মান্দায় পদত্যাগ করানো প্রধান শিক্ষককে আবারও স্কুলে ফিরিয়ে আনলো শিক্ষার্থীরা

মান্দা (নওগাঁ) প্রতিনিধি: অবশেষে নওগাঁর মান্দা উপজেলার পরানপুর উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল ওয়াহেদকে বিদ্যালয়ে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। স্থানীয়দের সম্মিলিত উদ্যোগ ও আলোচনার মাধ্যমে সৃষ্টি হওয়া সঙ্কটের শান্তিপূর্ণ সমাধান হওয়ায় তাকে স্বপদে পুনর্বহাল করা হয়।
বৃহস্পতিবার দুপুরে বিদ্যালয়ের বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং এলাকার সুধীজনেরা প্রধান শিক্ষককে ফুল দিয়ে বরণ করে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদ্যালয়ে ফিরিয়ে আনেন। পরে তাকে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের চেয়ারে সসম্মানে বসানো হয়। বিদ্যালয়ের হলরুমে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
সভায় বক্তব্য রাখেন বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আলহাজ ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ ও লুৎফর রহমান, এডহক কমিটির সদস্য দেলোয়ার হোসেন, স্থানীয় বিএনপি নেতা শহিদুল ইসলাম শহীদ ও রবিউল ইসলাম রবি, শিক্ষার্থী প্রতিনিধি আল আমিন, সোহাগ হোসেন ও এসএম রাজা প্রমুখ।
আলোচনা সভায় শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে শহিদ মিনার, সাইকেল গ্যারেজ নির্মাণ এবং পরিচয়পত্র প্রদানসহ কয়েকটি যৌক্তিক দাবি তুলে ধরেন। উপস্থিত সুধীজনেরা এসব দাবি পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়নের আশ্বাস দেন। শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, পূর্বে ঘটে যাওয়া অনাকাক্সিক্ষত ঘটনার পেছনে কিছু ভুল বোঝাবুঝি ছিল। তারা সেই ভুল বুঝতে পেরে প্রধান শিক্ষককে পুনরায় বিদ্যালয়ে ফিরিয়ে এনেছেন এবং সম্মানসূচকভাবে তার পদে পুনর্বহাল করেছেন।
এদিকে ঘটনার প্রতিবাদে মান্দা এসসি মডেল পাইলট উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজ প্রাঙ্গণে শিক্ষক-কর্মচারীদের অংশগ্রহণে এক প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (বাশিস) মান্দা উপজেলা শাখার আহ্বায়ক সদেরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য দেন প্রধান শিক্ষক গোলাম সোরয়ার স্বপন, নাসির উদ্দিন সরদার, আনিছার রহমান ও আশিষ কুমার সাহা, সুপারিনটেনডেন্ট আব্দুর রাকিব, প্রভাষক দেলেয়ার হোসেন, সহকারী শিক্ষক তাজিবুল হক, আব্দুর রাজ্জাক ও রাফিকুল ইসলাম প্রমুখ।
বক্তারা পরানপুর উচ্চবিদ্যালয়ের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, একজন শিক্ষকের সঙ্গে এ ধরনের আচরণ অনভিপ্রেত। তবে সমাধান শান্তিপূর্ণভাবে হওয়ায় তারা সন্তোষ প্রকাশ করেন। উল্লেখ্য, গত ১১ সেপ্টেম্বর পরানপুর উচ্চবিদ্যালয়ে একটি উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে প্রধান শিক্ষক আব্দুল ওয়াহেদকে লাঞ্ছিত করে পদত্যাগে বাধ্য করা হয়। এ ঘটনায় শিক্ষক সমাজ উদ্বেগ জানিয়ে স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করে ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছিল।