ঢাকা | সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২৫ - ২:১৭ পূর্বাহ্ন

কর্মশালায় বক্তারা: বিশ্বে সড়ক দুর্ঘটনা মৃত্যুর অষ্টম প্রধান কারণ

  • আপডেট: Monday, September 22, 2025 - 10:18 pm

স্টাফ রিপোর্টার: ‘জেলা সড়ক নিরাপত্তা কমিটির কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন’ শীর্ষক কর্মশালায় বক্তারা বলেন বিশ্বে সড়ক দুর্ঘটনা মৃত্যুর অষ্টম প্রধান কারণ।

সোমবার রাজশাহী জেলা পরিষদ কার্যালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত ‘জেলা সড়ক নিরাপত্তা কমিটির কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন’ শীর্ষক কর্মশালায় এ কথা বলেন বক্তারা। ব্র্যাক সড়ক নিরাপত্তা কর্মসূচির শিখা প্রকল্পের সহযোগিতায় রাজশাহী জেলা প্রশাসন ও বিআরটিএ এই কর্মশালার আয়োজন করে।

কর্মশালায় উপস্থাপিত তথ্যে জানানো হয়, বিশ্বে সড়ক দুর্ঘটনা মৃত্যুর অষ্টম প্রধান কারণ। প্রতিদিন গড়ে ৩ হাজার ৭০০ জন এবং প্রতি ঘণ্টায় প্রায় ১৫৫ জন মানুষের প্রাণ ঝরে যায় সড়কে। বাংলাদেশেও পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। ২০২৪ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান অন্তত ৫ হাজার ৩৮০ জন (বিআরটিএ)। আর বেসরকারি যাত্রী কল্যাণ সমিতির তথ্যমতে নিহতের সংখ্যা ৮ হাজার ৫৪৩ জন। এর মধ্যে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনাই সর্বাধিক। প্রতিবছর আহত হন অন্তত ৫ লাখ মানুষ।

এদের মধ্যে অনেকেই স্থায়ীভাবে পঙ্গুত্ব বরণ করেন। এছাড়া বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) এক জরিপে দেখা যায়, ২০২২ সালে দেশে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৯৭০। এতে নিহত হন ৩ হাজার ৯১ জন। বেপরোয়া গতি ও ট্রাফিক আইন না মানাকে এসব দুর্ঘটনার প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

কর্মশালায় অংশ নেয়া বক্তারা বলেন, নারী ও শিশুরা শুধু দুর্ঘটনার শিকারই নন, গণপরিবহন ও জনসমাগমস্থলসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে হয়রানির শিকার হচ্ছেন। সামাজিক ভয় ও লজ্জার কারণে অনেকে অভিযোগ করেন না, ফলে অপরাধীরা আরও দুঃসাহসী হয়ে ওঠে।

কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (উন্নয়ন ও মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা) মোহা. যোবায়ের হোসেন। সড়ক নিরাপত্তা কর্মসূচি ও ব্র্যাক ড্রাইভিং স্কুলের ম্যানেজার মাইনুল হোসেন এর সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন-অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) উম্মে কুলসুম সম্পা।

সড়ক নিরাপত্তা কর্মসূচি প্রকল্পের লিড নাজমুল হক জানান, ২০২৫ থেকে ২০২৯ সালের মধ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, গণপরিবহন, কর্মক্ষেত্র ও ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে নারী ও শিশুদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ তৈরিই তাদের লক্ষ্য। নারীদের গণপরিবহনে প্রায়ই হয়রানির শিকার হতে হয়। কিন্তু প্রতিবাদ করলে অন্য যাত্রীরা অনেক সময় পাশে দাঁড়ান না। এ ধরনের কর্মশালা তাদের সাহস জোগাবে কোথায় অভিযোগ করতে হবে।”

মুক্ত আলোচনায় বক্তব্য রাখেন- রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের প্রফেসর ড. তারিকুল হাসান, জেলা সড়ক নিরাপত্তা কমিটির সদস্য ও সোনার দেশ পত্রিকার সম্পাদক আকবারুল হাসান মিল্লাত, রাজশাহীর ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মাহবুবা খানম, ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক মিজানুর রহমান মন্ডল, সড়ক বিভাগের কর্মকর্তা রোকনুজ্জামান, জেলা তথ্য অফিসের উপ-পরিচালক নাফেয়ালা নাসরিন, রাজশাহী প্রেসক্লাবের সভাপতি সাইদুর রহমান, রাজশাহীর সিনিয়র সাংবাদিক ড. আইনুল হক সহ জেলা সড়ক নিরাপত্তা কমিটির সদস্যবৃন্দ অংশ নেন। ব্র্যাকের জেলা সহ-সমন্বয়কারী ফারজানা পারভীন বলেন, “আমরা চাই রাজশাহীকে একটি মডেল শহর হিসেবে গড়ে তুলতে, যেখানে নারী-শিশুরা ভয়হীনভাবে চলাচল করতে পারবেন। এজন্য সমন্বিত উদ্যোগ অপরিহার্য।”