন্য এক প্রশান্তি জাগিয়ে তুলে।

এদিকে শরতের আগমনের সাথে সাথে কাজিপুর উপজেলার চরাঞ্চলের ছয়টি ইউনিয়নের চরসহ বিভিন্ন জায়গায় দেখা দিয়েছে কাশফুল। বিশেষ করে যমুনা ও ইছামতি নদীর চরে ভরে গেছে কাশফুল। দূর থেকে দেখে মনে হয় যেন কোনো শিল্পীর তুলিতে আঁকা এক ছবি। কাশফুলের এমন সৌন্দর্য নজর কাড়ছে পথচারীর। বাতাসে শুভ্রতা ছড়ানো এমন রূপ লাবণ্যের প্রেমে পড়তে বাধ্য যেকোনো প্রকৃতিপ্রেমী। জানা যায়, কাশফুল মূলত ছন গোত্রীয় এক ধরনের ঘাস। নদীর ধার, জলাভূমি, চরাঞ্চল, শুকনো রুক্ষ এলাকা, কিংবা গ্রামের কোনো উঁচু জায়গায় কাশের ঝাড় বেড়ে ওঠে।

তবে নদীর তীরেই এদের বেশি জন্মাতে দেখা যায়। এর কারণ হল নদীর তীরে পলিমাটির আস্তর থাকে এবং এই মাটিতে কাশের মূল সহজে সম্প্রসারিত হতে পারে। কাশফুল ছাড়াও আরও বিভিন্ন ফুল দেখতে পাওয়া যায় এই শরৎকালে। এ সময় ফোটে গগন শিরীষ, ছাতিম, বকফুল, মিনজিরি, শেফালি, শিউলি, কলিয়েন্ড্রা ইত্যাদি। এ সময় দূর্বা ঘাস ভিজে যায় হালকা শিশিরে। দিগন্ত ছেয়ে থাকে সবুজ সমারোহে।

দুর্গম চরাঞ্চলের খাসরাজবাড়ী, নাটুয়ারপাড়া ইউনিয়নে পথসভা, গণসংযোগ ও কাশফুল দেখতে এসে কন্ঠশিল্পী রুমানা মোর্শেদ কনকচাঁপা বলেন, কাশফুলকে শান্তির প্রতীক বলা হয়। কাশফুলের মনোরম দৃশ্য মানুষের মনকে করে তোলে আন্দোলিত ও প্রফুল্ল। কাশবন শুধু প্রকৃতির সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে না, এর রয়েছে নানা ওষুধি গুণও।

খাসরাজবাড়ী ইউনিয়নের যুক্তিগাছা গ্রামের শুভ নামে এক ব্যক্তি বলেন, কাশফুল যেমন সৌন্দর্য বাড়ায়, তেমনি ফুল ঝড়ে যাওয়ার পর কাশফুলের ডগা অনেকে সংগ্রহ করে ঝাড়ু তৈরি করে। অনেকেই এগুলো কেটে নিয়ে যায়। তাছাড়া বাণিজ্যিকভাবেও এগুলো বিক্রি হচ্ছে। নবদম্পতিরা বলেন, কাশফুল ছাড়া শরৎকাল কি ভাবা যায়!

কাশফুলের প্রতি আমাদের এক অন্যরকম মোহ আছে। সবসময় তো আর এই সৌন্দর্য উপভোগ করা যায় না। যদিও কাশফুলের কোনো গন্ধ নেই, তবে এর রয়েছে এক অনন্য নান্দনিকতা, যেটা হৃদয় ছুঁয়ে যায়। মৌসুমী নামের এক গৃহবধূ বলেন, এখানে এসেছি কাশফুল দেখতে; ছবি তুলেছি আমার। তিনি আরও বলেন, কাশফুলের গন্ধ নেই, তবে কাশফুলের মধ্যে রয়েছে রোমাঞ্চকর উন্মাদনা। যা দেখে মন ভালো হয়ে যায়। কাশফুলের এই শুভ্রতা এবং স্নিগ্ধতা ছুঁয়ে যাক প্রতিটি হৃদয়।