রাজশাহী জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহী জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী হারুন অর রশিদের বিরুদ্ধে নানা ধরনের দুর্নীতি, অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ উঠেছে।
এ নিয়ে স্থানীয় ঠিকাদারদের পক্ষ থেকে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা বরাবর লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।
রোববার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষে ফরহাদ হোসেন নামের এক ঠিকাদার অভিযোগপত্র দাখিল করেন। অভিযোগে বলা হয়, নির্বাহী প্রকৌশলী হারুন অর রশিদ দীর্ঘদিন ধরে দপ্তরকে জিম্মি করে রেখেছেন।
সরকারি কাজের দরপত্রের গোপন রেট ফাঁস করে তিনি আওয়ামীলীগপন্থি ঠিকাদারদের পক্ষে সুবিধা দিচ্ছেন। অফিস সময়ও তিনি মেনে চলেন না। বিকালের দিকে কিছু সময় অফিসে উপস্থিত থাকলেও মূলত বাসভবনেই দাপ্তরিক কার্যক্রম পরিচালনা করেন।
অভিযোগে আরও বলা হয়, ঠিকাদারদের বিল আটকে রেখে তিনি অনৈতিক সুবিধা আদায় করেন। এমনকি জামানতের টাকাও ফেরত দিতে নানা কৌশল অবলম্বন করেন। অভিযোগকারীরা বলেন, বিল ছাড়ের সময় তিনি এক শতাংশ ঘুষ নেন। এ কারণে ঠিকাদার মহলে তিনি ‘মিস্টার ওয়ান পারসেন্ট’ নামে পরিচিতি পেয়েছেন।
এছাড়া অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, গোপালগঞ্জের এক আওয়ামী লীগ নেতার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে সম্প্রতি ১১ কোটি টাকার কাজ পাইয়ে দিয়েছেন নির্বাহী প্রকৌশলী। অথচ সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, যেসব ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পূর্ববর্তী কাজ নির্ধারিত সময়ে শেষ করতে ব্যর্থ হয়, তাদের নতুন কাজ দেয়ার সুযোগ নেই। সেই নির্দেশনা অমান্য করে একই ঠিকাদারকে নতুন কাজ দেওয়া হয়েছে।
অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়, রাতে নিজের সরকারি বাসভবনের শয়নকক্ষে তিনি দাপ্তরিক কাজ শুরু করেন। এ সময় অফিসের হিসাবরক্ষক, কম্পিউটার অপারেটর ও এস্টিমেটরকে গভীর রাত পর্যন্ত সেখানে কাজ করতে হয়। এমনকি তার গ্রামের বাড়িতেও ফাইল স্বাক্ষরের জন্য কর্মচারীদের যেতে হয়।
এ বিষয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী হারুন অর রশিদ বলেন, আমি নিয়মিত অফিস করি। শারীরিক কারণে কখনও কখনও দেরি হয়। তাই কিছু কাজ সরকারি কোয়ার্টারে করতে হয়। বিল আটকানো বা অনৈতিক সুবিধা নেয়ার অভিযোগ ভিত্তিহীন। যেসব ঠিকাদার কাজ পান না, তারাই এসব অভিযোগ করছেন। আমি নিজেও বদলির জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছি।
রাজশাহী জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সার্কেলের অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ বলেন, হারুন অর রশিদের বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ আসায় আমি বিব্রত। তিনি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ফোন ধরেন না এবং সময়মতো অফিসেও আসেন না। তাকে অন্যত্র বদলির জন্য মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।